স্কুল স্তরে পাশ-ফেল প্রথা ফিরিয়ে আনা হবে কি না, সেই বিষয়ে আজ, শনিবারের প্রস্তাবিত বৈঠক হচ্ছে না। রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ডাকা ওই বৈঠক পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেটি হবে ২২ ডিসেম্বর অর্থাৎ আগামী শুক্রবার। সেই সঙ্গে ঠিক হয়েছে, শিক্ষক সংগঠনগুলিকেও এ বার ওই বৈঠকে ডাকা হবে।
বৈঠক পিছিয়ে দেওয়া হল কেন?
স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কারণ মূলত দু’টি। প্রথমত, শিক্ষামন্ত্রী স্কুল স্তরে পাশ-ফেল সংক্রান্ত আলোচনায় শিক্ষাবিদদের সঙ্গে সঙ্গে রাজনীতিকদেরও চাইছেন। সেই জন্য কয়েক জন রাজনীতিককে আমন্ত্রণও জানানো হয়েছে। কিন্তু শনিবার বৈঠক করলে আমন্ত্রিত রাজনীতিকদের মধ্যে দু’জনকে পাওয়া যাচ্ছিল না। তাই এমন একটা দিনে বৈঠকের ব্যবস্থা হচ্ছে, যে-দিন তাঁরা উপস্থিত থাকতে পারবেন। দ্বিতীয়ত, স্কুলে পাশ-ফেল ফেরানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বৈঠকে শিক্ষক সংগঠনগুলিকে না-ডাকায় তাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়েছিল। এই পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে, শিক্ষক সংগঠনগুলিকেও ডাকা হবে।
রাজনীতিবিদ হিসেবে ওই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী এবং এসইউসি নেতা তরুণ নস্করকে। শিক্ষাবিদ হিসেবে পবিত্র সরকার ও নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী আমন্ত্রণ পেয়েছেন। ডাক পেয়েছেন সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার এবং প্রাথমিক ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতিরাও। কিন্তু সুজনবাবু এবং মান্নান সাহেব শনিবার কলকাতায় থাকছেন না। তাই তাঁরা বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারবেন না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন।
মান্নান সাহেব এ দিন জানান, শিক্ষামন্ত্রী তাঁকে বলেছেন, তাঁরা যাতে থাকতে পারেন, সেই জন্য বৈঠকের দিন পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সুজনবাবুও জানান, স্কুলশিক্ষা দফতর তাঁকে বৈঠক পিছোনোর কথা জানিয়েছে। শিক্ষা মহলের বক্তব্য, পাশ-ফেল নিয়ে সরকারি সিদ্ধান্তে যাতে কারও ক্ষোভ না-থাকে, সেই জন্য সকলেরই মতামত চায় সরকার। সে-ক্ষেত্রে প্রধান দুই বিরোধী দল কংগ্রেস এবং সিপিএমের প্রতিনিধিরা বৈঠকে থাকবেন না, এটা হতে পারে না। তাই কংগ্রেসের প্রতিনিধি মান্নান সাহেব এবং সিপিএমের সুজনবাবুকে পাওয়া যায়, এমন একটা দিনেই বৈঠকের বন্দোবস্ত হয়েছে।
একই ভাবে প্রথমে পাশ-ফেল বৈঠকে শিক্ষক সংগঠনগুলিকে না-ডাকার দরুন তৈরি হওয়া ক্ষোভ-বিক্ষোভও সামাল দিতে চাইছে সরকার। কেননা শিক্ষা শিবিরের একাংশের প্রশ্ন ছিল, পঠনপাঠন থেকে পরীক্ষা পর্যন্ত স্কুলের যাবতীয় কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যাঁদের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ, সেই শিক্ষকদের বাদ দিয়ে এমন বৈঠক হয় কী ভাবে? তার পরেই শিক্ষকদের আলোচনায় সামিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।