Midday Meal Scheme

স্কুলের খাবারে বাড়তি ফল, মাংস চালিয়ে যাওয়ার দাবি

পড়ুয়াদের আনন্দ আর কত দিন বজায় থাকবে, সেই ব্যাপারে সংশয় দেখা দিয়েছে। কারণ, জানুয়ারি থেকে চালু হওয়া মিড-ডে মিলে এই অতিরিক্ত খাবারের বরাদ্দ চলতি মাসেই শেষ হওয়ার কথা।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:০৪
Share:

বাড়তি খাবারের টানে অনেক স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যাও বেড়েছে বলে খবর। ফাইল চিত্র।

দিল্লি যতই স্কুলপড়ুয়াদের খাবারে থাবা মারার অভিযোগ তুলুক, বাংলার পড়ুয়ারা মিড-ডে মিলে কিছু দিন যাবৎ বাড়তি কিছু পেয়ে আনন্দে আছে বলে শিক্ষা শিবিরের পর্যবেক্ষণ। বাড়তি মানে কমলালেবুর মরসুম গেলেও এই গরমে পড়ুয়ারা হাতে পাচ্ছে আস্ত একটি মোসাম্বি। গত সপ্তাহে তাদের মাথাপিছু একশো গ্রাম আঙুরও দেওয়া হয়েছিল। তার সঙ্গে মাসে অন্তত এক দিন মুরগির মাংস। বাড়তি খাবারের টানে অনেক স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যাও বেড়েছে বলে খবর।

Advertisement

কিন্তু পড়ুয়াদের আনন্দ আর কত দিন বজায় থাকবে, সেই ব্যাপারে সংশয় দেখা দিয়েছে। কারণ, জানুয়ারি থেকে চালু হওয়া মিড-ডে মিলে এই অতিরিক্ত খাবারের বরাদ্দ চলতি মাসেই শেষ হওয়ার কথা। শিক্ষা দফতর চার মাসের জন্য পড়ুয়া-পিছু প্রতি সপ্তাহে যে-অতিরিক্ত ২০ টাকা বরাদ্দ করেছিল, তার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে চলতি মাসেই। অধিকাংশ স্কুলই জানাচ্ছে, সপ্তাহ-পিছু এই অতিরিক্ত বরাদ্দে পড়ুয়ারা খুব খুশি। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের এবং অভিভাবকদের দাবি, বাড়তি বরাদ্দ আরও কয়েক মাস চালানো হোক। কিন্তু সরকারের তরফে কোনও নিশ্চয়তা না-মেলায় বাড়তি বরাদ্দ বন্ধের আশঙ্কা বাড়ছে স্কুলে স্কুলে।

নায়ারণ দাস বাঙুর মেমোরিয়াল মাল্টিপারপাস স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন, ‘‘জানুয়ারি থেকে এপ্রিল, প্রতি সপ্তাহে পড়ুয়া-পিছু অতিরিক্ত বরাদ্দ কুড়ি টাকা। তাতে সপ্তাহে দু’দিন ফল দিতে পারছি। আর মাসে এক দিন মুরগির মাংস। তিন দিন অতিরিক্ত ডিমও দিতে পারছি। মে থেকে বরাদ্দ তুলে নেওয়া হলে আগেকার মেনু ফিরে আসবে। তাতে পড়ুয়ারা খুব হতাশ হবে।’’

Advertisement

আগের মেনুতে সপ্তাহে এক দিন শুধু ডিম থাকত। ডোমজুড়ের কেশবপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক দীপঙ্কর দাসের বক্তব্য, ফল-ডিম-মুরগির মাংস এমন ভাবে দেওয়া হচ্ছে, যাতে একই সপ্তাহে অল্প পরিমাণে হলেও মাংস ও ফল, দু’টিই পাচ্ছে পড়ুয়ারা। দীপঙ্কর বলেন, ‘‘গ্রামাঞ্চলে অধিকাংশ পড়ুয়াই গরিব। বাড়িতে ডিম বা মাংস খেলেও ফল কিনে খাওয়ার বিশেষ সুযোগ হয় না। অনেকে তো ফল পেয়ে স্কুলে না-খেয়ে বাড়িতেও নিয়ে যাচ্ছে। এই মেনু যদি আরও কয়েক মাস বজায় থাকে, তা হলে আগামী দিনে পড়ুয়াদের আমও দিতে পারব।’’ গ্রামাঞ্চলের বেশ কিছু স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মতে, চার মাস অতিরিক্ত খাবার দেওয়ায় স্কুলে স্কুলে পড়ুয়াও বেড়েছে।

মে থেকে মিড-ডে মিলে অতিরিক্ত খাবার থাকার সম্ভাবনা কতটা? মিড-ডে মিল বিভাগের এক কর্তা বলেন, ‘‘এখনও এই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। এক বছরে মিড-ডে মিলের বরাদ্দ থেকে যে-টাকা বেঁচেছিল, তা থেকেই গত অর্থবর্ষের শেষ চার মাসে অতিরিক্ত টাকা দেওয়া হয়েছিল। এপ্রিল থেকে নতুন অর্থবর্ষ চালু হয়েছে। মিড-ডে মিলের বরাদ্দ কেন্দ্র যেমন যেমন দেবে, তার উপরেই নির্ভর করবে, আগেকার গতানুগতিক মেনু ফিরে আসবে, না, অতিরিক্ত খাবার চালিয়ে যাওয়া যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন