প্রতীকী ছবি।
নয়াগ্রামের পর এ বার বেলপাহাড়ি। প্রচার করেও রাশ টানা যায়নি গুজবে। ছেলেধরা সন্দেহে বৃহস্পতিবার দুপুরে বেলপাহাড়ি থানার ভেলাইডিহা পঞ্চায়েতের আহারডাঙা গ্রামে দু’জনকে মারধরের অভিযোগ উঠল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। ধৃতদের তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি তোলেন এলাকার বাসিন্দারা। পরে পুলিশ ধৃতদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন দুপুরে ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়ার সীমানা এলাকার আহারডাঙা গ্রামের রাস্তা দিয়ে দুই মাঝবয়সী ব্যক্তি বাঁকুড়ার বারিকুল থানার এক আশ্রমে যাচ্ছিলেন। রাস্তায় এক বৃদ্ধাকে দেখে ওই দু’জন জানতে চান, বারিকুলের আশ্রমটি কোন দিকে। এই প্রশ্ন শুনেই ওই বৃদ্ধা ছেলেধরা বলে চিৎকার শুরু করেন বলে অভিযোগ। আতঙ্কে তাঁরা দু’জন ছুটে পালাতে গেলে গ্রামবাসীরা তাঁদের ধরে ফেলে। তাঁদের আটকে রেখে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে। ঝাড়গ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিশ্বজিত মাহাতো বলেন, ‘‘ওই এলাকায় গিয়ে লোকজনদের সঙ্গে কথা বলেছি। গুজবে কান না দিয়ে যে কোনও ঘটনার খবর পুলিশকে দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছি। ওই দু’জন যুবকের পরিচয় জানার
চেষ্টা চলছে।’’
এ দিনই ঝাড়গ্রামের সেবায়তনের রাজাবাঁধ এলাকায় ছেলেধরা সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন এক তরুণকে পথচলতি মানুষ মারধর করে বলে অভিযোগ। কৌশিক শেঠ নামে বছর কুড়ির ওই ছেলেটির বাড়ি ঝাড়গ্রাম থানার রাধানগর এলাকায়। এ দিন সকালে রাজাবাঁধের শাল জঙ্গল থেকে ছুটে বেরনোর সময় স্থানীয় লোকজন ছেলেধরা সন্দেহে ধরে তাঁকে মারধর করে বলে অভিযোগ।
ছেলেধরা গুজবে মারধর রুখতে প্রচার করছে পুলিশ। তারপরেও মারধরের ঘটনা না থামায় এ বার কড়া পদক্ষেপ করার কথা ভাবছে পুলিশ। এ দিনই ঝাড়গ্রাম শহরে অনেকের মোবাইলের হোয়াটস্ অ্যাপে একটি মেসেজ আসে, তাতে লেখা রয়েছে ছেলেরা মেয়ে সেজে বাচ্চাদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। সাবধনতা বজায় রাখুন ও বিপদে পড়লে ঝাড়গ্রাম পুলিশকে খবর দিন। জেলা পুলিশ সুত্রে জানানো হয়ছে, এ রকম কোন মেসেজ ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলা থেকে জারি করা হয়নি। জেলা পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্ত বলেন, ‘‘বাইরে থেকে এ রকম কোনও লোক আসার খবর নেই। যদি কেউ আসত তাহলে আমরা খবর পেতাম। গুজবে কান দেবেন না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘যারা এ রকম গুজব ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন তাদের বিরুদ্ধে এ বার কড়া আইনি পদক্ষেপ করা হবে। সন্দেহজনক কিছু দেখলে আমাদের খবর দিন।’’