Rajdaha

জলের জন্য দলবদল!

রাজদহ গ্রামের ৫ তৃণমূল কর্মী কুনারের হাত থেকে গেরুয়া পতাকা নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বেলপাহাড়ি শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২০ ০৪:৪৯
Share:

দলবদলু: তৃণমূল ছেড়ে আসা কর্মীদের হাতে পদ্ম-পতাকা তুলে দিলেন বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রম। নিজস্ব চিত্র।

Advertisement

বিজেপিতে যোগ দিলেন ৫ তৃণমূল কর্মী। কারণ, জল-যন্ত্রণা!

দলবদলের এই ঘটনায় শোরগোল পড়েছে বেলপাহাড়ি ব্লকের ভেলাইডিহা পঞ্চায়েতের রাজদহ গ্রামে। এ দিন ওই গ্রাম পরিদর্শনে গিয়ে পানীয় জলের সমস্যা মেটানোর আশ্বাসও দিয়েছেন ঝাড়গ্রামের বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রম। রাজদহের বাসিন্দারা সাংসদকে জানান, এলাকায় পানীয় জলের প্রবল সঙ্কট। পাতকুয়ো ও তারাফেনি নদীর জলই ভরসা। পরিস্রত জলের অভাবে পেটের অসুখে ভোগেন অনেকে। সমস্যার কথা শুনে সাংসদ তহবিলের টাকায় এক বছরের মধ্যে জল প্রকল্প গড়ার আশ্বাস দেন কুনার।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত সমস্যা মেটানোর কথা বলেন।

এ দিন রাজদহ গ্রামের ৫ তৃণমূল কর্মী কুনারের হাত থেকে গেরুয়া পতাকা নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন। কুনার বলেন, ‘‘বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ দিয়ে এখন আমার সাংসদ তহবিল শূন্য। অতিমারি পরিস্থিতি কাটলে তহবিলে টাকা আসবে। সেই কারণে এক বছরের মধ্যে সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিয়েছি।’’ তৃণমূলের রাজদহ বুথের সভাপতি নয়ন দাস মানছেন, ‘‘শাসকদলে থেকেও আমরা পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে ব্যর্থ। সেই সুযোগটা বিজেপি নিচ্ছে।’’

২০১৬ সালে বেলপাহাড়ি ব্লকের শিলদা ও ভেলাইডিহা পঞ্চায়েতের ১৭টি মৌজায় পানীয় জল সরবরাহের জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের উদ্যোগে একটি জলপ্রকল্প চালু হয়। তারাফেনি খালের জল পরিস্রুত করে রিজার্ভারে সঞ্চিত করে পাইপ লাইনের মাধ্যমে রাস্তার ধারে ট্যাপে ওই জল সরবরাহ করা হয়। অভিযোগ, শিলদা পঞ্চায়েতের শুকজোড়া এলাকায় একাংশ বাসিন্দা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পাইপ লাইন থেকে নিজেদের উদ্যোগে অসংখ্য বেআইনি সংযোগ নিয়েছেন। কেউ কেউ বাড়ির ভিতরেও জলের লাইন নিয়ে গিয়েছেন। এর ফলে, ভেলাইডিহা অঞ্চলের রাজদহ, মেছুয়া, খরসতী, কুশমুড়ার মতো কয়েকটি গ্রামের ট্যাপগুলিতে জল পড়ে না। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা রাজদহ গ্রামে। রাজদহ গ্রামের পাতকুয়োর জল খাওয়ার আযোগ্য। তাই তারাফেনির নদীর বালি খুঁড়ে পানীয় জল সংগ্রহ করেন একাংশ বাসিন্দা।

তৃণমূলের রাজদহ বুথের সভাপতি নয়ন দাস বলেন, ‘‘সাংসদ এক বছর পরে প্রকল্প গড়ার কথা বলে গেলেন। উনি রাজনীতি করছেন। প্রকৃত সদিচ্ছা থাকলে জরুরি ভিত্তিতে কিছু তো করতে পারতেন।’’ প্রশাসনের তরফেও খামতি রয়েছে বলে মানছেন নয়ন। তিনি বলেন, ‘‘গ্রামে সরকারি জল প্রকল্পের ট্যাপ থাকলেও জল পড়ে না। বার বার প্রশাসনকে জানিয়েও ফল হয়নি।’’

ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ উজ্জ্বল দত্তের বক্তব্য, ‘‘বেলপাহাড়িতে ভূগর্ভস্থ জলস্তর কার্যত নেই। পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে ওই এলাকায় মেগা প্রকল্প রূপায়ণের জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরে প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে। ওই প্রকল্পটি রূপায়িত হলে সমস্যা থাকবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন