দুর্ঘটনাগ্রস্ত: রাস্তার ধারে নয়ানজুলিতে পড়ে রয়েছে বাস। বুধবার। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নয়ানজুলিতে উল্টে গেল বাস। বুধবার দুপুরে প্রায় ৩১ জন যাত্রী নিয়ে বাসটি পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতার হুমগড় থেকে সবংয়ের কাঁটাখালিতে যাচ্ছিল। খড়্গপুরের দিকে যাওয়ার সময় ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে খড়্গপুর গ্রামীণের সতকুঁইতে দুর্ঘটনায় পড়ে বাসটি। ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে সাতজন যাত্রীর। মৃতদের মধ্যে দু’জন মহিলা ও এক বালকও রয়েছে।
জখম যাত্রীদের উদ্ধার করে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাঁদের মধ্যে সাতজনকে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। দুর্ঘটনায় আহত হন সিপিএমের খেতমজদুর ইউনিয়নের জেলা সভাপতি অমলেশ বসু। তাঁকে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অমলেশবাবুর সঙ্গেই বাসে ছিলেন সবংয়ের সিপিএম নেতা সুভাষ পট্টনায়েক। তিনি মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম রবীন্দ্রনাথ চন্দ (৬৫), শেখ মসিউর রহমান (৫৫), সন্ধ্যা দাস (৫০), অজয় মুর্মু (৫০), সন্দীপ পুষ্টি (৪১), অঞ্জলি গায়েন (৪০) ও সুরজিৎ পতিহার (১১)। মৃতদের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ দাঁতনের, সন্ধ্যা পিংলার, সন্দীপ কেশিয়াড়ির ও সুরজিৎ হুগলির গোঘাটের বাসিন্দা। মসিউর ও অঞ্জলির বাড়ি সবংয়ে। অজয়বাবুর বাড়ির ঠিকানা জানার চেষ্টা চলছে।
এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, মেদিনীপুর থেকে খড়্গপুরের দিকে যাওয়ার সময় কাঁসাই নদীর সেতু পার হওয়ার পরেই বাসটি গতি বাড়িয়ে দেয়। সতকুঁইয়ের একটি পেট্রল পাম্পের কাছে এক মোটরবাইক আরোহীকে বাঁচাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারায় বাসটি। তারপরেই জাতীয় সড়কের বাঁ দিকে নয়ানজুলিতে উল্টে যায়। স্থানীয় লোকজনই আহতদের উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারী একাধিক গাড়ি থামিয়ে আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ দিন হাসপাতালে শুয়ে অমলেশবাবু বলেন, ‘‘জেলা কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে সকালে সবং থেকে এসেছিলাম। বৈঠক সেরে বাড়ি ফিরছিলাম। কাঁসাই নদীর সেতু পেরোনোর পরেই বাসটা তীব্র গতিতে ছুটছিল। তারপরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারে নয়ানজুলিতে পাল্টি খায়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমি বাসের সামনের আসনে ছিলাম। কোনওরকমে নিজেই বাইরে বেরিয়ে আসি। অন্যদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে।’’ এলাকার বাসিন্দা মাসুম মল্লিক বলেন, ‘‘বাস যে ভাবে জলভর্তি নয়ানজুলিতে পড়েছিল, তাতে আহতদের বাঁচানো মুশকিল ছিল। কোনওরকমে সকলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।’’