অন্ধকারেই আধার কার্ড

আধার কার্ড তৈরির জন্য ২০১৩ সালের ২৫ এপ্রিল শিবিরে গিয়ে ছবি তুলিয়ে এসেছিলেন তমলুকের শালগেছিয়া এলাকার বাসিন্দা অশোক মান্না।২০১৬ সালের জানুয়ারি, মার্চ ও আগস্ট মাস মিলিয়ে আরও তিনবার শিবিরে গিয়েছেন ওই ছবি তুলতেই। কিন্তু প্রায় চার বছর হতে চললেও আধার কার্ড হাতে পাননি অশোক।

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৭ ০০:৩১
Share:

আধার কার্ড তৈরির জন্য ২০১৩ সালের ২৫ এপ্রিল শিবিরে গিয়ে ছবি তুলিয়ে এসেছিলেন তমলুকের শালগেছিয়া এলাকার বাসিন্দা অশোক মান্না।

Advertisement

২০১৬ সালের জানুয়ারি, মার্চ ও আগস্ট মাস মিলিয়ে আরও তিনবার শিবিরে গিয়েছেন ওই ছবি তুলতেই। কিন্তু প্রায় চার বছর হতে চললেও আধার কার্ড হাতে পাননি অশোক।

শুধু অশোকবাবু নন, কোলাঘাটের বাঁকাডাঙা গ্রামের বাসিন্দা নারায়ণ নায়েকের গল্পটাও একই। আধার কার্ড তৈরির জন্য ২০১৪ সালের ৫ এপ্রিল গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছবি তোলার শিবিরে প্রথমবার ছবি তুলিয়েছিলেন। তারপর ২০১৬ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি এবং ৩১ ডিসেম্বর বিডিও অফিসে আয়োজিত শিবিরে ছবি তুলিয়েছিলেন। এখনও আধার কার্ড হাতে পাননি তিনিও।

Advertisement

আধার কার্ড তৈরির জন্য একাধিকবার শিবিরে গিয়ে ছবি তোলার পরও অনেক বাসিন্দা আধার কার্ড পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। সমস্যার কথা মানছেন তমলুকের পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ সেনও। তিনি বলেন, ‘‘আধার কার্ড তৈরির জন্য ছবি তোলার পর সময়মতো কার্ড হাতে পাননি বলে আমাদের কাছে অনেকে অভিযোগ জানিয়েছেন। শহরের বাসিন্দাদের জন্য পুরসভার অফিসে একাধিক শিবিরও করতে হয়েছে।’’

তমলুক পুরসভার কর আদায় বিভাগের কর্মী বছর আটত্রিশের অশোকবাবুর অভিযোগ, ‘‘বারবার ছবি তুলেও হাতে কার্ড পেলাম না।’’ আর এই আধার কার্ড না পাওয়ায় গ্যাসের ভর্তুকিও মিলছে না। ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে আধার কার্ড নম্বর জমা দিতে না পারায় অনেককে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। অন্য দিকে নারায়ণবাবুর অভিযোগ, ‘‘পরিবারের তিনজন সদস্যের মধ্যে দু’জনের আধার কার্ড অনেক আগে চলে এলেছে। আমার কার্ড এখনও এল না। ব্যস্ত জীবনে এই ছবি তোলার জন্য এত বার যাওয়ার সময় কোথায়?’’ তমলুক শহরের স্টিমারঘাট এলাকার বৃদ্ধ দম্পতি স্বপন ভট্টাচার্য এবং দীপ্তি ভট্টাচার্য প্রায় চার মাস আগে তমলুক পুরসভার অফিসে এসে আধার কার্ড তৈরির জন্য ছবি তোলার শিবিরে এসেছিলেন। ওই দম্পতি এখনও আধার কার্ড হাতে পাননি বলে অভিযোগ। তাঁদের কথায়, ‘‘বয়স হয়েছে। এতবার লাইনে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা আমাদের পক্ষে আর সম্ভব নয়। এতবার নিয়েই বা কে যাবে বলুন তো?’’

পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক ( ট্রেজারি) প্রশান্ত অধিকারী বলেন, ‘‘আধার কার্ড তৈরির জন্য ছবি তোলা এবং আঙুলের ছাপ দেওয়ার পর এক মাসের মধ্যে ওই আধার কার্ড পাওয়ার কথা। তবে হাতের আঙুলের ছাপ ঠিক না হলে বা অন্য কিছু কারণে আধার কার্ড তৈরির ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে।’’

অতিরিক্ত জেলাশাসক জানান, জেলার ৮৮ শতাংশ বাসিন্দার আধার কার্ড তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। এদের মধ্যে ৮৩ শতাংশ বাসিন্দা আধার কার্ড পেয়েও গিয়েছেন। মার্চের মধ্যে জেলার সমস্ত বাসিন্দার আধার কার্ড তৈরির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এখন আধার কার্ড তৈরির জন্য জেলায় কয়েকটি এলাকায় এজেন্সিও নিয়োগ করা হয়েছে। ফলে আধার কার্ড তৈরিতে বাসিন্দাদের সুবিধা হবে।

মার্চ মাসের শেষে সমস্যার সুরাহা হবে তো? ধন্দ কাটছে না জেলার বাসিন্দাদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement