বাস্তুতে গলদ! নয়া সাজ তৃণমূল নেতার ঘরে

আচমকা ভোলবদল জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষের ঘরের। সরল চেয়ার, আলমারি। চালু হল দীর্ঘদিনের অচল ঘড়ি।

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৯ ০০:৩৬
Share:

কৃষি কর্মাধ্যক্ষের ঘর। আগে ( বাঁ দিকে) ও পরে (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

আচমকা ভোলবদল জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষের ঘরের। সরল চেয়ার, আলমারি। চালু হল দীর্ঘদিনের অচল ঘড়ি।

Advertisement

জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষের পদে রয়েছেন রমাপ্রসাদ গিরি। রমাপ্রসাদ আবার যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি। জেলা পরিষদের এক কর্মী জানাচ্ছেন, কৃষি কর্মাধ্যক্ষের কথাতেই তাঁর ঘরের চেয়ার- টেবিল সরানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, ওই ঘর নতুনভাবে সাজানোও হয়েছে। কেন ঘরের অন্দরসজ্জায় এই পরিবর্তন? জেলা পরিষদের এক সূত্রে খবর, গত সপ্তাহে এক জ্যোতিষী কৃষি কর্মাধ্যক্ষের ঘরে এসেছিলেন। তখন রমাপ্রসাদ নিজেও তাঁর দফতরে ছিলেন। তার কয়েকদিন পরেই নাকি এই বদল।

ঠিক কী কী বদলানো হল? আগে ঘরের দক্ষিণদিকে ছিল চেয়ার- টেবিল। এখন তা ঘরের পূর্ব দিকে রয়েছে। অর্থাৎ আগে চেয়ারের মুখ ছিল উত্তর দিকে। এখন চেয়ারের মুখ রয়েছে পশ্চিম দিকে। ঘরে একটা দেওয়াল ঘড়ি দীর্ঘদিন অচল অবস্থায় পড়েছিল। এখন তা সচল হয়েছে। বদলেছে আলমারির স্থানও। উত্তর থেকে সরে তার ঠাঁই হয়েছে দক্ষিণ দিকে।

Advertisement

সূত্রের খবর, সব বদলই নাকি হয়েছে বাস্তু মেনে। যেমন, বাস্তুতন্ত্র নিয়ে যাঁরা চর্চা করেন, তাঁরা বলেন, ঘরে আসবাব ঠিক মতো সাজিয়ে না- রাখলে সেখানে শুভ ভাব ঢুকতে পারে না। কারণ, শুভ ভাব প্রবেশের রাস্তা আটকে রাখে অগোছালো আসবাব। আর খারাপ ঘড়ি থাকলে নাকি সাফল্য আসে না! হঠাৎ করে দফতরের চেয়ার- টেবিল সরানো হল কেন? রমাপ্রসাদের সরল জবাব, ‘‘আমার খুবই বিশ্বাসভাজন একজন বলেছিলেন। তাই সরিয়েছি।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এ নিয়ে এত জল্পনার কী আছে?’’

জল্পনার নেপথ্যে রয়েছে একটি তথ্য। এখন যে ঘরে কৃষি কর্মাধ্যক্ষ বসেন, আগে সেই ঘরেই বসতেন প্রাক্তন প্রাণিসম্পদ কর্মাধ্যক্ষ সূর্যকান্ত অট্ট। জেলা পরিষদের গত বোর্ডে যাঁরা কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন, তাঁদের অনেকেই ফের কর্মাধ্যক্ষ হয়ে ফিরে এসেছেন, বাকিরা কোথাও না- কোথাও ‘পুনর্বাসন’ পেয়েছেন, একমাত্র সূর্যকান্ত বাদে।

সূর্যকান্তের এখনও কিছুই জোটেনি! সূর্যকান্ত যখন কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন, তখনও ওই ঘরের চেয়ার- টেবিল ছিল ঘরের দক্ষিণ দিকে। জেলা পরিষদের এক কর্মীর কথায়, ‘‘ওঁর (রমাপ্রসাদ) হয়তো মনে হয়েছে, প্রাক্তন একজন ফেরেননি, ঘরের অবস্থা একই থাকলে পরবর্তী সময়ে ওঁরও যদি একই পরিণতি হয়!’’

জেলা পরিষদেও তাহলে জ্যোতিষী ডেকে আনতে হচ্ছে? তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা জেলা পরিষদের সহ- সভাধিপতি অজিত মাইতির মন্তব্য, ‘‘কে কাকে কোথায় কখন ডাকছেন, সব কী দেখা সম্ভব!’’

ঘরে ছোটখাট অনেক পরিবর্তন হয়েছে। নতুন করে লাগানো হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিও। সে ছবিতে অভিষেকের সঙ্গে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে রমাপ্রসাদ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন