শিবির হয়নি, খড়্গপুরে আধার-দুর্ভোগ চলছেই

আধারে আঁধার কাটেনি এখনও। বিপাকে বহু মানুষ। খড়্গপুর শহরের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ এখনও আধার কার্ড পাননি। সমস্যা মেটাতে গত ২২ জুলাই শহরের প্রতি ওয়ার্ডে শিবির করে আধার কার্ড তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় পুরসভা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৬ ০১:৪৪
Share:

আধারে আঁধার কাটেনি এখনও। বিপাকে বহু মানুষ। খড়্গপুর শহরের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ এখনও আধার কার্ড পাননি। সমস্যা মেটাতে গত ২২ জুলাই শহরের প্রতি ওয়ার্ডে শিবির করে আধার কার্ড তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় পুরসভা। তারপরে দু’সপ্তাহ কেটে গেলেও শিবির চোখে পড়েনি বলে অভিযোগ। প্রশাসনের গড়িমসিতে ক্ষোভ বাড়ছে শহরবাসীর।

Advertisement

আগে শহরের কয়েটি ওয়ার্ডে শিবির করে আধার কার্ড তৈরি করতে উদ্যোগী হয় পুরসভা। যদিও তারপরেও আধার-জটিলতা কাটেনি। পুরসভার দাবি, আধার কার্ড তৈরির বিষয়টি সম্পূর্ণ প্রশাসনিক। যদিও প্রশাসনিক কর্তাদের দাবি, আধার কার্ড তৈরির বিষয়টি প্রশাসনের এক্তিয়ারভুক্ত। যদিও সকলের কার্ড না হওয়ার দায় এড়াতে পারে না পুরসভা। বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “কেন্দ্রের নিয়ম মেনে সব কাজ হলে এতদিনে সকলের আধার কার্ড তৈরি হয়ে যেত। কিন্তু রাজ্য প্রশাসন ও পুরসভার উদাসীনতায় দায়িত্বপ্রাপ্ত এজেন্সির ধীরগতিতে কাজ করছে। আর দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন শহরবাসী।”

ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলা বা রান্নার গ্যাসের ভর্তুকির ক্ষেত্রে আধার কার্ড থাকা বাধ্যতামূলক। আধার কার্ড না থাকলে মিলবে না ছাত্রদের স্কলারশিপও। অভিযোগ, অনেকে বারবার ছবি তুলেও হাতে কার্ড পাননি। আবার অনেকে সেই সুযোগও পাননি। বাড়িতে কার্ড না আসায় অনেকে টাকা খরচ করে নিজেরাই আধার কর্তৃপক্ষের সাইট থেকে আধার কার্ড প্রিন্ট করে নিয়েছেন।

Advertisement

সমস্যা মেটাতে গত ২২ জুলাই মহকুমা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করে পুরসভা। বৈঠকে ঠিক হয়, প্রতিটি ওয়ার্ডে শিবির করে দায়িত্বপ্রাপ্ত এজেন্সির মাধ্যমে দ্রুত আধার কার্ড তৈরি হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে যাদের নাম এজেন্সির কাছে রয়েছে, আগে তাঁদের ছবি তোলা হবে। যদিও এখনও আধার কার্ডের শিবির শুরু করতে পারেনি পুরসভা। অভিযোগ, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার লিঙ্ক না করলে টাকা তুলতে না দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। ফলে সমস্যায় পড়ছেন পেনশনভোগীরা।

সোমবার গোলবাজারের সিমলা সেন্টারের একটি ব্যাঙ্কে গ্রাহকদের আধার কার্ডের ছবি তোলার কথা বলা হয়। সেই মতো বহু লোক সকাল থেকেই সেখানে চলে আসেন। তার মধ্যে অনেক প্রৌঢ় ব্যক্তিও ছিলেন। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরেও ছবি তোলার লোক না আসায় সকলকে ফিরে যেতে হয়।

খরিদার সারদাপল্লির বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী সমরেশ মজুমদার অসুস্থ। তারপরেও তিনি আধারের ছবি তুলতে এসেছিলেন। তারপরেও ফিরে যেতে হওয়ায় তিনি বলছিলেন, “এর আগে ওয়ার্ডে শিবির হয়েছিল কিন্তু সকলের ছবি তোলা হয়নি। এই অসুস্থ শরীরে কোথাও ছোটাছুটি করতে পারি না।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘পুরসভা ও প্রশাসনকে কোনও পদক্ষেপ করতে দেখিনি। ব্যাঙ্কে জানানো হয়েছিল, আধারের ছবি তোলার জন্য এজেন্সির লোকেরা আসবে। কিন্তু তা না হওয়ায় ফিরে যাচ্ছি।”

বৈঠকের পরেও কেন শুরু করা গেল না শিবির? খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “কাল, বুধবার বোর্ড মিটিংয়ে কোন ওয়ার্ডে কবে শিবির হবে ঠিক করব। তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত এজেন্সি ঠিক ভাবে কাজ করছে না। এর জবাব প্রশাসন দিতে পারবে।” এ নিয়ে মহকুমাশাসক সঞ্জয় ভট্টাচার্য বলেন, “মানুষের সমস্যার কথা বুঝতে পারছি। আমি বুধবার ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসছি। সেখানে আপাতত আধার ছাড়া কী ভাবে কাজ করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হবে। ওই এজেন্সিকেও ডেকে পাঠিয়ে
কথা বলব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন