মধ্যমণি: কেশিয়াড়ির বৈঠকে শুভেন্দু। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
ব্যর্থতা স্বীকার করেই ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা দিলেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। রবিবার কেশিয়াড়ির কর্মিসভায় তাঁর বক্তব্য, “এই ব্লকের ১৩৬টির মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ বুথে আমরা পিছিয়ে রয়েছি। কিন্তু এই ফাঁক পূরণ করতে হবে। আগামী লোকসভা নির্বাচনে কেশিয়াড়ি বিধানসভায় যাতে দাঁতনের উপর নির্ভর না করে শুধু কেশিয়াড়িতেই ‘লিড’ দিতে পারি সেই চেষ্টা করতে হবে।”
গত পঞ্চায়েত ভোটে কেশিয়াড়িতে ধাক্কা খেয়েছে তৃণমূল, বেড়েছে বিজেপি। ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৫টিতে জিতেছে বিজেপি। কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতিতেও বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। চলতি মাসের গোড়ায় কেশিয়াড়িতে সভা করতে এসে পশ্চিম মেদিনীপুরের এই ব্লক পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব শুভেন্দুকে সঁপে গিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই এ দিন কেশিয়াড়িতে এলেন শুভেন্দু। কেশিয়াড়ি রবীন্দ্রভবনে তৃণমূলের কর্মী বৈঠকে অবশ্য দেখা যায়নি দলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি জগদীশ দাস ও কৃষক সংগঠনের নেতা ফটিক পাহাড়িকে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি-র উত্থানের পরে এই দুই নেতার গুরুত্ব কমিয়ে পবিত্র শীটকে দলের ব্লক সভাপতি করেন মমতা। দু’জনেরই দাবি, তাঁরা এ দিনের বৈঠকে ডাক পাননি। এ প্রসঙ্গে পরে শুভেন্দু বলেন, “আমি এটা খোঁজ নিয়ে দেখব। এটা তো অভ্যন্তরীণ সাংগঠনিক একটি বিষয়। তবে সবাই আমাদের সঙ্গে রয়েছে। কেউ দলনেত্রী বা জোড়াফুলের বাইরে নেই। বাকিটা আমাদের উপর ছেড়ে দিন।”
রুদ্ধদ্বার বৈঠকে দলীয় কর্মীদের এ দিন ঐক্যের বার্তাই দিয়েছেন শুভেন্দু। তৃণমূল সূত্রে খবর, প্রায় ১৬মিনিটের বক্তব্যে শুভেন্দু সকলকে বারবার এক থাকার কথা বলেছেন। তাঁর বার্তা, “মনে রাখবেন দু’য়ে-দু’য়ে চার হয়। সে ভাবেই একজনের একটি করে ভোট। তাই দেখতে হবে যাতে একটি ভোটও মাইনাস না হয়। এর জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করতে হবে।” জঙ্গলমহলে তিনি কীভাবে দলের হয়ে কাজ করেছেন সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন শুভেন্দু। তাঁর কথায়, “আমার নিরাপত্তার বলয়ের প্রয়োজন নেই। আপনারা চাইলে আমি বুথে বুথে গিয়ে চার-পাঁচজন কর্মী নিয়ে গিয়ে বসতে রাজি রয়েছি।” তার পরেই কেশিয়াড়িতে বেশ কয়েকটি কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি।
শুভেন্দু জানান, ১ জানুয়ারি তিনি ফের কেশিয়াড়িতে এসে দলের পতাকা উত্তোলন করবেন। ১৩ জানুয়ারি ছাত্র, যুব, মহিলা-সহ বিভিন্ন শাখা সংগঠন নিয়ে হবে সমাবেশ। পরে সাংবাদিকদের শুভেন্দু বলেন, “কেশিয়াড়ি থেকে যাতে বিপুল সংখ্যক মানুষ ব্রিগেডে যান, তাই ১৩ জানুয়ারি সমাবেশ হবে।”
এ সবে কি কেশিয়াড়িতে তৃণমূল ঘুরে দাঁড়াতে পারবে? শুভেন্দুর জবাব, “তৃণমূল সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ঘুরে দাঁড়ানোর দরকার নেই। পঞ্চায়েতের ত্রিস্তরের মধ্যে সর্বোচ্চস্তরটি দেখতে হবে। জেলা পরিষদে তৃণমূল ৮হাজার ভোটে এগিয়ে রয়েছে।” আর কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠন প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “ওটা জেলাশাসক, বিডিও-রা দেখবেন।”