Sabar People

অবশেষে হাসপাতালে তিন, রাজি বাকিরাও

মাস খানেক ধরে ঝাড়গ্রাম ব্লকের আগুইবনি পঞ্চায়েতের শবর অধ্যুষিত বাঘঝাঁপা গ্রামে জন্ডিসের প্রকোপ দেখা দিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঘঝাঁপা (ঝাড়গ্রাম) শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২০ ০৪:৫৭
Share:

বাঘঝাঁপা গ্রামে বিডিও অভীজ্ঞা চক্রবর্তী ও লোধা সেলের সদস্য খগেন্দ্রনাথ মান্ডি। অ্যাম্বুল্যান্সে তোলা হয়েছে আক্রান্তদের। সোমবার।

অন্ধবিশ্বাস ভেঙে গ্রামবাসীকে আলোয় ফেরাতে কালঘাম ছুটল প্রশাসনের। অবশেষে সোমবার বিকেলে ঝাড়গ্রামের বাঘঝাঁপা গ্রামের দুই শিশু-সহ জন্ডিসে আক্রান্ত শবর সম্প্রদায়ের তিনজনকে মোহনপুর গ্রামীণ হাসপাতালে পাঠানো হল।

Advertisement

মাস খানেক ধরে ঝাড়গ্রাম ব্লকের আগুইবনি পঞ্চায়েতের শবর অধ্যুষিত বাঘঝাঁপা গ্রামে জন্ডিসের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। গ্রামের শবর শিশু-তরুণদের পাশাপাশ অন্য সম্প্রদায়ের শিশু-কিশোররাও আক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু সরকারি হাসপাতালে না গিয়ে আক্রান্তর ছুটেছে পাশের আঁধারিশোল গ্রামে এক ওঝার কাছে। কপাল চিরে শিকড় বাটা লাগিয়ে চলেছে দৈব চিকিৎসা।

বিষয়টি জানাজানি হতে রবিবার ঝাড়গ্রামের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক রণজিৎ ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে মেডিক্যাল টিম গ্রামে যায়। বিকেলে ফের গ্রামে পৌঁছয় মেডিক্যাল টিম। জেলাশাসক আয়েষা রানি ও বিডিও অভীজ্ঞা চক্রবর্তীও রবিবার বিকেলে বাঘঝাঁপায় গিয়ে আক্রান্ত পরিবারগুলিকে সচেতন করেন। শবর পরিবারগুলিকে প্রশাসনের তরফে খাদ্যসামগ্রীও দেওয়া হয়। কিন্তু আক্রান্তদের হাসপাতালে পাঠাতে রাজি হননি বাড়ির লোক। আক্রান্তরাও হাসপাতালে যেতে চায়নি। রাত পর্যন্ত মেডিক্যাল টিম গ্রামে অপেক্ষা করে ফিরে যায়। সোমবার সকালে ফের গ্রামে যায় মেডিক্যাল টিম। বেলায় গ্রামে পৌঁছন ঝাড়গ্রামের বিডিও এবং ঝাড়গ্রাম থানার আইসি পলাশ চট্টোপাধ্যায়। এ দিন বাঘঝাঁপায় যান ঝাড়গ্রাম লোধা সেল-এর সদস্য বর্ষীয়ান সমাজসেবী খগেন্দ্রনাথ মান্ডি। লোধা-শবরদের কাছে ‘দাদু’ নামে পরিচিত খগেন্দ্রনাথ গ্রামবাসীকে বুঝিয়ে রাজি করান। শবর পরিবারগুলিকে সচেতন করতে বিকেল গড়ায়। আক্রান্ত কয়েকজনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে মেডিক্যাল টিম। আক্রান্ত যুবক রাখাল ভুক্তা এবং গ্রামের দুই শিশুকে মোহনপুর গ্রামীণ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাকিরাও মঙ্গলবার মোহনপুর গ্রামীণ হাসপাতালে যাবে। এ দিন জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের একটি দল গ্রামের বিভিন্ন নলকূপের জলের নমুনাও সংগ্রহ করে।

Advertisement

লোধা-শবর কল্যাণ সমিতির ঝাড়গ্রাম জেলা সম্পাদক দয়াল ভুক্তার বাড়ি বাঘঝাঁপায়। তাঁর দাবি, লকডাউন পরিস্থিতিতে সচেতনতার অভাবে এমন ঘটেছে। আর আগুইবনি পঞ্চায়েতের প্রধান রানি হেমব্রম মুর্মু বলেন, ‘‘প্রশাসনের উদ্যোগে আক্রান্ত তিনজনকে গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাকিরাও হাসপাতালে গিয়ে পরীক্ষা করাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন