শালবনির করোনা হাসপাতাল
Salboni

ভিডিয়োর ধন্দ কাটেনি, বসছে নজর ক্যামেরা

সেই ভিডিয়ো শালবনি কোভিড হাসপাতালেরই কিনা তা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে৷

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০০:০০
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

শালবনির কোভিড হাসপাতালে বিস্তর অব্যবস্থার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিয়ো নিয়েও শোরগোল পড়ে৷

Advertisement

সেই ভিডিয়ো শালবনি কোভিড হাসপাতালেরই কিনা তা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে৷ তবে একাংশ রোগীর পরিজনেদের দাবি, করোনার চেয়েও ভয়ঙ্কর হাসপাতালের পরিষেবা!

এই পরিস্থিতিতে শালবনির করোনা হাসপাতালকে সিসি (ক্লোজড সার্কিট) ক্যামেরায় মুড়ে ফেলা শুরু হল। হাসপাতালের এক সূত্রে খবর, প্রায় সব ওয়ার্ডেই সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। শনিবার থেকে কাজ শুরু হয়েছে। হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষের যুক্তি, নিরাপত্তা আরও জোরদার করতেই সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমলও বলেন, ‘‘ওই হাসপাতালে কিছু সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। ক্যামেরাগুলি বসানো হচ্ছে নিরাপত্তা আরও জোরদার করার জন্যই।’’ একই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘হাসপাতালের পরিষেবা ঠিকঠাকই রয়েছে।’’

Advertisement

শালবনি কোভিড হাসপাতালটি ২০২ শয্যার। তুলনায় আইসিইউ শয্যা রয়েছে কম, মাত্র ৫টি। আরও ১০টি আইসিইউ শয্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। ডায়ালিসিস শয্যা রয়েছে মাত্র ২টি। সারি রোগীদের জন্য ২৫টি শয্যা রয়েছে। আইসিইউ শয্যা কম

থাকায় আশঙ্কাজনক রোগীদের ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে।

জানা যাচ্ছে, করোনা মোকাবিলায় গঠিত জেলাস্তরের টাস্কফোর্সের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। সব মিলিয়ে ৩০-৩২টি সিসি ক্যামেরা বসানোর কথা রয়েছে। ওই সব ক্যামেরায় রেকর্ড করা ছবি দেখার জন্য শালবনিতে যেমন কন্ট্রোল রুম থাকবে, তেমন মেদিনীপুরেও পৃথক কন্ট্রোল রুম রাখা হতে পারে। কন্ট্রোল রুমে থাকবে সিসিটিভি (ক্লোজড সার্কিট টিভি)। জেলাস্তরের টাস্কফোর্সের পদস্থ আধিকারিকেরা নিজেদের মোবাইলেও ওই ক্যামেরার ছবি দেখতে পাবেন। সেই বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ওই হাসপাতালের কিছু সমস্যার কথা জানা গিয়েছিল। সমস্যাগুলির সমাধানে ইতিমধ্যে পদক্ষেপ করা হয়েছে। এ বার সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। এরফলে, সবদিকে নজর রাখা সম্ভব হবে। আশা করছি, এ বার থেকে আর সে রকম কোনও অপ্রীতিকর সমস্যার কথা শুনতে হবে না।’’

প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, ‘সার্ভেইল্যান্স সিস্টেম’ গড়ে তুলতেই হাসপাতালে সিসি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত। এর ফলে পরবর্তী সময়ে কোনও নালিশ এলে তদন্তের কাজে খুঁটিনাটি সব বিশ্লেষণ করে দেখা সম্ভব হবে। জানা যাচ্ছে, কিছু ‘নাইট ভিশন’ ক্যামেরা থাকবে। ফলে রাতের ছবিও স্পষ্ট ধরা পড়বে। দু’-তিনদিনের মধ্যেই হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ সিসি ক্যামেরা পরিকাঠামো চালু হওয়ার কথা।

জেলার করোনা চিকিৎসার অন্যতম কেন্দ্র শালবনির এই হাসপাতালই। গত দেড়-দু’মাসে পরপর এখানে একাধিক রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মৃতদের কয়েকজনের তেমন কো-মর্বিডিটিও ছিল না। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ ওঠে৷ শৌচালয় নোংরা, জলের সমস্যা, রোগীদের থাকার জায়গা জীবাণুমুক্ত না করার মতো অভিযোগও রয়েছে৷ চিকিৎসক, নার্সরা ঠিক মতো চিকিৎসাও করেন না বলে অভিযোগ। হাসপাতালের অব্যবস্থার অভিযোগ পৌঁছেছিল মুখ্যমন্ত্রীর দফতরেও। ঘটনাচক্রে, এরপরই অপসারিত হন হাসপাতালের সুপার অভিষেক মিদ্যা। নতুন সুপার হন নবকুমার দাস। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পরিষেবা নিশ্চিত করতে তৎপর হয় প্রশাসনও। জেলা থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়।

জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের দাবি, ‘‘যে অভিযোগ করা হয়েছিল তার সব ঠিক নয়। ওখানে রোগীদের সব রকম খেয়াল রাখা হয়। সঠিক সময়ে খাবার, জল, ওষুধ সব কিছুই দেওয়া হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন