মালা দিয়ে কেঁদে ফেললেন প্রবোধবাবুর স্ত্রী। নিজস্ব চিত্র
মেলালেন, তিনি মেলালেন। প্রয়াত প্রাক্তন সাংসদ প্রবোধ পান্ডার স্মরণসভায় হাজির হলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। সকলেই মানলেন, প্রবোধবাবু উন্নয়নে রাজনীতির রং দেখেননি। সেটা শিক্ষণীয়।
রবিবার দুপুরে মেদিনীপুর শহরের স্পোর্টস কমপ্লেক্সে এই স্মরণসভায় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা ছাড়াও এসেছিলেন বিশিষ্টজনেরা। ছিলেন সিপিআইয়ের নবনির্বাচিত রাজ্য সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক মঞ্জুকুমার মজুমদার, জেলা সম্পাদক সন্তোষ রাণা, প্রবীণ সিপিএম নেতা দীপক সরকার, জেলা তৃণমূল নেতা রমাপ্রসাদ তিওয়ারি, জেলা কংগ্রেস নেতা তীর্থঙ্কর ভকত, এসইউসির জেলা নেতা প্রাণতোষ মাইতি প্রমুখ। ছিলেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আনন্দদেব মুখোপাধ্যায়। সকলেই প্রবোধবাবুর ছবিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। মাল্যদান করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন প্রবোধবাবুর স্ত্রী মাধবী পান্ডা।
জেলা কংগ্রেস নেতা তীর্থঙ্কর বলছিলেন, “উনি ভাল মানুষ ছিলেন। মানুষের কথা ভাবতেন।’’ স্মৃতিচারণায় প্রবীণ সিপিএম নেতা দীপক সরকারের মন্তব্য, “উনি বাম-ঐক্য রক্ষার চেষ্টা করে গিয়েছেন।” সিপিআইয়ের জেলা সহ-সম্পাদক বিপ্লব ভট্টের কথায়, “প্রবোধদা সব সময় গরিব মানুষের পাশে থেকেছেন। যখনই গরিব মানুষের সমস্যা জানিয়েছি, তখনই সমাধানে উদ্যোগী হয়েছেন। ওঁর উদ্যোগেই এক সময় খড়্গপুরে হকার পুনর্বাসন হয়েছে।’’ প্রবোধবাবুর সহপাঠী ছিলেন দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক তথা প্রাক্তন বিধায়ক সন্তোষ রাণা। দু’জনই দাঁতন কলেজের প্রাক্তনী। একই মেসে থাকতেন। সন্তোষবাবু বলছিলেন, “বহু লড়াই-আন্দোলন করেছেন। ওঁর নেতৃত্বে রাজ্যে শ্রমজীবী মানুষের সংগ্রাম আরও তীব্র হয়েছে।’’
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে মেদিনীপুরের প্রাক্তন সাংসদ তথা সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক প্রবোধ পান্ডার। কলকাতায় দলের রাজ্য অফিসেই তাঁর প্রয়াণ হয়। প্রবোধবাবুর জীবনযাপন একেবারে সাধারণ ছিল। পোশাকও পরতেন সাদামাটা। মেদিনীপুর, খড়্গপুর কিংবা, বেলদা, দাঁতনের উন্নয়ন নিয়ে বহুবার সংসদে সরব হতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। স্মরণসভায় আসা বাম কর্মী- সমর্থকেরা মানছেন, এমন নেতার মৃত্যুতে বামপন্থী আন্দোলনের ক্ষতি হয়ে গেল।