পড়ে দামি যন্ত্র,হয়রান রোগী

কয়েক লক্ষ টাকা দামের ওই অত্যাধুনিক যন্ত্র ব্যবহার না হয়ে পড়ে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা হাসপাতালে। এর ফলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীরা ওই যন্ত্র ব্যবহারের সুবিধা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ।

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল

তমলুক শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৮ ০৬:০০
Share:

মহিলাদের বন্ধ্যাত্বকরণ, পিত্তথলির (গল ব্লাডার) পাথর বের করা-সহ বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে আধুনিক পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচারের জন্য ল্যাপারোস্কপি যন্ত্র আনা হয়েছিল বছর দুয়েক আগে। কিন্তু কয়েক লক্ষ টাকা দামের ওই অত্যাধুনিক যন্ত্র ব্যবহার না হয়ে পড়ে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা হাসপাতালে। এর ফলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীরা ওই যন্ত্র ব্যবহারের সুবিধা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। হাসপাতালে আসা রোগীদের অস্ত্রোপচারের জন্য অনেকদিন ধরে অপেক্ষা করতে হয় বলে অভিযোগ।

Advertisement

হাসপাতালে থাকলেও আধুনিক ওই যন্ত্র যে ব্যবহার হয় না তা স্বীকার করেছেন জেলা হাসপাতালের সুপার গোপাল দাস। তিনি বলেন, ‘‘ ল্যাপারোস্কপি যন্ত্র ব্যবহার করে অস্ত্রোপচারের জন্য একজন শল্য চিকিৎসক এবং চারজন নার্সকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো রয়েছে। এখনও চিকিৎসক ও নার্সদের প্রশিক্ষণ না হওয়ায় ওই যন্ত্র ব্যবহার করা যাচ্ছে না।’’

জেলা হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গল ব্লাডার, অ্যাপেনডিক্স, হার্নিয়া প্রভৃতি অস্ত্রোপচারের জন্য বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে আধুনিক নানা যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হলেও খরচের কারণে গরিব মানুষ তার সুবিধা পেতে সমস্যায় পড়েন। তাই জেলায় সরকারি হাসপাতালে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে এই ধরনের অস্ত্রোপচারের সুবিধা গরিব মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল রাজ্য সরকার। সেইমত স্বাস্থ্য দফতরের তরফে ২০১৬ সালে জেলা হাসপাতালকে ল্যাপারোস্কপি যন্ত্র দেওয়া হয়েছিল। হাসপাতালে ওই আধুনিক যন্ত্র আসায় জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা রোগীদের অনেক কম খরচে গল ব্লাডার,অ্যাপেনডিক্স, হার্নিয়া ইত্যাদি অস্ত্রোপচারের সুযোগ পাওয়ার কথা ছিল। এই পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচার হলে রোগী দ্রুত সেরে ওঠার পাশাপাশি হাসপাতাল থেকে রোগীকে দ্রুত ছেড়ে দেওয়ার সুযোগ ছিল। এর ফলে যাতে আরও বেশী রোগী চিকিৎসার সুযোগ পেতেন। কিন্তু ওই যন্ত্র ব্যবহার নিয়ে টালবাহানায় গরিব রোগীরা ওই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

রোগীদের পরিজনদের অভিযোগ, ওই সব রোগ নিয়ে জেলা হাসপাতালে ভর্তি হলে এখনও ওপেন সার্জারি পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচার করা হয়ে থাকে। ফলে অস্ত্রোপচারের সুযোগ পেতে অনেকদিন ধরে অপেক্ষা করতে হয়। খরচ বেশী হলেও অনেকেই বাধ্য হয়ে তাড়াতাড়ি অস্ত্রোপচারের জন্য বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমের দ্বারস্থ হন। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে সমস্যায় পড়ছেন গরিব রোগীরা।

পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল, ‘‘ল্যাপারোস্কপি যন্ত্র ব্যবহার করে অস্ত্রোচারের জন্য হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটারের সংস্কার করা হচ্ছে। এ ছাড়াও চিকিৎসক ও নার্সদের দ্রুত প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন