ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পর দলের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিলেন তৃণমূলের সাতজন পঞ্চায়েত সদস্য। কিন্তু তখন ভোটের গেরোয় অনাস্থা নিয়ে ভোটাভুটি হয়নি। এবার ফল প্রকাশের পর ফের দাসপুর-১ ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত বাসুদেবপুর অঞ্চল প্রধান কোহিনুর খাতুনের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলেন দলীয় সদস্যরা। অনাস্থা আনার কথা স্বীকার করে তৃণমূলের দাসপুর-১ব্লক সভাপতি সুকুমার পাত্রের বক্তব্য, “দলের কিছু সদস্যের সঙ্গে প্রধানের একটা মনোমালিন্যের জেরেই ঘটনাটি ঘটেছে। আমরা দলীয় ভাবে তদন্ত শুরু করেছি। বিষয়টি মিটে যাবে।” সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত প্রধান কোহিনুর খাতুনের কথায়, ‘‘সরকারি নিয়ম মেনেই পঞ্চায়েতের কাজকর্ম চালাচ্ছি। আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেই বারবার অনাস্থা আনা হচ্ছে। দলের ব্লক নেতৃত্বকেও আমি জানিয়েছি।’’
দলীয় সূত্রের খবর, দাসপুর-১ ব্লকের বাসুদেবপুর পঞ্চায়েতের মোট আসন ১৯টি। তার মধ্যে ১২টি তৃণমূলের। বাকি সাতজন সিপিএমের। এদিন সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের প্রধান তথা সুকুমার পাত্রের ঘনিষ্ট বলে পরিচিত কোহিনুর খাতুনের বিরুদ্ধে দলেরই সাতজন সদস্য অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছেন ওই ব্লকের বিডিও ভাস্কর রায়কে। বিডিও বলেন, “আমার কাছে আবেদন জমা দিয়েছে।পঞ্চায়েতের নিয়মানুযায়ী ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।”
দলীয় সদস্য সৈয়দ আবদুল মইন,দিলীপ মাঝিরা বলেন, “প্রধান পঞ্চায়েত নিজের মতো করে চালাচ্ছেন। ঠিকাদারদের সঙ্গে গোপন আঁতাতও রয়েছে। সরকারি টাকা নয়ছয়ও করছেন। প্রতিবাদ করেও কাজ হয়নি।তাই অনাস্থা আনতে বাধ্য হলাম।” জানা গিয়েছে, দাসপুর-১ ব্লকের কোষাধ্যক্ষ কাজল সামন্তের অনুগামীরাই এ দিন প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছেন। কাজল সামন্ত আবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শ্যাম পাত্রের ঘনিষ্ঠ। এ দিন শ্যাম পাত্র অবশ্য তেমন কিছু বলতে চাননি।
দলেরই একটি সূত্রের খবর, ঘাটাল মহকুমায় মোট ৪৮টি পঞ্চায়েত। তার সিংহভাগই শাসক দল তৃণমূলের অধীন। পাঁচটি পুরসভাও তৃণমূলের দখলে। কিন্তু বেশিরভাগ পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি, পুরসভা গুলিতেও অনাস্থা আনতে দলেরই একটি গোষ্ঠী সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সেটা টের পেয়েছে জেলা নেতৃত্বও। দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের হুঁশিয়ারি, “দলের ক্ষতি হবে-এমন কোনও কাজ সমর্থন করবে না দল। সরকার গঠনের কাজ শেষ হলেই সব পক্ষকে নিয়ে জরুরি বৈঠকে সব বিষয়ের নিষ্পত্তি করা হবে।’