Horticulture

horticulture: ফুল কিনবেন পর্যটক, চাষের কৌশল বদল দোকান্ডায়

ফুলের চারা এখানের চাষিরা নিজেরাই তৈরি করেছেন। এক মাস আগে পর্যন্ত কংসাবতী নদীর জলে ডুবে ছিল দোকান্ডার মাঠ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২১ ০৬:১২
Share:

দোকান্ডায় লাগানো হয়েছে ফুলের চারা। নিজস্ব চিত্র।

নিম্নচাপের বৃষ্টি থেকে নদীর জলে উপচে চাষের জমি ভেসে যাওয়া— চলতি বছর নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে মাথায় হাত পড়েছিল দোকান্ডার ফুল চাষিদের। পূর্ব মেদিনীপুরের ফুলের উপত্যকা বলে পরিচিত এই এলাকায় শীতের মরসুমে তাই পর্যটকদের আগমণ থেকে বাড়তি উপার্জনের আশায় রয়েছেন তাঁরা। এ জন্য ফুল চাষে বদল আনা হয়েছে। বাজারের বদলে খেত থেকেই পর্যটকদের ফুল বিক্রির উদ্দেশ্যে এবার ডাঁটা যুক্ত বিভিন্ন ধরনের বাহারি ফুলের চাষ করছেন চাষিরা। পাশাপাশি, পাল্লা দিয়ে চাষ হয়েছে শীতকালীন আনাজেরও।

Advertisement

পাঁশকুড়ার ঘোষপুর পঞ্চায়েত এলাকার দোকান্ডায় ফুলের বাগিচার টানে শীতের মরসুমে বহু পর্যটক আসেন। যা সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় স্থানীয় প্রশাসনকে। বড়দিন, নববর্ষ এবং ভ্যালেন্টাইনস ডে'তে কংসাবতী নদীর চরে রীতিমতো মেলা বসে যায়। পর্যটকের একাংশ জমি ঢুকে গিয়ে ফুল নষ্ট করেন বলে চাষিদের একাংশ অভিযোগ করতেন। কিন্তু যে সংখ্যায় পর্যটকেরা আসেন তাতে দেখা গিয়েছে, গত বছর করোনা কালে বাজারে ফুল বিক্রি কম হলেও পর্যটকেরা যা ফুল কিনেছিলেন তাতে যথেষ্ট লাভবান হয়েছিলেন চাষিরা।

গত বছরের ওই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগে হওয়া ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চাইছেন চাষিরা। তাই এবার তাঁরা ফুলচাষে আমূল বদল এনেছেন। চাষিরা জানাচ্ছেন, এতদিন দোকান্ডায় মূলত গাঁদা ফুলেরই চাষ হত। কিন্তু পর্যটকরা ডাঁটা যুক্ত ফুল কিনতে বেশি পছন্দ করেন বলে গাঁদা ফুলের চাষ কমিয়ে ডালিয়া, করণ, জিপসি, গ্ল্যাডিওলাস, অ্যাস্টার, চেরির মতো ডাঁটা যুক্ত ফুল চাষ করছেন। সুব্রত বেরা নামে স্থানীয় এক ফুলচাষি বলেন, ‘‘আগে শুধু গাঁদা চাষ করতাম। গাঁদা ফুল তুলে বিক্রি করার জন্য পাঁশকুড়া, কোলাঘাট বা কলকাতা যেতে হয়। তাই এবার গাঁদার পরিবর্তে তিন ধরনের ডাঁটাযুক্ত ফুলের চাষ করেছি। পর্যটকরা খেত থেকেই ওই সমস্ত ফুল কিনে নেয়। অনেকে তো ফুলের চারাও কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।’’

Advertisement

ফুলের চারা এখানের চাষিরা নিজেরাই তৈরি করেছেন। এক মাস আগে পর্যন্ত কংসাবতী নদীর জলে ডুবে ছিল দোকান্ডার মাঠ। তাই এবার ফুলের চারা লাগাতে বেশ কিছুটা দেরি হয়েছে। ফুল ফুটতে ফুটতে জানুয়ারি হয়ে যাবে। তবে তাতে কি! সদ্য চালু হয়েছে লোকাল ট্রেন। তাই এখান থেকেই দোকান্ডায় পর্যটক সমাগম শুরু হয়েছে। বিক্রি হচ্ছে ফুলের চারাও। যা থেকে ভালই আয় হচ্ছে চাষিদের।

ফুলের পাশাপাশি পর্যটকেরা টাটকা আনাজ কিনতেও পছন্দ করেন। সেই কথা মাথায় রেখে এবার দোকান্ডা ও পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলিতে শীতকালীন আনাজের চাষও ব্যাপক হারে হয়েছে। ফুল খেতের পাশেই লাগানো হয়েছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, মুলো, টমেটো ইত্যাদি আনাজ। সমীর মাইতি নামে এক চাষি বলেন, ‘‘এবার গাঁদার চাষ কমিয়ে সাড়ে ৩ কাঠা জমিতে বড় বেগুনের চারা লাগিয়েছি। এখানে যে পরিমাণ পর্যটক আসে তাতে খেত থেকেই সব বেগুন বিক্রি হয়ে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন