হস্তিশাবকের প্রাণ বাঁচালেন জওয়ানরা

ভোরে একটা চিৎকারে ঘুম ছুটে গিয়েছিল সকলের। একটু সন্ধান করার পর দেখা যায়, কুয়োয় প়ড়ে গিয়েছে একটি বাচ্চা হাতি। উপরে ওঠার চেষ্টায় বাচ্চাটা বারবার এগিয়ে দিচ্ছিল শুঁড়টা। কিন্তু ৩০ ফুট নীচ থেকে কোনওভাবেই উঠতে পারছিল না।

Advertisement

অভিজিৎ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৬ ০০:৪০
Share:

ভোরে একটা চিৎকারে ঘুম ছুটে গিয়েছিল সকলের। একটু সন্ধান করার পর দেখা যায়, কুয়োয় প়ড়ে গিয়েছে একটি বাচ্চা হাতি। উপরে ওঠার চেষ্টায় বাচ্চাটা বারবার এগিয়ে দিচ্ছিল শুঁড়টা। কিন্তু ৩০ ফুট নীচ থেকে কোনওভাবেই উঠতে পারছিল না। মঙ্গলবার ভোরে গোয়ালতোড় রেঞ্জের হাতির পাল কেওয়াকোল জঙ্গলে ঢোকার সময় একটি কুয়োয় পড়ে যাওয়া ওই হাতিটিকে অবশ্য উদ্ধার করেছে সিআরপি-এর ৬৬ ব্যাটেলিয়নের জওয়ানরা।

Advertisement

বন দফতর সূত্রের জানা গিয়েছে, হাতির গায়ে মানুষের ছোঁয়া লাগলে সেই হাতিকে আর দলে নেয় না হাতির পাল। যাতে হাতিটি এখন থেকেদলছুট না হয়, তার জন্য গায়ে কোনও ছোঁয়া না লাগিয়ে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করা হয়। জওয়ানরা ট্যাঙ্কে করে জল নিয়ে এসে পাইপে করে কুয়োয় ভর্তি করেন। খোঁড়া হয় কুয়োটিকে। কুয়োটি ভর্তি হওয়ার পর ধীরে ধীরে শিশু হাতিটি উঠে আসে। প্রায় পাঁচ ঘন্টার চেষ্টায় হাতিটি উদ্ধার করার পর বন দফতরের লোকজন হাতির পালে ঢুকিয়ে দেয় তাকে। বন দফতরের ডিএফও (রূপনারায়ণ) অর্ণব সেনগুপ্ত বলেন, “প্রথম অবস্থায় পালটি শিশু হাতিটিকে দলে ঢুকিয়ে নেওয়ায় আমরা অনেকটাই চিন্তামুক্ত।”

তবে দলমার দামালদের তাণ্ডবে অতিষ্ঠ পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড়ের বাসিন্দারা। দিন দু’য়েক আগে বাঁকুড়া থেকে ৯০-১০০টি হাতির দল গড়বেতার নয়াবসত ও হুমগড় রেঞ্জ হয়ে গোয়ালতোড়ে ঢোকে। গোয়ালতোড়ে ঢোকার পরই হাতির পালটি দু’টি ভাগে ভাগ হয়ে যায়। আর তিনটি ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে গোটা গোয়ালতোড়ের বনাঞ্চল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। জঙ্গলে এখন হাতির পযার্প্ত খাবার নেই। এদিকে এখন আলু, সব্জি-সহ নানা চাষের মরসুম। তাই সেখানেই হানা দিচ্ছে হাতির দল। উদ্বেগে তাই স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘সব এলাকায় বন দফতরের কর্মীরা নেই। যখন তখন হাতির পাল মাঠে নামলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।’’

Advertisement

মঙ্গলবার হাতির শাবকটিকে উদ্ধারের খবর চাউর হতেই ভিড় জমে যায় স্থানীয়দের। বন দফতর ও সিআরপিএফের জওয়ানেরা পাঁচ ঘন্টার চেষ্টায় তাকে উদ্ধার করে কেওয়াকোল জঙ্গলে ঢুকিয়ে দেয়। কমান্ড্যান্ট সুমন্তকুমার ঝা, সেকেন্ড ইন কমান্ড্যান্ট পঙ্কজ চৌধুরীর কথায়, ‘‘আমরা তো বছরভর মানুষের সুরক্ষায় কাজ করি। এর মাঝে একটা শিশুকে তার মায়ের কাছে ফেরত পাঠানোর অভিজ্ঞতা একদম অন্যরকম।’’ জওয়ানদের এমন সহযোগিতা পেয়ে খুশি বন দফতরের ডিএফও (রূপনারায়ণ) অর্ণব সেনগুপ্তও। তিনি বলেন, ‘‘শাবকটি কুয়োয় পড়ে যাওয়ার আমরা সাহায্যের জন্য সিআরপির কাছে আর্জি জানিয়েছিলাম। ওঁদের সাহায্য না পেলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement