ফোন কানে নিয়েই বাইকে। মেদিনীপুরে। নিজস্ব চিত্র
গাড়ি চালানোর সময় চালক মোবাইলে কথা বললে যে কত বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে মুর্শিদাবাদের দৌলতাবাদ। সেতুর রেলিং ভেঙে বাস জলে পড়ে প্রাণ গিয়েছে ৪৪ জনের। তাতেও অবশ্য হুঁশ ফেরেনি চালক থেকে পথচলতি সাধারণ মানুষের। মোবাইল কানে গাড়ি চালানো থেকে, রাস্তা পারাপার, সবই চলছে নিয়মিত।
দিন কয়েক আগের ঘটনা। মেদিনীপুর শহরের এলআইসি মোড়ে টোটো চালক এক হাতে ফোন ধরে কথা বলতে বলতেই চারজন যাত্রী নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। কখন সামনে একটি লরি চলে এসেছে, খেয়ালই করেননি। আচমকা ব্রেক কষলেন টোটো চালক। ঠিক সময়ে ব্রেক না কষলে পারলে বড় বিপদ হতে পারত। এমন বিপজ্জনক ভাবে বাস-অটো চালাতেও দেখা যায় একাংশ চালককে।
পরিস্থিতি দেখে মোবাইল ব্যবহার নিয়ে সচেতন করতে পথে নেমেছে পুলিশ। মেদিনীপুরে মাইকে প্রচার শুরু হয়েছে। গাড়ি চালানোর সময় কোনও ভাবেই যাতে চালকেরা মোবাইল ব্যবহার না করেন, সেই বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে। আইন ভাঙলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “মানুষকে সচেতন করতেই মাইকে প্রচার শুরু হয়েছে।’’ তাঁর কথায়, “ট্রাফিক আইন মেনে গাড়ি চালানোর জন্য মানুষকে সচেতন করা হয়ই। যারা আইন ভেঙে কানে মোবাইল নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, গত কয়েক দিনে মেদিনীপুরে নিয়ম না মেনে গাড়ি চালানোর জন্য অনেক মামলা হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে। শহরবাসীর একাংশের অবশ্য বক্তব্য, কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তখন নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। অন্যান্য সময় এ ব্যাপারে তেমন ভাবে পদক্ষেপ করা হয় না। ফলে, বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানোর পাশাপাশি মোবাইলে কথা বলতে বলতে গাড়ি চালানোটাও এখন একাংশ চালকের অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাত্রীরা বারণ করলেও চালকেরা শোনেন না। যদিও প্রশাসনের দাবি, নজরদারি সব সময়ই চলে। জেলার পরিবহণ আধিকারিক বিশ্বজিৎ মজুমদার বলেন, “গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ব্যবহার করা উচিত নয়। বাস- অটো সব সংগঠনের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। সকলকে এ ব্যাপারে আরও সচেতন হওয়ার কথা জানানো হয়েছে।’’ জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মৃগাঙ্ক মাইতির কথায়, “গাড়ি চালানোর সময় চালকেরা যাতে মোবাইল ব্যবহার না করেন, সে কথা বলা হয়েছে।’’