জখম বিডিও। নিজস্ব চিত্র।
জারি হয়ে গিয়েছে নির্বাচনী আচরণ বিধি। রাজ্যে এসেছে আধা সামরিক বাহিনী, চলছে নিয়মিত টহল। ভোটারদের মনের ভয় দূর করতেই নাকি এই ব্যবস্থা করেছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু সেই নিরাপত্তা ব্যবস্থার নাকের ডগাতেই যে চলছে নৈরাজ্য তা আরও একবার প্রমাণ করে দিল পূর্ব মেদিনীপুর। দিন কয়েক আগেই রামনগর বিধানসভার বাম প্রার্থী তাপস সিংহ নিগৃহীত হয়েছিলেন। এ বার বুথ পরিদর্শনে বেরিয়ে আক্রান্ত হলেন স্বয়ং বিডিও।
কাঁথি ৩ ব্লকের লাউদা পঞ্চায়েতের ঘটনা। শনিবার দুপুরে বিডিও মহম্মদ নূর আলমের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল বুথ পরিদর্শনে বেরিয়েছিলেন। বনমালীচট্টা গ্রামে একদল যুবকের হাতে মার খান বিডিও-সহ পরিদর্শক দলের সদস্যরা। ঘটনায় বিডিও-র অভিযোগের ভিত্তিতে যে ন’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ তারা প্রায় সকলেই তৃণমূল কর্মী। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কাঁথি উত্তর বিধানসভার বাম প্রার্থী চক্রধর মেইকাপ বলেন, ‘‘পুলিশ পেটানোই যাদের ট্র্যাডিশন, তারা তো এমন কাজই করবে। ভোট আসতেই সন্ত্রাসের মাত্রা আরও বেড়েছে।’’
এ দিন লাউদা পঞ্চায়েতে কাছে স্থানীয় ক্লাবের উদ্যোগে একটি অনুষ্ঠান চলছিল। অভিযোগ, ওই এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় বিডিও-র গাড়ি লক্ষ্য করে কটূক্তি করে একদল যুবক। পরিদর্শক দলের সদস্য শমীক পণ্ডা তার প্রতিবাদ করলে ওই যুবকেরা গাড়ি আটকে তাঁকে মারধর শুরু করে, ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টাও হয়। শমীকবাবুকে বাঁচাতে গিয়েই আক্রান্ত হন বিডিও। খবর দেওয়া হয় মারিশদা থানায়। পুলিশ বাহিনী গিয়ে উদ্ধার করে তাঁদের।
বিডিও মহম্মদ নূর আলম এবং শমীকবাবুকে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে বিডিও-র নাকের হাড়ে চির ধরেছে। এ দিন রাতে যোগাযোগ করা হলে বিডিও বলেন, ‘‘যা জানানোর তা অভিযোগপত্রেই জানিয়েছি। সংবাদ মাধ্যমকে এ বিষয়ে কিছু বলার নেই।’’
এ দিকে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত যুবকেরা সকলেই তৃণমূল সদস্য। এ দিন সকাল থেকেই চলছিল অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি। বাসিন্দাদের অভিযোগ, মদ্যপ অবস্থাতেই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে তারা। অভিযুক্তদের সঙ্গে দলের যোগের কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন কাঁথি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিকাশ বেজ। যদিও তিনি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে পুলিশ যা করার তা করেইছে। আর কী বলার আছে?’’