ভোট পড়ে গিয়েছে, ঘোষণা বুথেই

কয়েকজন পরিচিতের ফোন পেয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে চলে যাই সবংয়ের দণ্ডরা গ্রাম পঞ্চায়েতের দণ্ডরা-২ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে। বুথের সামনে পিচ রাস্তায় থিকথিকে ভিড়।

Advertisement

দেবমাল্য বাগচী

সবং শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৮ ০০:৩৮
Share:

সবংয়ের ভিকনি নিশ্চিন্তিপুরে ভোটের লাইন। ছবি: কিংশুক আইচ

‘ব্যাপক ছাপ্পা চলছে, একবার এসে দেখে যান’

Advertisement

কয়েকজন পরিচিতের ফোন পেয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে চলে যাই সবংয়ের দণ্ডরা গ্রাম পঞ্চায়েতের দণ্ডরা-২ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে। বুথের সামনে পিচ রাস্তায় থিকথিকে ভিড়। অপরিচিত লোকেদের গাড়ি থেকে নামতে দেখে সকলেরই কৌতুহলী দৃষ্টি। এক যুবক নিজে থেকেই এগিয়ে এসে বললেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ ভোট হচ্ছে দাদা। কোনও অসুবিধা নেই।”

কথা না শুনে স্কুলের দিকে হাঁটা লাগাতে আর এক যুবক বললেন, “স্কুলে গিয়ে লাভ নেই। মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিচ্ছে। আমাদের মা-মাটি-মানুষ এখানে জিতবে।” বেশ কয়েকজন পিছু নিলেন আমাদের। আমি তাঁদের বললাম, আপনারা এতজন বুথে গেলে তো ঝামেলা হবে? সঙ্গে সঙ্গে পাশ থেকে আর এক যুবকের উত্তর, “কেউ কিছু বলবে না। আমরা মা-মাটি মানুষের লোক।” বুথে ঢুকতেই ধরা পড়ল ‘মা-মাটি-মানুষে’র দাপট। এক মহিলা হাতে লেখা বুথ স্লিপ নিয়ে বুথের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। বুথের ভিতর থেকে বেরিয়ে এসে ছাই রঙের টি-শার্ট পড়া এক যুবক ওই স্লিপ নিয়ে বললেন, ‘তোমার ভোট হয়ে গেছে চলে যাও।’ চারিদিক দেখে বেরিয়ে গেলেন ওই মহিলা। উঁকি দিয়ে দেখা গেল বিজেপির বুথ এজেন্ট নেই। বুথের বারান্দায় বেঞ্চে বসে চলছে আড্ডা। মধ্যমণি তৃণমূলের অঞ্চল নেতা কানাই গুছাইত। বিজেপির এজেন্ট নেই কেন? কানাইবাবু বলেন, “বিজেপির এজেন্ট আসেনি।” তারপরেই কানাইবাবু হাত ধরে হাসি মুখে বললেন, “এ বার আসুন। ভোটটা শান্তিপূর্ণ হতে দিন।” তিনিই পিচ রাস্তা পর্যন্ত এনে ছেড়ে দিলেন। সেখানেই তনুময় জানা নামে একজন ভোটার চুপিসারে বলে গেলেন, “ভোট দিতে গিয়েছিলাম। বলে দিয়েছে ওঁরা আমার ভোট দিয়ে দিয়েছে। বেশি কথা বলিনি। চলে যাচ্ছি। আপনারাও চলে যান।”

Advertisement

‘শান্তিপূর্ণ’ ভোট দেখে ফিরলাম আমরাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন