তমলুক হাসপাতালে এক আহত তৃণমূলের নেতা। নিজস্ব চিত্র
বিক্ষুব্ধ তৃণমূল তো রয়েছেই, সোমবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলার বিভিন্ন এলাকা শাসক-বিরোধী সংঘর্ষেও উত্তপ্ত হল।
শাসকদল তৃণমূলের হাতে বিরোধী বামফ্রন্ট, বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের আক্রান্ত হওয়ার বহু অভিযোগ উঠেছে। সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহির অভিযোগ, ‘‘নন্দীগ্রাম জেলার বিভিন্ন এলাকায় বুথে পোলিং এজেন্ট হিসাবে থাকা দলীয় কর্মীরা তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের আক্রমণে আহত হয়েছেন। আহতদের সংখ্যা ৫৫ জন। নিরঞ্জন সিহির আরও অভিযোগ, ‘‘এ দিন জেলায় মোট ৫৬৫টি বুথে বামফ্রন্ট প্রার্থীর পোলিং এজেন্টকে মারধর করে বের করে দেওয়া হয়েছে। ৩৯৫টি বুথে বামফ্রন্ট প্রার্থীর এজেন্টকে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি। আর ৯২০টি বুথে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা ছাপ্পা ভোট দিয়েছে। আবার বিজেপি’র তমলুক জেলা সভাপতি প্রদীপ দাসের অভিযোগ, ‘‘জেলার বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের লোকজন ছাপ্পা ভোট দিতে হামলা চালিয়েছে।’’
তবে বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থকদের আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগের পাশাপাশি এদিন জেলার বিভিন্ন এলাকায় শাসক দল তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগও উঠেছে। এক্ষেত্রে অভিযোগের তীর মূলত নির্দল প্রার্থীদের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। ওই নির্দল প্রার্থীরা আদতে তৃণমূলের বিক্ষুদ্ধ বলেই অভিযোগ। এদিন নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের আমদাবাদ-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সাতেঙ্গাবাড়ি গ্রামে নির্দল প্রার্থীর কর্মীদের হাতে মারধর খেয়ে ১২জন তৃণমূল কর্মী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ।
অভিযোগ, নির্দল প্রার্থীর কর্মীদের হাতে মারধরে গুরুতর হয়েছেন নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের বয়াল-২ অঞ্চল সভাপতি মনোজ সামন্ত। ডান- পায়ে, কাঁধে, মুখে আঘাত লেগেছে তাঁর। মনোজবাবু বলেন, ‘‘দলের কর্মীদের সঙ্গে দেখা করার জন্য আসদতলা উত্তর বুথের সামনে নির্দল প্রার্থীর অনুগামীরা আমাকে আক্রমণ করে। লাঠি, লোহার রড দিয়ে মারধর করে।’’ তমলুক ব্লকের পিপুলবেড়িয়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বহিচাড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে যাওয়া তমলুক শহরের তৃণমূল কাউন্সিলর চঞ্চল খাঁড়া-সহ তাঁর সঙ্গী পাঁচজনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে নির্দল প্রার্থীর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। আহত ওই তৃণমূল নেতা তমলুক জেলা হাসপাতাল চিকিৎসাধীন। নির্দল প্রার্থীর কর্মীদের অবশ্য অভিযোগ, ওই তৃণমূল নেতা বুথে ঢুকে ছাপ্পা ভোট দিচ্ছিলেন।
আর তমলুক শহর তৃণমূল সভাপতি দিব্যেন্দু রায়ের এ দিন বলেন, ‘‘সিপিএম, বিজেপি-সহ বিরোধীরা এক হয়ে আমাদের আক্রমণ করেছে।’’
(তথ্য: আনন্দ মণ্ডল, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়)