প্রতীকী ছবি।
প্রায় এক হাজার গোঁজ- নির্দল প্রার্থী রয়েছে। প্রবল অস্বস্তিতে শাসক দল।
অনেক এলাকায় বিরোধী নেই। কিন্তু গোঁজ, নির্দল রয়েছে। ফলে, ভোটের আগে রেকর্ড সংখ্যক আসনে জিতেও স্বস্তি নেই শাসক দলের অন্দরে। তৃণমূলের এক জেলা নেতার স্বীকারোক্তি, “অনেক রকম ভাবে ওষুধ দেওয়া হয়েছিল! সব ক্ষেত্রে তা কাজে লাগেনি!” কোনও কোনও গোঁজ, নির্দল আবার শাসক দলের নেতাদের পাল্টা আশ্বাস দিয়ে জানিয়েছেন, চিন্তার কিছু নেই। জিতে তাঁরা তৃণমূলেই ফিরবেন! এই আশ্বাসে অবশ্য ভরসা রাখতে পারছে না শাসক। ভয় একটাই, জিতে যদি বিজেপিতে চলে যায়!
মেদিনীপুর গ্রামীণের কনকাবতীর এক আসনে এ বার নির্দল হিসেবে লড়ছেন গৌতম দত্ত। গৌতমবাবু এলাকার উপপ্রধান। দলের থেকে প্রতীক পাননি। মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। আশা ছিল, উপপ্রধান হিসেবে পাঁচ বছর কাজ করার সুবাদে দল তাঁকে প্রতীক দেবে। শনিবার বেলা গড়াতেই তিনি বুঝে যান, প্রতীক তিনি পাচ্ছেন না। দলের তরফে মনোনয়ন প্রত্যাহারের অনুরোধও করা হয়েছিল তাঁর কাছে। গৌতমবাবু অবশ্য জানিয়ে দেন, দল তাঁর সঙ্গে অন্যায় করেছে। তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করবেন না। নির্দল হিসেবে ভোটে লড়বেন। জিতে বুঝিয়ে দেবেন, এলাকার মানুষ তাঁর সঙ্গে রয়েছে। গৌতমবাবুর কথায়, “মনোনয়ন প্রত্যাহার করিনি। আমি নির্দল হিসেবেই ভোটে লড়ছি। নতুন করে প্রমাণ করার কিছু নেই। যা প্রমাণ করার ভোটেই করব।” জানা গিয়েছে, জেলায় প্রায় এক হাজার আসনে গোঁজ, নির্দল কাঁটা বিঁধে রয়েছে শাসককে।
সার্বিক ভাবে ছবিটা ঠিক কেমন? জেলা পরিষদে ৩টি, পঞ্চায়েত সমিতিতে ৮৭টি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতে ৩৪৭টি আসনে তৃণমূলের গোঁজ প্রার্থী রয়েছে। অর্থাৎ, প্রতীক না মেলায় এঁরা নির্দল হয়েছেন। জেলা পরিষদের ৫১টি আসনে তৃণমূলের মনোনয়ন হয়েছিল ৫৭টি। ৩টি প্রত্যাহার হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির ৬১১টি আসনে তৃণমূলের মনোনয়ন হয়েছিল ৯০০টি। ২০২টি প্রত্যাহার হয়েছে। অন্যদিকে, গ্রাম পঞ্চায়েতে ৩,০৪০টি আসনে তৃণমূলের মনোনয়ন হয়েছিল ৩,৯৮৫টি, ৫৯৮টি প্রত্যাহার হয়েছে।
জেলা তৃণমূলের এক নেতা মানছেন, “শেষ দিনে অনেককে অনুরোধ- আবেদন করে, ধরে- বেঁধে মনোনয়ন প্রত্যাহার করাতে হয়েছে! না- হলে গোঁজের সংখ্যা আরও বেশি হত!” এর উপর রয়েছে নির্দল- কাঁটা। জেলা পরিষদে ৪টি আসনে, পঞ্চায়েত সমিতিতে ৭২টি আসনে এবং গ্রাম পঞ্চায়েতে ৪৬৫টি আসনে নির্দল প্রার্থী রয়েছে। জেলা পরিষদে ৪টি আসনে নির্দলের মনোনয়ন হয়েছিল। কেউ মনোনয়ন প্রত্যাহার করেনি। পঞ্চায়েত সমিতিতে ৯৩টি আসনে নির্দলের মনোনয়ন হয়েছিল। ২১টি মনোনয়ন প্রত্যাহার হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েতে ৬৪৪টি আসনে নির্দলের মনোনয়ন হয়েছিল। ১৭৯টি মনোনয়ন প্রত্যাহার হয়েছে। অর্থাৎ, সব মিলিয়ে ৯৭৮টি গোঁজ, নির্দল প্রার্থী রয়েছে।
জেলা তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাইতির যদিও দাবি, “কোথাও বড় রকমের কোনও সমস্যা নেই!”