পঞ্চায়েত নির্বাচনে এক সময় এই গ্রামের দেওয়াল বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পোস্টারে ছয়লাপ হয়ে থাকত। কিন্তু আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে ছবিটা সম্পূর্ণ উল্টো। সুতাহাটা ব্লকের উত্তর বাশুলিয়া গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দা এবার জানেনই না— প্রার্থী কে!
উত্তর বাশুলিয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে শাসকদল তৃণমূল। স্বাভাবিকভাবেই মনোনয়ন পর্ব শেষে শাসকদলের প্রার্থীর তরফে কোনও প্রচার অভিযানও চোখে পড়েনি। গ্রামে নেই কোনও প্রার্থীর পোস্টার, ব্যানার এবং দেওয়াল লিখন। এতেই ‘মুষড়ে’ পড়েছেন গ্রামবাসী এবং বিরোধীরা।
হলদিয়া পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড লাগোয়া ওই গ্রাম এক সময় বামেদের দুর্ভেদ্য ঘাঁটি ছিল। ২০১৮ সালে লোকসভা ভোটে ১০১টি এবং ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে ২৪৪টি ভোটে এগিয়ে ছিল তারা। কিন্তু আসন্ন নির্বাচনে শাসকদলের ‘দাপটে’ বিরোধীরা মনোনয়নই জমা দিতে পারেননি বলে অভিযোগ।
বৃহস্পতিবার গ্রামে গিয়ে দেখা গেল চায়ের দোকানে আড্ডায় মেতেছেন বিরোধী দলের বেশ কয়েকজন কর্মী-সমর্থক। আড্ডার বিষয় ভোট না দিতে পারার আক্ষেপ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নতুন ভোটার বললেন, ‘‘প্রথমবার ভোট দেওয়া নিয়ে উৎসাহী ছিলাম। এখন আফশোস হচ্ছে।’’ বাড়ির সামনে দাঁড়িয়েছিলেন মুরশিদা বিবি নামে এক গ্রামবাসী। আগন্তুক দেখেই ভেবেছিলেন, হয়ত পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থী! কিন্তু পরিচয় জানতে পারার পর তাঁর প্রশ্ন, ‘‘দাদা, আমাদের প্রার্থী কে হয়েছেন? জানেন কিছু!’’
জেলা পরিষদের আসনের প্রার্থী আনন্দময় অধিকারীর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছেন। তাঁর বক্ত্য, ‘‘ব্যক্তিগতভাবে রাজনীতি করলেও আমার কাছে মানুষের সেবা প্রাধান্য পাবে।’’ কিন্তু বিরোধীদের প্রশ্ন, ভোটই যখন হল না, তো আনন্দময়বাবু জনপ্রতিনিধি হলেন কীভাবে?