নজরে জঙ্গলমহল কাপ

পুরস্কারে বাইক-মোবাইল, নোট চোটেও অটুট জৌলুস

নোট-চোটের ছাপ নেই জঙ্গলমহল কাপের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে। বরং জাঁক-জৌলুস এ বার আরও বেশি। মোটর সাইকেল, স্কুটি, মোবাইল, পেডেস্টাল ফ্যান থেকে মিউজিক সিস্টেম, সাইকেল, ট্রফি— পুরস্কারের তালিকা রীতিমতো লম্বা।

Advertisement

সুমন ঘোষ ও বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:৪৭
Share:

মঞ্চ জুড়ে পুরস্কার। নিজস্ব চিত্র।

নোট-চোটের ছাপ নেই জঙ্গলমহল কাপের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে। বরং জাঁক-জৌলুস এ বার আরও বেশি। মোটর সাইকেল, স্কুটি, মোবাইল, পেডেস্টাল ফ্যান থেকে মিউজিক সিস্টেম, সাইকেল, ট্রফি— পুরস্কারের তালিকা রীতিমতো লম্বা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের এক কর্তা মানছেন, “রাজ্য সরকার সব রকম আর্থিক সহায়তা করেছে। তাই নোট বাতিলের পরেও আয়োজনে তেমন কোনও কাটছাঁট করতে হয়নি।”

Advertisement

আজ, মঙ্গলবার মেদিনীপুর কলেজ ও কলেজিয়েট স্কুলের মাঠে পুলিশের উদ্যোগে আয়োজিত জঙ্গলমহল কাপের পুরস্কার বিতরণে হাজির থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবারই মেদিনীপুরে পৌঁছে গিয়েছেন তিনি। পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও বীরভূম— মোট পাঁচটি পুলিশ জেলা থেকে প্রায় ৩৫ হাজার খেলোয়াড় অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। নগদ সঙ্কটে বিশাল এই অনুষ্ঠানের অনেক খরচই পুলিশ অনলাইন ব্যবস্থায় মেটাচ্ছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ মানছেন, “অনলাইনে পেমেন্ট করছি।”

পুলিশ সূত্রে খবর, শুধু পশ্চিম মেদিনীপুর থেকেই খেলোয়াড়দের যাতায়াতের জন্য ৬০০ বাস নেওয়া হয়েছে। যার জন্য খরচ হচ্ছে প্রায় সাড়ে ১৭ লক্ষ টাকা। এখন ব্যাঙ্ক থেকে ইচ্ছেমতো টাকাও তুলতে পারছে না পুলিশ। জানা গিয়েছে, অনুষ্ঠানের জন্য জঙ্গলমহলের প্রতিটি জেলাকে ২ কোটি টাকা করে তোলার অনুমতি দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয় বলেই পুলিশের দাবি। পশ্চিম মেদিনীপুরের এক পুলিশ কর্তার কথায়, “যেখানে দু’টি জেলাতেই প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা প্রয়োজন, সেখানে ২ কোটি তো কিছুই নয়।’’ অনলাইন পেমেন্টে অবশ্য জট কিছুটা কেটেছে। মেদিনীপুরের এক মোটর বাইক শো-রুমের মালিক পার্থ পাল বলছিলেন, “পুরস্কার হিসেবে মোটরবাইক কিনে পুলিশ টাকা আমাদের অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দিয়েছে (ফান্ড ট্রান্সফার)। সমস্যা হয়নি।”

Advertisement

তবে গাড়ি ভাড়া, খাওয়াদাওয়ার খরত মেটাতে কিছু নগদ লাগবেই। পুলিশের খাবার সরবরাহকারী একটি সংস্থার মালিক কার্তিক রায়ের কথায়, “কিছু নগদ চেয়েছি। কর্মীদের পাশাপাশি সব্জি ও বিভিন্ন জিনিস কিনতে তো টাকা লাগবেই।” মেদিনীপুর বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মৃগাঙ্ক মাইতিও বলেন, “কর্মীদের খাবার, তেলের টাকা মেটাতে নগদ লাগবে। তবে পুলিশের পরামর্শ মতো গাড়ি মালিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর চেয়েছি। তাহলে ভবিষ্যতে আর সমস্যা হবে না।”

উৎসবের বিপুল খরচ নিয়ে রাজ্যকে বিঁধতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। সিপিএমের জেলা সম্পাদক তরুণ রায়ের কটাক্ষ, “রাজ্য সরকার দান-খয়রাতিতে অকৃপণ!” কংগ্রেসের জেলা সহ-সভাপতি শম্ভুনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “এ ভাবেই যথেচ্ছ টাকা ধ্বংস করা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন