মঙ্গলবার তমলুকে দিলীপ ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।
সাংগঠনিক বৈঠকে এসে দলেরই একাংশ কর্মীদের ক্ষোভের আঁচ টের পেলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ঘটনাস্থল পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক।
মঙ্গলবার তমলুকের নিমতৌড়ি স্মৃতি সৌধে দলের জেলা ও ব্লকের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করতে এসেছিলেন দিলীপবাবু। সঙ্গে ছিলেন বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তুষার মুখোপাধ্যায় ও লোকসভা পালক দিলীপ মিত্র। দোতলায় বৈঠক হচ্ছিল। প্রথম পর্বের আলোচনার পরে পঞ্চায়েত ভোটে জয়ী দলীয় সদস্যদের নিয়ে বৈঠক শুরু হয়। তখনই নীচে একাংশ বিজেপি কর্মী দলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি প্রদীপ দাসের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান। প্রদীপবাবুকে পদ থেকে সরানোর দাবিও ওঠে। পরে তুষারবাবু এসে আলোচনার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা শান্ত হন।
পরে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘কিছু লোকের অভিযোগ করার অভ্যাস আছে। আমি ওঁদের বলেছি কলকাতায় দলীয় অফিসে গিয়ে আমার সঙ্গে দেখা করতে। কী কী অভিযোগ রয়েছে আমি শুনব।’’ আর যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই প্রদীপের দাবি, ‘‘আমাদের দলে একাংশ লোক অন্য দল থেকে এসেছেন। বিজেপির নিয়মকানুন, বিচারধারার সঙ্গে তাঁরা খাপ খাওয়াতে পারেননি। তাই এই ধরনের কিছু ঘটনা ঘটছে।’’
এ দিনের বিক্ষোভে পুরোভাগে থাকা বিজেপি-র মহিলা মোর্চার প্রাক্তন জেলা সভানেত্রী পুতুলরানি বেরা, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের প্রাক্তন সহ-সভাপতি পৃথ্বীরাজ ভট্টাচার্যদের অবশ্য অভিযোগ, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য দলের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে যে অর্থ পাঠানো হয়েছিল তা বুথ স্তরে বণ্টন করা হয়নি। জেলা সভাপতি সেই অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। যাঁরা তাঁর দুর্নীতি নিয়ে যারাই প্রতিবাদ করছে তাঁদের পদ থেকে বাদ দিয়েছেন।’’
এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০০৫ সালে অনুপ্রবেশকারীদের বহিষ্কারের কথা বলেছিলেন। আজকে তাঁদের পক্ষে কথা বলছেন। এটা দ্বিচারিতা। আমরা এর নিন্দা করছি।’’ তাঁর যুক্তি, সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধন বিল পেশ করা হয়েছে যাতে শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া যায়। কিন্তু অনুপ্রবেশকারীদের তা দেওয়া হবে না।
এ দিন তমলুকে বৈঠকেরর পরে দিলীপবাবু চণ্ডীপুরে গিয়ে নন্দীগ্রামের ঘরছাড়া দলীয় কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন।