পটাশপুরে বিজেপি নেতাকে মারধর

বিজেপি নেতার পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, দুষ্কৃতীরা মণ্টুকে মেরে রাস্তায় সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। স্থানীয় কয়েকজন ওই পথে বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁরাই তাঁকে উদ্ধার করে মণ্টুর বাড়িতে খবর দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পটাশপুর শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:১৯
Share:

হাসপাতালের পথে আক্রান্ত বিজেপি নেতা। —নিজস্ব চিত্র

রাতের অন্ধকারে বিজেপির বুথ সভাপতির উপরে হামলার অভিযোগ উঠল। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পটাশপুর-১ ব্লকের গোকুলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কনকপুর রাস্তায়।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, কনকপুরে কানাইডাঙার ২১ নম্বর বুথের ব্লক সভাপতি মণ্টু মণ্ডলের সঙ্গে সোমবার সকালে স্থানীয় দুই ব্যক্তির মাছ ধরার জাল বসানো নিয়ে বচসা হয়। বচসা সাময়িক থেমে যায় এবং দুই পক্ষই যে যাঁর কাজে চলে যান। সন্ধ্যায় মণ্টু প্রতিদিনের মতো কনকপুর বাজারে চায়ের দোকানে চা খেতে যান। ওই দোকান মণ্টুর বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে হওয়ায় তিনি হেঁটে সেখানে গিয়েছিলেন। রাত ৮টা নাগাদ দোকান থেকে হেঁটে বাড়ি ফেরার সময় কয়েকজন দুষ্কৃতী তাঁকে ঘিরে ঘরে মারধর করে বলে অভিযোগ। মাথায় গুরুতর আঘাত নিয়ে মণ্টুকে এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

ওই বিজেপি নেতার পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, দুষ্কৃতীরা মণ্টুকে মেরে রাস্তায় সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। স্থানীয় কয়েকজন ওই পথে বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁরাই তাঁকে উদ্ধার করে মণ্টুর বাড়িতে খবর দেন। রক্তাক্ত অবস্থায় রাতে মণ্টুকে প্রথমে পটাশপুর ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। তবে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকেরা তাঁকে এগরা সুপার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন। বর্তমানে মণ্টুর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।

Advertisement

মঙ্গলবার আহত মণ্টু মণ্ডল বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীদের প্রত্যেকের হাতে লাঠি এবং লোহার রড ছিল। কোনও কিছু বোঝার আগেই ওরা এলোপাথাড়ি ভাবে কিল, চড়, লাথি, ঘুসি মারতে থাকে। কেউ কেউ প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। ওরা মাথায় লোহার রডের আঘাত করে। এর পরে আর কিছু মনে নেই আমার।’’ যদিও এ দিন দুপুর পর্যন্ত আহতের পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। ঘটনা কারা জড়িত, সে নিয়েও ধন্দ রয়েছে।

তবে বিজেপি’র কাঁথি যুব সাংগঠনিক সম্পাদক শম্ভু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পরিকল্পিত ভাবে স্থানীয় তৃণমূলের লোকেরা রাতের অন্ধকারে আমাদের কর্মীর উপর লোহার রড নিয়ে হামলা চালিয়েছে। প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছে। আমরা প্রশাসনের কাছে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাব।’’

এ বিষয়ে গোকুলপুর অঞ্চলের তৃণমূলের সভাপতি অমল মাইতি জানায়, ‘‘বিষয়টি একেবারেই ব্যক্তিগত ঝামেলার ঘটনা। এখানে কোনও ভাবেই তৃণমূলের লোকেরা জড়িত নয়। বিজেপির এই বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যে।’’ গোটা ব্যাপারে পুলিশ জানিয়েছে, তাদের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযোগ এলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

এ দিকে, জেলায় বিজেপি কর্মীদের উপরে হামলার প্রতিবাদে এ দিন মঙ্গলবার তমলুক থানার সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ সভা করে বিজেপি। শ্রীরামপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে বিজেপি প্রধান মঞ্জু বেরা-সহ দলীয় সমর্থকদের উপর আক্রমণের ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ করেছে তারা। এ দিনের বিক্ষোভে ছিলেন বিজেপি’র রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। তিনি জানান, ‘‘বাংলায় পুলিশ, মাফিয়া, গুণ্ডা, তৃণমূল মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে। এ দিনের বিক্ষোভ সভায় ছিলেন বিজেপির তমলুক জেলা সভাপতি প্রদীপ দাস, সহ-সভাপতি অসিত পট্টানায়েক, জেলা সাধারণ সম্পাদক নীলাঞ্জন অধিকারী প্রমুখ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন