নিয়ম-ভঙ্গ: শুক্রবার র্যালিতে হেলমেটহীন আরোহী (বাঁদিকে)। মিছিলে দেখা গেল ড্রোনও। নিজস্ব চিত্র
হেলমেট ছাড়া বাইক নিয়ে রামনবমীর মিছিল নিয়ে শুক্রবার উত্তেজনা ছড়ালো খেজুরির হেঁড়িয়ায়।
খেজুরির জুখিয়া থেকে দু’টি বাসে চেপে বিজেপি প্রভাবিত ‘শ্ৰীরামনবমী উৎসব সমিতি’র হয়ে কাঁথিতে রামনবমীর মিছিলে যোগ দিতে এসেছিলেন অনেকে। বাসের সামনে ছিল বাইকবাহিনী। তবে অধিকাংশ বাইক আরোহীর হেলমেট ছিল না বলে অভিযোগ। প্রথমে হেঁড়িয়া চৌমাথার মোড়ে ট্রাফিক পুলিশ সেই বাইক বাহিনীকে আটকায়।
বিজেপি সমর্থকদের দাবি, স্থানীয় তৃণমূলের উস্কানিতে পুলিশ মিছিলের গতি আটকায়। যদিও তৃণমূলের দাবি, হেলমেট না পরে বাইক চালানো বেআইনি। তাই পুলিশ মিছিল আটকায়। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। তৃণমূলের অভিযোগ, মিছিলে বিজেপির লোকজন তাদের উদ্দেশে গালিগালাজ করছিল। হেঁড়িয়ায় ঢোকার মুখে দলের পার্টি অফিসের সামনে কয়েকজন যুবক দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁরা বিজেপির এ সবের প্রতিবাদ করেন। দু’ পক্ষের মধ্যে ঠেলাঠেলি হয়। অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির পাল্টা দাবি, তাদের দলের পাঁচ মহিলা সমর্থক তৃণমূলের হামলায় জখম হয়েছেন। এর প্রতিবাদে নন্দকুমার-দিঘা জাতীয় সড়কে হেঁড়িয়ায় দুই দফায় আধঘণ্টা পথ অবরোধ করা হয়। পরে হেঁড়িয়া থানায় বিজেপির তরফে অভিযোগও দায়ের করা হয়।
খেজুরির তৃণমুল নেতা নীলাঞ্জন মাইতির অভিযোগ, ‘‘গত ১১ জানুয়ারি দিঘা থেকে বিজেপির প্রতিরোধ সংকল্প যাত্রা হয়েছিল। সেদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল হেলমেট না পরেই বাইকে চেপে মোটর সাইকেল র্যালির উদ্বোধন করেছিলেন। এদিনও হেলমেট না পরে বিজেপি বাইক মিছিল করছিল। তাই পুলিশ আপত্তি তোলে। এতে ওরা রেগে গিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণ করলে বিপত্তি বাধে।’’ বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সোমনাথ রায় বলেন, “মিছিলে বাইকের গতি ছিল খুব কম। দুর্ঘটনার ঝুঁকি তাই ছিল না। ফলে হেলমেট পরেনি বাইক আরোহীরা। তবে মিছিলের সব বাইকের হেলমেট এবং কাগজপত্র ছিল।’’
বিজেপির কাঁথির মুখপাত্র নবীন প্রধানের অবশ্য দাবি, ‘‘এ দিনের মিছিলের সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই। মিছিলের ডাক দিয়েছিল শ্ৰীরামনবমী উৎসব সমিতি।’’
পুলিশের দাবি, কয়েক জায়গায় ব্যারিকেড করা হলেও মিছিল আটকানো হয়নি। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, “কয়েক হাজার মানুষ মিছিলে ছিলেন। মিছিল আটকালে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি হতে পারতো। তবে প্রতিটি মুহূর্তের ভিডিও ছবি করা হয়েছে। ছবি দেখে পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
এদিকে, এ দিন পটাশপুর এবং এগরা বিধানসভা ক্ষেত্রেও ২০০টি বাইক নিয়ে জাগ্রত হিন্দু শক্তির নামে রামনবমীর শোভাযাত্রা হয়। এগরা সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড থেকে জমায়েত হয়ে শোভাযাত্রাটি রওনা হয় কাঁথির উদেশ্যে। শোভাযাত্রায় ছিলেন আরএসএস জেলা প্রমুখ তুষারকর মহাপাত্র, বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক স্বপন দত্ত, কাঁথির যুব মোর্চা সম্পাদক শম্ভু চক্রবর্তী প্রমুখ।