চিকিৎসাধীন: ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে গণেশ গোপ। —নিজস্ব চিত্র।
বাড়ি থেকে টেনে নিয়ে গিয়ে এক বিজেপি কর্মীকে টাঙি দিয়ে কোপানো হল। ঝাড়গ্রাম জেলার জামবনি থানার গিধনির খেঁড়োজোড়া-দিপুডাঙা গ্রামে সোমবার রাতের ঘটনা। ঘটনায় নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা সাধারণ সম্পাদক অর্জুন হাঁসদা-র। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। গণেশ গোপ নামে নামে বছর ছাব্বিশের জখম ওই বিজেপি কর্মীকে প্রথমে ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গণেশবাবুর স্ত্রী টগরিদেবীর অভিযোগ, ওই দিন রাত ৯টা নাগাদ কয়েকজন এসে স্বামীকে ডাকাডাকি করে। তারপরেই উঠোনের বেড়ার দরজা ভেঙে জনা পাঁচেক তৃণমূল কর্মী বাড়িতে ঢুকে স্বামীকে টেনে হিঁচড়ে বাইরে নিয়ে যায়। তৃণমূল নেতা অর্জুন হাঁসদার নেতৃত্বে টাঙি দিয়ে স্বামীর ঘাড়ে, গলায়, পিঠে কোপাতে থাকে। টগরিদেবীর চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এলে দুষ্কৃতীরা মোটর বাইকে চেপে পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত গণেশবাবুকে উদ্ধার করে ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান পড়শিরা।
অভিযোগ নিয়ে অর্জুন হাঁসদার দাবি, ‘‘আমি দু’দিন ধরে রথের মেলা দেখার জন্য সপরিবার ওড়িশার বারিপদায় আছি। কেন আমার নামে অভিযোগ দায়ের হল বুঝতে পারছি না। খোঁজ নিয়ে জেনেছি, গ্রাম্য বিবাদের জেরেই ওই ঘটনা। এর সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই।”
রাতেই ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে গণেশবাবুর অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে কলকাতায় এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়। মঙ্গলবার জামবনি থানায় অর্জুন হাঁসদা, গিধনির যুব তৃণমূল নেতা লাল্টু লালা-সহ শাসকদলের পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন টগরিদেবী। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বিজেপি সূত্রে দাবি, পেশায় দিনমজুর গণেশবাবু দলের বিস্তারক কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এর জন্য তাঁকে কিছুদিন ধরে হুমকিও দেওয়া হচ্ছিল। সেই আক্রোশেই তাঁর উপর পরিকল্পিত ভাবে এই হামলা চালানো হয়েছে। দলের ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুখময় শতপথি বলেন, “জঙ্গলমহলে তৃণমূল জনসমর্থন হারাচ্ছে। বিজেপি-র সংগঠন দ্রুত বাড়ছে। তাই তৃণমূল সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করছে। গণতান্ত্রিক পথেই আমরা এর মোকাবিলা করব।” তৃণমূলের জামবনি ব্লক সভাপতি জগদীশ মাহাতোর দাবি, “গ্রাম্য বিবাদ থেকে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে বিজেপি আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করছে।”