গাছে ঝুলছে সাপ। নিজস্ব চিত্র
মাথার উপর গাছে ঝুলছে সাপ। গাছের নীচে ফুটপাতে দোকানের সারি। কখনও কখনও দোকানেও ঢুকে পড়ছে সাপ। সাপের ভয়ে ক্রেতার দেখা মেলা ভার। ভয়ে রয়েছেন দোকানিরাও। শিকেয় ব্যবসা!
ঘটনাটি মেদিনীপুর শহরের গাঁধীমূর্তির অদূরে একটি এলাকার। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, দিন চারেক আগে সাপটিকে প্রথম গাছে দেখা যায়। সেই থেকে সাপটি গাছেই রয়েছে। দিনে বেশ কয়েকবার ওঠানামা করছে। ডাল বেয়ে নীচে নেমে আসছে, ফের উপরে উঠছে। ফুটপাতের এক দোকানির কথায়, “সাপের ভয়ে ব্যবসা করাই মুশকিল হয়ে পড়েছে!”
সাপটির ছবি দেখে প্রাথমিক ভাবে বনকর্তারা জানাচ্ছেন, এটি ‘রেট স্নেক’ হতে পারে। অর্থাৎ, দাঁড়াশ সাপ। দাঁড়াশ সাপের গড়ন এমনই হয়। এক সাপের জেরে শহরের ওই এলাকায় হুলস্থুল অবস্থা হচ্ছে জেনে শনিবার মেদিনীপুরের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, “বিষয়টি দেখছি।” পরিস্থিতি সরেজমিন দেখতে বনকর্মীদের এলাকায় পাঠানো হচ্ছে বলে দফতরের এক সূত্রে খবর।
বনকর্তারা জানাচ্ছেন, দাঁড়াশ সাপ নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। কারণ, এই সাপ নির্বিষ। মেদিনীপুরের এক বনকর্তার কথায়, “দাঁড়াশ বিষহীন সাপ। লেজ তো দূরস্থান, এর বিষদাঁতই নেই।” অনেকের যে ধারণা সাপ মাত্রেই বিষাক্ত? ওই বনকর্তার কথায়, “ধারণাটি ভুল। অনেক সাপ শান্ত, ভিতু। সবথেকে বড় কথা, ক্ষতিকারক নয়। দাঁড়াশ এর অন্যতম।” বন দফতর সূত্রে খবর, মূলত ইঁদুর, ছুঁচো, ব্যাঙ ছোট পাখি ধরে খায় এই সাপ। ছোটখাটো বিষাক্ত সাপও খেয়ে নেয়। এ সব খেয়েই এই সাপ জীবনধারণ করে। ওই বনকর্তার কথায়, “শিকার ধরা মাত্রই গিলতে শুরু করে এই নির্বিষ সাপ।” স্থানীয় এক দোকানি মানছেন, “সন্ধ্যার পরে দোকান বন্ধ করে দিচ্ছি। আগে কখনও এমন সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়নি।”
ফুটপাতে চায়ের দোকান রয়েছে পরমেশ্বর সিংহের। তিনি বলছিলেন, “সাপটা যখন তখন গাছ থেকে নেমে পড়ছে। সাপ দেখতে লোকজনের ভিড়ও জমে যাচ্ছে।” মেদিনীপুরের এক বনকর্তা বলেন, “দাঁড়াশ সাপকে গোখরো সাপ বলে ভ্রম হতে পারে। এ কারণে এই সাপ মানুষের হাতে বেশি মারাও পড়ে।”