tmc

পদপ্রাপ্তির তালিকা ফাঁস! প্রশ্ন

প্রাথমিক তালিকায় নাম থাকা নেতা-নেত্রীরা পদ পেয়েছেন ধরে নিয়েই দলীয় কর্মসূচিতে তাঁদের পদ-সহ নাম ঘোষণা করছেন। কয়েকদিন আগে নয়াগ্রামে তৃণমূলের দলীয় কর্মসূচিতে এক নেতার নাম ঘোষণার সময়ে তাঁকে ব্লক সভাপতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

Advertisement

কিংশুক গুপ্ত

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:০৫
Share:

প্রতীকী চিত্র।

কাটছে না প্রতীক্ষার প্রহর। পদ কি আদৌ আছে! নতুন পদ মিলেছে কি! জেলা ও ব্লকগুলির পদাধিকারীদের চূড়ান্ত তালিকা ঘোষণা না হওয়ায় ভবিষ্যৎ নিয়ে অন্ধকারে তৃণমূলের বড়, মেজো, ছোট নেতারা। ইতিমধ্যে সমাজমাধ্যমে ফাঁস হয়েছে প্রাথমিক তালিকা। তা নিয়ে বিড়ম্বনা কাটতে না কাটতেই হাজির নয়া অস্বস্তি। প্রাথমিক তালিকায় নাম থাকা নেতা-নেত্রীরা পদ পেয়েছেন ধরে নিয়েই দলীয় কর্মসূচিতে তাঁদের পদ-সহ নাম ঘোষণা করছেন।
কয়েকদিন আগে নয়াগ্রামে তৃণমূলের দলীয় কর্মসূচিতে এক নেতার নাম ঘোষণার সময়ে তাঁকে ব্লক সভাপতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ঝাড়গ্রাম ব্লক সভাপতি হিসেবে প্রাথমিক তালিকায় নাম থাকা এক নেতাকে নিয়ে প্রতিদিনই সমাজমাধ্যমে তাঁর ‘নতুন পদ’ সহ পোস্ট দিচ্ছেন কর্মীরা। ছত্রধর মাহাতোর অনুগামী হিসেবে পরিচিত সুবর্ণরৈখিক এলাকার এক ব্লক সভাপতি ফাঁস হওয়া প্রাথমিক তালিকা অনুযায়ী পদে পুনর্বহাল হননি। ইদানীংকালের কর্মসূচিতে সেভাবে দেখা যাচ্ছে না তাঁকে। আবার ওই তালিকা অনুযায়ী মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী হিসেবে পরিচিত কংসাবতী তীরবর্তী এক ব্লকের যুব সভাপতিকে পদ থেকে সরিয়ে গুরুত্বহীন কমিটিতে সদস্য করা হয়েছে। ওই যুব সভাপতি গত কয়েকদিন ধরে দলীয় কর্মসূচিতে যাচ্ছেন না।
পদ নিয়ে সমাজমাধ্যমে নানারকম পোস্টে যে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে তা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর। তাঁর কথায়, ‘‘তালিকা ফাঁস হওয়ার বিষয়টি খুবই দুর্ভাগ্যজনক। এর ফলে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। নেত্রী যে তালিকা ঘোষণা করবেন সেটিই চূড়ান্ত।’’ যদিও জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু বলছেন, ‘‘এ রকম হওয়ার কোনও খবর জানা নেই। পুরোদমে সাংগঠনিক কাজ চলছে। নেত্রীর অনুমোদনের পরে চূড়ান্ত তালিকা ঘোষণা করা হবে।’’
বিধানসভা ভোটের আগে সংগঠনকে ঢেলে সাজতে জেলার ৮টি ব্লক ও শহরের দলীয় সভাপতি ও যুব সভাপতি পদে রদবদল করা হতে পারে। ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের দফতর থেকে সমীক্ষা করে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে প্রস্তাবিত নামের তালিকা জমা দেওয়া হয়। সম্প্রতি জেলার পাঁচ নেতানেত্রীকে কলকাতায় ডেকে পাঠিয়ে প্রশান্ত কিশোরের উপস্থিতিতে তাঁদের মতামত নেন রাজ্য নেতৃত্ব। প্রস্তাবিত তালিকা পিডিএফ করে জেলার পাঁচ নেতা-নেত্রীকে দেওয়া হয়। তালিকায় সংযোজন-বিয়োজন করার হলে জেলা কমিটিতে আলোচনা করে রাজ্যে পাঠাতে বলা হয়। কিন্তু জেলায় আলোচনার আগেই রাজ্যের সেই তালিকা সমাজমাধ্যমে ফাঁস হয়ে যায়।
প্রাথমিক তালিকায় থাকা কয়েকজনের নাম সমাজমাধ্যমে লিখে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন তৃণমূলের জেলা আইটি সেলের আহ্বায়ক সুদীপ্ত চক্রবর্তীও। সুদীপ্ত বলেন, ‘‘ভুল বুঝতে পেরে কয়েক মিনিটের মধ্যে আমি পোস্ট ‘ডিলিট’ করে দিই।’’ সুদীপ্ত জানাচ্ছেন, আইটি সেলের তরফ থেকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নেত্রীর ঘোষণার আগে সেলের কেউ এ ধরনের পোস্ট করবেন না। যাঁরা এখন পোস্ট করছেন, তাঁরা আইটি সেলের কেউ নন।’’ যাঁরা এখন পোস্ট করছেন তাঁরা তো তৃণমূলের কর্মী। সুদীপ্ত মানছেন, সাধারণ কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রতিটি ব্লক ও জেলা নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে।
গোপন কথা থাকছে না গোপন। সব দেখেশুনে বিজেপির জেলা সভাপতি সুখময় শতপথীর মন্তব্য, ‘‘আমাদের আইটি সেল শক্তিশালী। তা দেখে তৃণমূলও আইটি সেল খুলল। এখন সেটাই না ওদের লক্ষ্ণণের শক্তিশেল হয়ে যায়!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন