Mamata Banerjee

মহিলা খেলোয়াড়দের বিয়ের জন্য জোর করা হয় পরিবার থেকেই, চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে সমস্যার সমাধান করলেন মুখ্যমন্ত্রী

রাজশ্রী মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন, অ্যাকাডেমির মেয়েরা এখন খেলা নিয়েই থাকতে চান। এখনই বিয়ে করতে না চাইলেও বাড়ির লোকেরা বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২৫ ০২:৩০
Share:

(বাঁ দিকে) রাজশ্রী হাঁসদা এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

জাতীয় স্তরের রেফারি রাজশ্রী হাঁসদা। তিনি জানান, কম বয়সী মহিলা খেলোয়াড়দের পরিবার থেকে চাপ দেওয়া হয় বিয়ের জন্য। তবে এখনই বিয়ে না করে নিজেদের ভবিষ্যৎকে আরও উজ্জ্বল করতে চান তাঁরা। বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামে আদিবাসী দিবস অনুষ্ঠানের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে পেয়ে এই সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন রাজশ্রী। তা শুনেই মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিলেন চাকরির। সেই সঙ্গে মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিলেন, এখনই যাতে তরুণীদের বিয়ে না হয় সেই বিষয়টি দেখার জন্য।

Advertisement

রাজশ্রী মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন, অ্যাকাডেমির মেয়েরা এখন খেলা নিয়েই থাকতে চান। এখনই বিয়ে করতে না চাইলেও বাড়ির লোকেরা বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন। তা শোনার পরে মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে বলেন, ‘‘আমাদের অ্যাকাডেমির ছেলে-মেয়েরা জাতীয় স্তরে খেলছে। সারা বিশ্বে ভাল ফল করছে। আমার বিশ্বাস, আগামী দিনে অলিম্পিকেও খেলবে। ছোট একটা মেয়ে আমাকে বলছিল বাড়ি থেকে চাপ আসছে বিয়ে দেওয়ার জন্য।’’ তার পরে তিনি নিজেই বলেন, ‘‘এত তাড়াতাড়ি বিয়ে করবে কেন? সে তো নিজের পায়ে দাঁড়াবে। তাড়াতাড়ি বিয়ে দেওয়ার কথাটা ভুলে যান। মেয়েরা নির্ভরশীল নয়, তারা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। পরিবার থেকে শুরু করে বিমান ও দেশ চালাতে পারে। ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার হতে পারে।’’ মমতা আরও বলেন, ‘‘কন্যাশ্রীদের নিয়ে আমি একটা সার্ভে করিয়েছিলাম। দেখা গিয়েছে অনেকেই ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, প্রফেসর হয়েছে। তাই তাড়াতাড়ি বিয়ে দেওয়ার দরকার নেই। ওরা সমাজের মেরুদণ্ড। বাংলা ও দেশকে গড়ে তুলবে।’’

ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর থানার পটুলিয়া গ্রামে বাড়ি রাজশ্রীর। বাড়িতে বাবা, মা ও দিদি, দাদা, ভাই আছেন। চাষবাস করে সংসার চলে। রাজশ্রী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক দিয়েছিলেন নয়াগ্রাম থানার একটি বিদ্যালয় থেকে। বর্তমানে পাঁশকুড়া বনমালী মহাবিদ্যালয়ে শারীরশিক্ষা বিষয়ে স্নাতকোত্তরের তৃতীয় সেমিস্টারের ছাত্রী। স্কুলে পড়ার সময় থেকেই খেলতেন ফুটবল। পরবর্তী কালে রেফারি হওয়ার জন্য কোচিং নিতে শুরু করেছিলেন। চলতি বছরের মে মাসে জাতীয় স্তরের রেফারি হযন তিনি। পুণেতে অনূর্ধ্ব ১৫ (বালক) ফুটবল ম্যাচ ছাড়াও সিনিয়র ন্যাশনাল, সাব জুনিয়র ন্যাশনাল ফুটবল প্রতিযোগিতার রেফারি হয়েছিলেন।

Advertisement

এ দিন কৃতী কন্যা বলেন, ‘‘এই নিয়ে দ্বিতীয় বার দেখা হল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। ২০২১ সালেও তাঁকে জানিয়েছিলাম গোপীবল্লভপুরের অ্যাকাডেমিতে যারা আছে তাদেরকে তাড়াতাড়ি বিয়ে করার জন্য বাড়ি থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। এ বারেও এই সমস্যার কথাও জানিয়েছিলাম। সমস্যা শুনে মুখ্যসচিবকে ডেকে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন অ্যাকাডেমির বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য। শুধু তা-ই নয়, অ্যাকাডেমির খেলোয়াড়দের যাতে তাড়াতাড়ি বিয়ে না হয় তা দেখারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।’’ রাজশ্রীর দাবি, মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন খেলোয়াড়দের সিভিকে চাকরি দেওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement