তৃণমূল ও বিজেপি-র মারামারি, বোমাবাজি

বিজেপির অভিযোগ, রবিবার রাতে কেশিয়াড়িতে তাদের উপর হামলা চালিয়েছে তৃণমূল। যদিও হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে শাসক দল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সবং ও কেশিয়াড়ি শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৮ ১৫:৪১
Share:

তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ, চাপানউতোর চলছে।

Advertisement

সোমবার সকালে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে সবংয়ের বিষ্ণুপুর পঞ্চায়েতের দাসপুর গ্রামে। খবর পেয়ে পৌঁছয় পুলিশ। আটক করা হয় কয়েকজনকে। বাড়ি-বাড়ি তল্লাশিতে উদ্ধার করা কিছু বোমা। বিজেপির অভিযোগ, রবিবার রাতে কেশিয়াড়িতে তাদের উপর হামলা চালিয়েছে তৃণমূল। যদিও হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে শাসক দল।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে প্রচারের প্রস্তুতিতে বিষ্ণুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রার্থী মিঠু মণ্ডল বর্মনের বাড়িতে যান পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপি প্রার্থী আকাশ মাইতি। সঙ্গে ছিলেন বিজেপি কর্মী রবীন বর্মন। একই সময় গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে নিজেদের দলের প্রার্থী বাসন্তী বর্মনকে নিয়ে প্রচার শুরু করেছিল তৃণমূল। পথেই দু’পক্ষ মুখোমুখি হলে তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয়। ঘটনায় জখম হন রবীনবাবু এবং মিঠুর শ্বশুর-সহ দলের তিনজন। একইসঙ্গে জখম হন তৃণমূলের সুমন মণ্ডল। ক্রমেই বাড়তে থাকে দু’পক্ষের জমায়েত। এরপরই শুরু হয় বোমাবাজি। পুলিশ পৌঁছনোর পর ধীরে ধীরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আসে।

Advertisement

বিজেপির পঞ্চায়েত প্রমুখ অজিত মণ্ডল বলেন, “তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান গুরুপদ মান্নার নেতৃত্বে আমাদের কর্মীদের মারধর করা হয়। ওরা (তৃণমূল) পুলিশের সামনে বোমাবাজি করছিল। পুলিশ এসে আমাদের কর্মীদের থানায় নিয়ে যায়।” যদিও হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগ তুলে তৃণমূলের গুরুপদবাবু বলেন, “আমাদের প্রার্থী প্রচার বেরিয়ে বিজেপি প্রার্থীর বাড়ির সামনে যেতেই রবীন বর্মন-সহ বিজেপি কর্মীরা মারধর শুরু করে। ওরা (বিজেপি) বোমাবাজি করেছে। পুলিশ রবীনবাবুর বাড়ি থেকে বোমা পেয়েছে।” যদিও বিজেপি নেতা অজিতবাবুর প্রতিক্রিয়া, “রবীনবাবুকে বাইরে মারধর করার সময় তৃণমূল ওঁর বাড়িতে বোমা রেখে এসেছিল। তার পরে তৃণমূল রবীনবাবুকে ফাঁসিয়েছে।” খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, “একটি সংঘর্ষ ও বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে। কিছু বোমা উদ্ধার করেছি। দু’পক্ষের কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।”

রবিবার বিকেলে কেশিয়াড়ির লালুয়া পঞ্চায়েতের বরাড় এলাকায় দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে বিজেপির প্রচার মিছিল ছিল। বিজেপির অভিযোগ, মিছিল চলাকালীন অতর্কিতে হামলা চালায় তৃণমূলের লোকজন। তাতে জেলা পরিষদ প্রার্থী বীনাপাণি দাসের স্বামী অসীমবাবু আহত হন। গুরুতর আহত হয়েছেন কেশিয়াড়ি উত্তর মণ্ডলের সভাপতি জগন্নাথ বোসের মা মিনতিদেবী। দু’জনকেই মেদিনীপুরে পাঠানো হয়। বিজেপির আরও অভিযোগ, তাদের পাঁচজন কর্মী সমর্থককে তুলে নিয়ে গিয়ে অন্যত্র আটকে রাখা হয়েছিল। এর প্রতিবাদে রাত ৮টা নাগাদ থানা ঘেরাও করে বিজেপি। অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা মারের অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। মারধরের প্রতিবাদে কুলবনি বাজারে বিকেলে পথ অবরোধ করে তারা। বিজেপির উত্তর মণ্ডলের সভাপতি জগন্নাথ বসু বলেন, ‘‘তৃণমূলের হামলায় অনেকেই বাড়ি ছাড়া। লাগাতার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’’ তৃণমূলের কিসান ও ক্ষেত মজুর সংগঠনের মহকুমা সভাপতি ফটিকরঞ্জন পাহাড়ি বিজেপির তোলা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘বিজেপির লোকজন আমাদের চারজনের উপর হামলা চালায়। থানায় অভিযোগ জানিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন