জনশিক্ষা প্রসারের কাজ ঠিক মতো চলছে কি না খতিয়ে দেখতে এ বার কমিটি তৈরি করল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। সম্প্রতি জেলা পরিষদে এক বৈঠকে এই কমিটি তৈরি করা হয়েছে। জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে সমিতির কাজকর্ম নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে। সব ক্ষেত্রে সমিতির কাছে নির্দিষ্ট তথ্যও মিলছিল না। যা দেখে জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ ক্ষোভও প্রকাশ করেন। তারপরই কমিটি তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র বলেন, “জনশিক্ষা প্রসারেও আমরা জোর দিতে চাইছি। সমিতি কোন কোন খাতে টাকা পাচ্ছে, তা দিয়ে কী কাজ হচ্ছে, কোথাও ত্রুটি থাকছে কিনা - এসব খুঁটিয়ে দেখতেই কমিটি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।”
কমিটির চেয়ারপার্সন করা হয়েছে সভাধিপতি উত্তরা সিংহকে। সদস্য সচিব হয়েছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) পাপিয়া ঘোষ রায়চৌধুরী। এ ছাড়াও বিভিন্ন দফতরের প্রতিনিধিদের সদস্য করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের পিছনে অবশ্য একটি যুক্তিও রয়েছে। সম্প্রতি রাজ্য সরকার একটি নির্দেশিকা জারি করে যে, জনশিক্ষা প্রসার ও গ্রন্থাগার পরিষেবা বিভাগের উদ্যোগে রাজ্যের সমস্ত জেলার প্রতিবন্ধী কৃতী ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও সমতুল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কৃতীদের তালিকাও চেয়ে পাঠানো হয় জেলা থেকে। ৮ অক্টোবর সংবর্ধনা দেওয়া হবে। তার জন্য ৪৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করা প্রতিবন্ধী কৃতীদের আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ২১ দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। ২৫ জুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। অর্থাত্ চলতি মাসের ১৬ তারিখ আবেদনপত্র পূরণের শেষ দিন। এ বিষয়ে সমিতি আগে থেকে কোনও পদক্ষেপই করেনি। তাহলে জেলার সমস্ত স্কুলকে তা কি ভাবে জানানো হবে? কি ভাবেই বা ছাত্রছাত্রীরা জানতে পারবেন। অন্য দিকে, জেলায় ক’টি প্রতিবন্ধী স্কুল রয়েছে, সেখানে কত ছাত্রছাত্রী রয়েছে, সেখানকার বর্তমান পরিস্থিতি কী এ বিষয়েও বিস্তারিত তথ্য ছিল না। তাতেই নতুন কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তারই সঙ্গে জেলা স্কুল পরিদর্শকের সহায়তায় সমস্ত স্কুলকে যাতে এই সংবর্ধনার কথা জানানো হয়, এমনকী প্রয়োজনে স্কুলে স্কুলে আবেদনপত্র পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়, সেই সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়। এছড়াও পরবর্তীকালে জেলায় কোথায় সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিবন্ধী স্কুল রয়েছে, সেখানে কতজন পড়াশোনা করে, সব তথ্যও সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষের কথায়, “সরকারি প্রকল্পে প্রতিবন্ধীদের নানা সুবিধে রয়েছে। কিন্তু তথ্য না থাকার ফলে অনেকেই সেই সূযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এবার যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, সে জন্যই এই পদক্ষেপ।”