ফের দাবি নিঃশর্ত মামলা প্রত্যাহার ও চাকরির
Committee meetings

বৈঠকে কমিটির প্রাক্তনীরা

পুলিশের গুলিতে নিহত মাওবাদী ও কমিটির সদস্যদের স্মৃতিতে গ্রামের রাস্তার ধারে শহিদ মিনার তৈরি করেছিল মাওবাদীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২০ ০৫:৫৩
Share:

বিরিহাঁড়ি গ্রামে জমায়েত। নিজস্ব চিত্র

মেদিনীপুর গ্রামীণের চাঁদড়ার পরে ঝাড়গ্রামের বিরিহাঁড়ি। ফের বৈঠক করলেন জনসাধারণের কমিটির প্রাক্তনীরা। দাবিই এক। প্রত্যেকের নামে যে সব মামলা রয়েছে সেগুলি নিঃশর্তভাবে করে নিতে হবে। সঙ্গে চাই সরকারি প্যাকেজ ও চাকরি।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, শুক্রবার ঝাড়গ্রাম ব্লকের বিরিহাঁড়ি গ্রামের মাওবাদীদের শহিদ মিনার চত্বরে কমিটির প্রায় ১৩০ জন প্রাক্তনী বৈঠকে বসেন। মাওবাদী সন্ত্রাস পর্বে বিরিহাঁড়ি ছিল মাওবাদীদের ঘাঁটি। পুলিশের গুলিতে নিহত মাওবাদী ও কমিটির সদস্যদের স্মৃতিতে গ্রামের রাস্তার ধারে শহিদ মিনার তৈরি করেছিল মাওবাদীরা। এখনও সেই মিনার রয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পুরনো দিনের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবেই মিনারগুলি রেখে দিয়েছেন গ্রামবাসীরা। এ দিন জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কমিটির প্রাক্তনীরা বিরিহাঁড়ি গ্রামে জড়ো হন। দীর্ঘ বৈঠক শেষে সংবাদমাধ্যমকে তাঁরা জানান, তাঁরাও সেই সময়ে মাওবাদী ও জনসাধারণের কমিটির আন্দোলনে সক্রিয় ভাবে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁদের অনেকেই কিষেনজি, শশধর, জয়ন্ত ও আকাশের স্কোয়াডে ছিলেন। প্রত্যেকের নামে রাষ্ট্রদ্রোহ, খুন, অপহরণ, নাশকতার একাধিক মামলা রয়েছে। প্রত্যেকেই জেল খেটে এখন জামিনে মুক্ত। কিন্তু বিচারাধীন মামলাগুলিতে হাজিরা দিতে হয়। মামলার খরচ চালাতে কেউ জমি বেচেছেন, কেউ ধারদেনা করে নিঃস্ব হয়েছেন। বেশিরভাগই দিনমজুরি করছেন। সঙ্গীদের কেউ কেউ সরকারি পুনর্বাসন প্যাকেজ ও চাকরি পেলেও তাঁরা কিছুই পাননি বলে দাবি করেন।

এতদিন পরে হঠাৎ কেন আন্দোলনের যাওয়ার কথা বলছেন? ঝাড়গ্রামের বাঁকশোল গ্রামের বছর আঠাশের সমীর পাতর কমিটির আন্দোলনের প্রাক্তনী। সমীর বলেন, ‘‘কমিটির সক্রিয় আন্দোলনে ছিলাম। মামলার খরচ জোগাতে নিঃস্ব হয়ে গিয়েছি। জেলে থাকাকালীন মায়ের মৃত্যু হয়। পুলিশের কাছে আবেদনও করেছিলাম। শুনেছিলাম, আমরাও পুনর্বাসন প্যাকেজ ও চাকরি পাব। কিন্তু এখন জেলা থেকে বলা হচ্ছে ওপর মহল থেকে নির্দেশ না এলে কিছু হবে না।’’ জারুলিয়া গ্রামের সুজয় মাহাতো, বিরিহাঁড়ির চিত্রেশ্বর মাহাতোরাও একাধিক মামলার অভিযুক্ত। তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘অন্যরা প্যাকেজ আর চাকরি পেল। আমরা তাহলে কেন পাব না?’’

Advertisement

কমিটির প্রাক্তনীরা বলছেন, তাঁরা সক্রিয় রাজনীতিতে নেই। তবে ব্যক্তিগত মতাদর্শে কেউ তৃণমূলের সমর্থক, কেউ অন্য দলের সমর্থক। তবে তাঁদের এই আন্দোলন একেবারেই অরাজনৈতিক।

সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে গিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সফর সেরে ৮ অক্টোবর কলকাতায় ফেরেন তিনি। ওই দিনই চাঁদড়ায় মিলিত হয়ে নিজেদের দাবিদাওয়া জানিয়েছিলেন সেখানকার কমিটির প্রাক্তনীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন