প্রশিক্ষণে মৃত কনস্টেবল, ফুঁসছে সালুয়া

মাস খানেক আগে রাজ্যে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ হয়েছে। নবনিযুক্ত কনস্টেবলদের প্রশিক্ষণের জন্য বিভিন্ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। সালুয়ায় ইএফআর-এর এমনই এক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:৩৭
Share:

সরব: সালুয়ায় বিক্ষোভ জমায়েত। নিজস্ব চিত্র

এক পুলিশ কনস্টেবলের মৃত্যু ঘিরে শোরগোল পড়েছে খড়্গপুর গ্রামীণের সালুয়ায়। মৃতের নাম বিজু পাল (২৯)।

Advertisement

ক’দিন ধরেই সালুয়ার ইএফআর ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন রাজ্য পুলিশের নবনিযুক্ত এই কনস্টেবল। ইএফআর সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে দৌড়নোর সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন বিজু। পরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসকেরা জানান, ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তারপরই বিকেলে বিক্ষোভ-পথ অবরোধ শুরু হয় সালুয়ায়। তাতে সামিল হন প্রশিক্ষণরত অন্য কনস্টেবলরা। তাঁদের অভিযোগ, প্রশিক্ষণে কঠোর পরিশ্রম করানো হচ্ছে। কেউ অসুস্থ হলে পড়লে তার ঠিকমতো দেখভালও করা হচ্ছে না। কিছুক্ষণ পরে অবশ্য বিক্ষোভ-পথ অবরোধ উঠে যায়।

মাস খানেক আগে রাজ্যে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ হয়েছে। নবনিযুক্ত কনস্টেবলদের প্রশিক্ষণের জন্য বিভিন্ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। সালুয়ায় ইএফআর-এর এমনই এক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। বছরের নানা সময়ই এখানে পুলিশ কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। একাধিক জেলার নবনিযুক্ত কনস্টেবলদের প্রশিক্ষণের জন্য এখানে পাঠানো হয়েছে। মাস খানেক আগে এই আবাসিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে।

Advertisement

প্রশিক্ষণরত অন্য কনস্টেবলরা জানান, তাঁদের এ দিন ৬ কিলোমিটার দৌড় করানো হয়। সালুয়ায় প্রশিক্ষণ নিতে আসা এক পুলিশ কনস্টেবলের অভিযোগ, “এখানে অত্যধিক পরিশ্রম করানো হচ্ছে। কারও তেষ্টা পেলে জল পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে না। যে খাবার দেওয়া হয়, তার মানও ভাল নয়।’’ ইএফআর অবশ্য এই অভিযোগ মানেনি। ইএফআর-এর বক্তব্য, নিয়মমাফিকই প্রশিক্ষণ হচ্ছে। বাড়তি কড়াকড়ির ব্যাপার নেই।

হাবরা শ্রীচৈতন্য কলেজ থেকে কমার্সের স্নাতক বিজুর বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাকপুলে। বিজুরা দুই ভাই। বড়দা বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। বাবা বিনোদবিহারী চাষবাস করেন। পরিজনেরা জানালেন, একটাই স্বপ্ন ছিল বিজুর, পুলিশ অফিসার হবেন। রাত জেগে পড়াশোনা করতেন। ভোরে উঠে শরীরচর্চা করতেন। অন্য কোনও চাকরির চেষ্টাও করেননি কখনও। গত ১ অগস্ট বাড়ি থেকে ক্যাম্পে এসেছিলেন বিজু। তিনি ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের অধীনে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। সালুয়ায় প্রশিক্ষণ শেষে তাঁর ঝাড়গ্রামে যাওয়ারই কথা ছিল। বিজুর বৌদি শিখা পাল এ দিন বলেন, ‘‘খুব কড়া প্রশিক্ষণ হত। ও প্রশিক্ষণের পরে খুব ক্লান্ত থাকত। ফোনেও বেশি কথা বলতে পারত না।’’

মা মায়া পালের আক্ষেপ, ‘‘অনেক দূর এগিয়ে গিয়েও ছেলেটার পুলিশ অফিসার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হল না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement