সুদুর মুম্বই থেকে টাকা পাঠিয়েছেন সচিন তেন্ডুলকর পশ্চিম মেদিনীপুরের দু’টি স্কুলে। তাঁর সাংসদ তহবিলের টাকায় শুরু হয়েছে নির্মাণ কাজ। কিন্তু আর এক রাজ্যসভার সাংসদের পাঠানো টাকায় স্কুল ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েও থমকে গেল আদালতের নির্দেশে। সৌজন্যে পঞ্চায়েত সমিতির বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়মের অভিযোগ।
পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুর ব্লকের উড়উড়ি জগন্নাথ বিদ্যাপীঠের ভবন নির্মাণের জন্য প্রায় ৩৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছেন রাজ্যসভার সাংসদ যোগেন চৌধুরী। বরাদ্দ অর্থে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ শুরু হয়েছিল। চণ্ডীপুর পঞ্চায়েত সমিতি টেন্ডার ডেকেছিল। দরপত্র জমা দিয়েছিলেন চারজন ঠিকাদার। তাঁদেরই মধ্যে একজন চন্দ্রকান্ত গিরি। তাঁর অভিযোগ চণ্ডীপুর ব্লক প্রশাসনিক ভবনে ওই টেন্ডার পত্র খোলা হয়। তাঁর দরপত্রই সবচেয়ে কম দামের ছিল। কিন্তু সেই দরপত্র অগ্রাহ্য করে পঞ্চায়েত ফের বাকি তিনজন ঠিকারের কাছ থেকে দরপত্র আহ্বান করে।
এর বিরুদ্ধে চন্দ্রকান্তবাবু হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। কলকাতা হাইকোর্ট পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাহী আধিকারিক তথা বিডিওকে ওই টেন্ডার সংক্রান্ত সব নথিপত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এবং আদালতের আদেশ ছাড়া ওই কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
চন্দ্রকান্তবাবুর বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘সরকারি নিয়ম মেনে সবচেয়ে সর্বনিম্ন দরপত্র জমা দিয়েছিলাম। সে কথা আমাকে জানানোও হয়েছিল। কিন্তু পরে নিয়মবহির্ভূতভাবে আমার দরপত্রকে অগ্রাহ্য করে দেয় পঞ্চায়েত সমিতি। বাধ্য হয়েই উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।’’ বেনিয়মের অভিযোগ অবশ্য মানতে চাননি বিডিও বা পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কেউই। সমিতির সভাপতি সঙ্গীতা বর্মন বলেন, ‘‘উড়উড়ি হাইস্কুলের ভবন নির্মাণের ঠিকাদার নিয়োগ নিয়ে পঞ্চায়েত সমিতির বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে বলে জানি। কিন্তু ঠিকাদার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোন অনিয়ম হয়নি।’’
চণ্ডীপুর পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাহী আধিকারিক তথা বিডিও সপ্তর্ষি ঘোষও একই দাবি করেন, ‘‘প্রথমে যে চার ঠিকাদার দরপত্র জমা দিয়েছিলেন তার মধ্যে চন্দ্রকান্তবাবু সবচেয়ে কম দর দিয়েছিলেন। কিন্তু পঞ্চায়েত সমিতির মনে হয়েছিল আরও কম দরে কাজ হতে পারে। তাই সরকারি নিয়ম মেনেই ফের ওই চারজন ঠিকাদারের কাছ থেকে নতুন দর চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছিল।’’ তাঁর দাবি, এ নিয়ে সব নথিপত্র আদালতে জমা দিয়েছেন তাঁরা।