শিবরাত্রির থিমে পুলওয়ামা! বিতর্ক

পুলওয়ামা জঙ্গি হামলায় ৪৪ জন জওয়ানের মৃত্যুর দৃশ্যই ফুটে উঠেছে শিল্পীর ভাবনায়, মাটির মূর্তিতে। খড়্গপুর শহরে খরিদায় ‘মহাবীর আখড়া’ কমিটির শিবরাত্রির আয়োজনেই দেখা যাচ্ছে এই দৃশ্যপট। নিহত জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই এই ভাবনা বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। নিহত জওয়ানদের ছবির সামনে মোমবাতি জ্বালিয়ে চলছে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৯ ০০:৫৫
Share:

হর-গৌরীর সঙ্গে সেনাদের মডেল। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

ভূস্বর্গে বসে রয়েছেন হর-পার্বতী। আর সেখানেই চলছে লড়াই। ভারতমাতার কোলে রক্তাক্ত অবস্থায় ঢলে পড়ছেন বীর সেনারা। মৃত ছেলের দেহ আঁকড়ে ধরে কাঁদছেন নিহত জওয়ানের মা। আর এমন অবস্থাতেও ভয় ভুলে দেশ রক্ষায় নিজের আরেক ছেলেকে যুদ্ধে পাঠাচ্ছেন নিহত জওয়ানের বাবা।

Advertisement

পুলওয়ামা জঙ্গি হামলায় ৪৪ জন জওয়ানের মৃত্যুর দৃশ্যই ফুটে উঠেছে শিল্পীর ভাবনায়, মাটির মূর্তিতে। খড়্গপুর শহরে খরিদায় ‘মহাবীর আখড়া’ কমিটির শিবরাত্রির আয়োজনেই দেখা যাচ্ছে এই দৃশ্যপট। নিহত জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই এই ভাবনা বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। নিহত জওয়ানদের ছবির সামনে মোমবাতি জ্বালিয়ে চলছে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন।

শিবরাত্রির পুজোয় পুলওয়ামা— ভাবনাটা প্রাথমিক ভাবে মন্দিরতলার বাসিন্দা শিল্পী নয়ন পালের। তিনি বলেন, ‘‘আমি প্রতিবছর নতুন নতুন থিমের মূর্তি তৈরি করি। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামার ঘটনা আমাকে নাড়া দিয়েছিল। দিন চারেক পরে এমন মূর্তি গড়ার কথা মাথায় আসে।’’ নয়ন জানালেন, এত কম সময়ে এতগুলি পোশাক, বন্দুক কিনে মূর্তি তৈরিতে খরচ হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। বিষয়বস্তুর আকর্ষণে অনেক উদ্যোক্তা আগ্রহ দেখালেও খরচের জন্য পিছিয়ে যান। শেষে এগিয়ে আসে ‘মহাবীর আখড়া’।

Advertisement

২০০২ সাল থেকে খরিদা বাজারে একটি ক্লাব শিবরাত্রিতে হর-পার্বতীর এই পুজো করত। তবে গত দু’বছর ধরে ‘মহাবীর আখড়া’ কমিটির নামে পুজোর আয়োজন হচ্ছে। এই কমিটি গত দু’বছর ধরে রামনবমীর শোভাযাত্রার আয়োজনও করেছে।

তবে শিবরাত্রির পুজো আয়োজনে পুলওয়ামার দৃশ্য তুলে ধরা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। তৃণমূলের শহর সভাপতি রবিশঙ্কর পাণ্ডে বলেন, “পুলওয়ামার ঘটনা দেশের লজ্জা। এ সব হিংসার থিম পুজোয় না করাই ভাল।” বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি গৌতম ভট্টাচার্যের পাল্টা বক্তব্য, “আমার তো মনে হয় পুজোয় এমন থিম জাতীয়তাবাদী ভাবনায় যুব সমাজকে উৎসাহিত করবে। খুব ভাল উদ্যোগ।”

রাজনৈতিক চাপানউতোরের মধ্যে অবশ্য যাচ্ছেন না উদ্যোক্তারা। পুজো কমিটির সহ-সম্পাদক ধর্মেন্দ্র শাহ বলেন, “আমাদের মহাবীর আখড়ার ১৫ জন সদস্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমর্থক। তাই এই আয়োজনের সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। শিল্পীর ভাবনা আমাদের ভাল লেগেছিল। সেই মতো নিহত জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর আয়োজন করেছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন