Panskura

বোনকে লিভার দানের আগেই করোনায় কাবু দিদি

বড় মেয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে পড়ায় দুই মেয়েকে নিয়ে অথৈ জলে দম্পতি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২০ ০১:২৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

ছোট বোন লিভারের সমস্যায় ভুগছে। বোনকে বাঁচাতে নিজের লিভারের অংশ বিশেষ দান করতে এগিয়ে এসেছিলেন দিদি। সেই মতো ব্যবস্থাও হচ্ছিল। কিন্তু অস্ত্রোপচারের ঠিক আগে জানা গেল, দিদি করোনায় আক্রান্ত।

Advertisement

ছোট মেয়ের লিভার প্রতিস্থাপনে সপরিবার দিল্লি গিয়েছিলেন পাঁশকুড়ার মঙ্গলদ্বারি এলাকার এক দম্পতি। কিন্তু সেখানেই বড় মেয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে পড়ায় দুই মেয়েকে নিয়ে অথৈ জলে ওই দম্পতি।

পেশায় বিমা কর্মী ওই ব্যক্তির বছর তেরোর মেয়ের লিভারের সমস্যা দেখা দেয় গত ৮ ফেব্রুয়ারি। পরদিন তাকে মেদিনীপুর শহরে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতার একটি নার্সিংহোমে। চিকিৎসায় ক্রমশ সুস্থ হয়ে উঠছিল সে। কিন্তু ২১ ফেব্রুয়ারি ফের অবস্থা খারাপ হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে ৬ মার্চ এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে ছোট মেয়েকে নিয়ে দিল্লি পৌঁছে সেখানে একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করেন ওই দম্পতি। চিকিৎসক জানান, মেয়ের লিভার প্রতিস্থাপন করতে হবে। বাবা-মা লিভার দান করতে রাজি হলেও মেয়ের লিভারের সঙ্গে তা মেলেনি। তখন কলেজ পড়ুয়া বড় মেয়েকে দিল্লিতে ডেকে পাঠান ওই দম্পতি।

Advertisement

১৪ মার্চ ট্রেনে দিল্লি পৌঁছন দিদি। চিকিৎসক তাঁকে পরীক্ষা করে জানান দিদির লিভারের অংশ বিশেষ দিয়ে বোনকে সুস্থ করে তোলা যেতে পারে। দম্পতির দাবি, অস্ত্রোপচারের দিনক্ষণ ঠিক হয়ে যাওয়ার পর পরিবারের সকলের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হয়। শুক্রবার রাতে জানা যায় বড় মেয়ে করোনা পজ়িটিভ। বাকিরা নেগেটিভ। এর পর বড় মেয়েকে দিল্লির একটি সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শেষ পর্যন্ত ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একজন ‘ব্রেন ডেথ’ রোগীর লিভার সংগ্রহ করেন ওই দম্পতির ছোট মেয়ের লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, সংগৃহীত ওই লিভারের অবস্থা ভাল না হওয়ায় তা দেওয়া যায়নি ওই দম্পতির ছোট মেয়েকে।

এই মুহূর্তে ছোট মেয়ের সঙ্গে হাসপাতালের আইসিইউতে রয়েছেন মা। বাবা থাকছেন হাসপাতালের অদূরে একটি ভাড়া বাড়িতে। ভিনরাজ্যে চারজনের থাকা-খাওয়ার খরচ, মেয়েদের চিকিৎসার খরচ জোগাড়ে নাজেহাল অবস্থা ওই দম্পতির।

ওই দম্পতির দাবি, ছোট মেয়ের চিকিৎসার জন্য ইতিমধ্যে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। প্রয়োজন আরও অর্থের। অনেকেই ওই পরিবারের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। দ্রুত লিভার প্রতিস্থাপন করতে না পারলে ছোট মেয়েকে কী ভাবে বাঁচানো তা ভেবেই দিশাহারা ওই দম্পতি। পাশাপাশি চিন্তায় রয়েছেন বড় মেয়েকে নিয়েও।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন