মিলছে কম টাকা, দুর্ভোগ ডাকঘরে

পুরনো ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের পর পেরিয়ে গিয়েছে চার মাস। যদিও এখনও টাকা তুলতে গেলেই হাত উল্টোচ্ছে ডাকঘর। প্রয়োজন মতো টাকা না পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন গ্রাহকেরা।

Advertisement

দেবমাল্য বাগচী

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৭ ০০:৫৫
Share:

ভোগান্তি: খড়্গপুর ডাকঘরে দুর্ভোগ গ্রাহকদের। নিজস্ব চিত্র

পুরনো ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের পর পেরিয়ে গিয়েছে চার মাস। যদিও এখনও টাকা তুলতে গেলেই হাত উল্টোচ্ছে ডাকঘর। প্রয়োজন মতো টাকা না পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন গ্রাহকেরা।

Advertisement

চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার টাকা প্রয়োজন ছিল বছর আশির রামপদ শাহর। বয়সের ভারে চলতে না পারলেও কষ্ট করে খড়্গপুর ডাকঘরে এসেছিলেন রামপদবাবু। যদিও ডাকঘর কর্তৃপক্ষ ৬ হাজার টাকার বেশি দিতে রাজি নন। বাধ্য হয়ে সেই টাকা নিয়েই বাড়ি ফিরলেন তিনি। রামপদবাবু বলছিলেন, “একসময়ে শ্রমিকের কাজ করে ডাকঘরে ৩০ হাজার টাকা জমিয়েছিলাম। নিজের চিকিৎসার প্রয়োজনে ১০ হাজার টাকা চেয়েছিলাম। কিন্তু ৩ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও ৬ হাজার টাকার বেশি পেলাম না। এই বয়সে সাত কিলোমিটার পথ পেরিয়ে ফের ডাকঘরে আসতে হবে।”

শুধু রামপদবাবু নন, ডাকঘরে এসে প্রয়োজন মতো টাকা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন অনেকেই। এক গ্রাহকের অভিযোগ, নিজের জমানো টাকাই চেয়ে পাচ্ছি না। ২০ হাজার টাকা চাইলে মিলছে ১০ হাজার টাকা। আর ১০ হাজার টাকা চাইলে পাওয়া যাচ্ছে আরও কম।

Advertisement

অফিসের কাজ সামলে সকালে ডাকঘরে টাকা তুলতে এসেছিলেন বিএসএনএল কর্মী বিহারীলাল দাস। তাঁর কথায়, ‘‘বাড়িতে অনুষ্ঠানের জন্য টাকা প্রয়োজন। রোজ ডাকঘরে এসে লাইন দিলেও চাহিদা মতো
টাকা পাইনি।’’

তিনি বলছেন, ‘‘নিজের টাকা পাওয়ার জন্যই আবেদন করে অপেক্ষা করে থাকতে হচ্ছে। কবে এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাব জানি না।” খড়্গপুরের ঢেকিয়া ডাকঘরের গ্রাহক মিঠু অধিকারীরও বক্তব্য, ‘‘যখনই ডাকঘরে টাকা তুলতে চাই, অর্ধেক টাকা পাই। দিনের পর দিন কেন এমন সমস্যা হচ্ছে বুঝতে পারছি না।”

আরও পড়ুন: সংস্কার হয়নি, শ্রী হারাচ্ছে হেরিটেজ জেলা পরিষদ ভবন

মেদিনীপুর প্রধান ডাকঘরের পোস্টমাস্টার বিকাশকান্তি মিশ্র বলেন, “আগে খড়্গপুর ও ঘাটালের ডাকঘর কর্তৃপক্ষ সরাসরি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই) থেকে টাকা তুলতেন। কিন্তু বিগত দেড় বছর ধরে ওই ডাকঘরগুলি আমাদের থেকে টাকা নিচ্ছে। নভেম্বর মাস পর্যন্ত কোনও অসুবিধা হয়নি। তবে এখন এসবিআই থেকে চাহিদা মতো টাকা না মেলায় অসুবিধা হচ্ছে।”

এ বিষয়ে এসবিআইয়ের মেদিনীপুর শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার শক্তিকুমার ঘোষ বলছেন, “রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই) থেকে চাহিদা মতো টাকা পাচ্ছি না। যে পরিমাণ টাকা মিলছে তা দিয়ে নিজেদের প্রয়োজন মেটানোর পর ডাকঘরগুলিকে দিতে হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘সমস্যার কথা বারবার আরবিআইকে জানিয়েও সুফল পাচ্ছি না। আর কী করব!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন