পুরভোটের আগে নজর পরিষেবায় 

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘রাস্তা, আলো, স্বাস্থ্য, পানীয় জল- সমস্ত কিছুরই দায়িত্ব কিন্তু পুরসভার উপরে বর্তায়।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ডেবরা শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:০৬
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র

সামনের বছর পুরভোট হওয়ার কথা। তার আগে বুধবার ডেবরার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, পুর-পরিষেবায় কোনও খামতি রাখা চলবে না।

Advertisement

পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম জেলাকে নিয়ে ওই বৈঠকের শেষদিকে শুভেন্দুর উদ্দেশে মমতা বলেছিলেন, ‘‘শুভেন্দু, তোমার কিছু বলার আছে বলো?’’ এরপরই পুর-পরিষেবা নিয়ে বলতে শুরু করেন শুভেন্দু। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুরে পুরসভায় প্রশাসক আছেন। পুর-পরিষেবায় কিছু খামতি হচ্ছে। ঝাড়গ্রাম এবং মেদিনীপুরে পুর দফতর থেকে যুগ্ম-প্রশাসকও রাখা আছে। প্রশাসকেরা যেন এঁদের (যুগ্ম- প্রশাসকদের) যুক্ত রেখে কাজ করেন, এটা দেখা দরকার।’’ একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, ‘‘রেল খড়্গপুর পুরসভাকে কাজ করতে বাধা দিচ্ছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই করা হচ্ছে।’’

পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘নির্বাচিত সদস্য থাকলে তাঁরা নিজেদের ওয়ার্ড দেখতে পারেন। যখন তাঁরা থাকেন না, তখন পুরো দায়িত্বটা প্রশাসকের হাতে যায়। প্রশাসক হয়তো ভাবেন, আমি আমার চোখের সামনে যতটুকু দেখছি, আমার রুটিন কাজটা করে দিচ্ছি। রাস্তা, আলো, স্বাস্থ্য, পানীয় জল- সমস্ত কিছুরই দায়িত্ব কিন্তু পুরসভার উপরে বর্তায়।’’ মেদিনীপুর পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান প্রণব বসু মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, প্রশাসক তাঁদের নিয়ে দু’বার বৈঠক করেছেন। মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক দীননারায়ণ ঘোষ জানান, তিনি মাসে একবার করে বৈঠকে বসেন। এরপরে মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘তিরিশ দিনের খাবার কি একদিনে খাওয়া যায়? মানুষের কাছে গালাগালিটা আমি খাচ্ছি। এ বার থেকে রোজ বসবেন।’’

Advertisement

হাওড়ায় প্রশাসনিক বৈঠকেও পুর-পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ পেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। হাওড়া কর্পোরেশনেও সেখানেও এখন প্রশাসক রয়েছেন। সেই প্রসঙ্গে এনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘হাওড়াতেও আমি অভিযোগ পেয়েছি। রাস্তা পরিস্কার হচ্ছে না। আলো জ্বলছে না।’’ পুর আধিকারিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘দেখছো ডেঙ্গির একটা করে ভাইরাস বেরোচ্ছে। চরিত্র পরিবর্তন করছে। পুর-পরিষেবা মানেই ডে-টু-ডে ওয়ার্ক।’’ মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘মনে হচ্ছে, ডিএম-রাও ঠিক মতো মনিটরিং করছেন না।’’ বিল্ডিং প্ল্যান, লাইসেন্স- আবেদন দেখতে জেলাশাসকদের নির্দেশ দেন তিনি। শুভেন্দুর আর্জি ছিল, ঝাড়গ্রামের জেলা পরিষদের সদস্যদের প্রশাসনে গুরুত্ব দিলে ভাল হয়। কারণ, তাঁরা নতুন। সেই প্রেক্ষিতে ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েশা রানিকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, ‘‘কাউন্সেলিং করে নাও। কথা বললেই তো সব হয়।’’

বছর ঘুরলেই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম পুরসভায় ভোট হওয়ার কথা। পরে খড়্গপুর-সহ জেলার বাকি পুরসভাগুলিরও ভোট হবে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, যে পুরসভায় সময়ে ভোট না হয়ে প্রশাসক বসেছে সেখানে পরিষেবা নিয়ে যে ক্ষোভ বাড়ছে সেটা মুখ্যমন্ত্রীর অজানা নয়। সেখানে ভোটের আগে সরকারের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ রাখতেই তাঁর এই বার্তা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন