ফাইল চিত্র।
সংখ্যাটা চারশো ছুঁয়েছিল আগেই। এ বার পশ্চিম মেদিনীপুরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪২৩ জন। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, গত ৬ দিনে নতুন করে আরও ১৫ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁরা সকলেই জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। গত কয়েকদিনে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা যে বেড়েছে তা মানছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা। তাঁর স্বীকারোক্তি, “নতুন করে কয়েকজন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের চিকিত্সার দিকে নজর রাখা হয়েছে।’’ গিরীশবাবুর আরও সংযোজন, “তবে এতে উদ্বেগের কিছু নেই। ডেঙ্গি মোকাবিলার সব রকম চেষ্টা চলছে।’’
জেলার কোন কোন এলাকায় নতুন করে ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে?
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, খড়্গপুর পুর-এলাকা, মেদিনীপুর পুর-এলাকা, খড়্গপুর- ১, কেশপুর ব্লকে নতুন করে ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। মশা নিধনের সব রকম চেষ্টা এবং সচেতনতামূলক কর্মসূচির উপর জোর দেওয়ার দাবি বারবার করছে প্রশাসন। তাও ডেঙ্গির দাপটে রাশ টানা যাচ্ছে কই! গত ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪০৮। ৬ নভেম্বর সংখ্যাটা ৪২৩ ছুঁয়েছে। কেন মশাবাহিত এই রোগের প্রকোপ বাড়ছে জেলায়? জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্র মানছে, মশার বংশবৃদ্ধি সর্বত্র সেই ভাবে ঠেকানো যাচ্ছে না। তাই রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। ওই সূত্রের মতে, দফায় দফায় বৈঠক হচ্ছে, কখনও জেলাস্তরে, কখনও বা ব্লকস্তরে বৈঠক হচ্ছে। তারপরেও জনপ্রতিনিধিদের সকলে সমান গুরুত্ব দিয়ে সচেতনতামূলক প্রচারে নামছেন না। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, “বৈঠকগুলোয় জঞ্জাল এবং জমা জলের বিপদ বোঝানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে এ সব যা দ্রুত পরিষ্কার করা প্রয়োজন। কিন্তু এই সাফাইয়ের কাজ সর্বত্র সমান ভাবে হচ্ছে না। হলে এই পরিস্থিতি হত না।’’ ওই স্বাস্থ্যকর্তার মতে, “এই কাজে জনপ্রতিনিধিদের আরও বেশি করে উদ্যোগী হতে হবে। না হলে ডেঙ্গির প্রকোপ কমবে না।’’
ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ায় জেলার বিভিন্ন এলাকায় আতঙ্কও বেড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্বেগে রয়েছেন। পরিস্থিতি বদলাতে ইতিমধ্যে স্কুল-কলেজেও সচেতনতামূলক প্রচার শুরু হয়েছে। প্রচারে পড়ুয়ারা পথে নামছে। প্রচারের কাজে যুক্ত হয়েছেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরাও। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘গ্রাম-শহরে যত প্রচার হবে ততই ভাল। মানুষ সচেতন না হলে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ কমানো অসম্ভব।’’ পাশাপাশি জমা জল এবং জঞ্জাল সাফাইয়ে আরও তত্পর হওয়ার কথা জানানো হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরার কথায়, “ডেঙ্গি মোকাবিলায় আমরা সকলের সহযোগিতা চাইছি।’’