Dengue

ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্তেই বুদ্ধি বাড়ল পুরসভার

সোমবারই খড়্গপুরের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন জেলার উপ- মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান। বেশ কিছু এলাকায় জমা জলে মশার লার্ভারও খোঁজ মিলেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:৫১
Share:

স্বেচ্ছায়: পঞ্চায়েত বা স্বাস্থ্য দফতরের হুঁশ নেই। তাই স্থানীয় কৃষকই নিজের জমিতে ব্যবহৃত কীটনাশক ছড়িয়ে দিচ্ছেন ডোবায়। উত্তর খাড় এলাকায় মঙ্গলবার। ছবি: শান্তনু বেরা

ডেঙ্গির প্রকোপ ছড়াচ্ছে খড়্গপুরে। খড়্গপুরে অল্প দিনের ব্যবধানে ডেঙ্গিতে দু’জনের মৃত্যু হয়। আক্রান্তও একশো ছুঁইছুঁই। অবশেষে টনক নড়ায় পরিস্থিতি সামলাতে রেলশহরে সোমবার থেকে সাফাই অভিযান শুরু করেছে পুরসভা। শহরবাসীর অবশ্য অভিযোগ, এ তো চোর পালানোর পর বুদ্ধি বাড়ার সামিল। আগে থেকে পুরসভা তৎপর হলে হয়তো শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা এত বাড়ত না।

Advertisement

মঙ্গলবারও শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান হয়। খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “শহরে ৩৫টি ওয়ার্ডের জন্য ৭০ জন করে কর্মী নেওয়া হয়েছে। সকলেই ঠিকাকর্মী। আগামী সাতদিন এই ঠিকাকর্মীরা শহরে সাফাইয়ের কাজ করবেন।” তাঁর কথায়, “দ্রুত আবর্জনা সাফাইয়ের জন্যই পুরসভাকে এই পদক্ষেপ করতে হয়েছে।”

সাফাই অভিযানের দেখভাল করতে পুরপ্রধান নিজেও কয়েকটি এলাকায় যান। প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন। পুরপ্রধান মানছেন, “এ দিন রেল-এলাকার ওয়ার্ড থেকে ৭০-৮০টি ট্রাক্টরে করে আবর্জনা বেরিয়েছে। এত আবর্জনা জমে ছিল।” তাঁর কথায়, “সাফাইয়ের কাজের জন্য রেল ঠিকাদার নিয়োগ করে। রেল এলাকায় ঠিক মতো সাফাই হয় কি না তা রেলের তদন্ত করে দেখা উচিত।” তাঁর বক্তব্য, “ঠিক মতো সাফাই হলে এত আবর্জনা জমে থাকত না।”

Advertisement

ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে অনেকেই ভর্তি রয়েছেন। সংখ্যাটা ৫০-এর কাছাকাছি। প্রতিদিন জ্বর নিয়ে অনেকে হাসপাতালের বহির্বিভাগে আসছেন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “খড়্গপুরের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হয়েছে। এখন পরিচ্ছন্নতার কাজে সবথেকে বেশি জোর দিতে বলা হয়েছে পুরসভাকে। পুরসভা এই কাজে দিয়েছেও।”

সোমবারই খড়্গপুরের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন জেলার উপ- মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান। বেশ কিছু এলাকায় জমা জলে মশার লার্ভারও খোঁজ মিলেছে। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “উদ্বেগের কিছু নেই। কিছু এলাকায় জমা জলে মশার লার্ভা দেখা গিয়েছে। মশা নিধনে ওই সব এলাকায় অভিযান শুরু হয়েছে।।”

ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত দেখে আগেই রেলশহরে সাঁড়াশি অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় পুরসভা। পুর-এলাকাকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। একদিকে খরিদা, ইন্দার মতো এলাকা রয়েছে। আর এক দিকে ঝাপেটাপুর, আয়মা, কৌশল্যার মতো এলাকা রয়েছে। অন্য দিকে গিরি ময়দান, নিমপুরার মতো এলাকা রয়েছে। পুরসভা ঠিক করে, ১২টি ট্রাক্টর ও ৪টি জেসিবি মেশিন ভাড়া করা হবে। সেই মতো ট্রাক্টর-জেসিবি মেশিন ভাড়া করা হয়েছে।

সোমবার থেকে পুরোদমে জমে থাকা নোংরা-আবর্জনা পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে। খড়্গপুরে অল্প দিনের ব্যবধানে ডেঙ্গিতে দু’জনের মৃত্যু হয়। আক্রান্তও একশো ছুঁইছুঁই। পরিস্থিতি দেখে নড়েচড়ে
বসে পুরসভা। শহরবাসীর অভিযোগ, মশাবাহিত রোগের প্রকোপ যে দেখা দিতে পারে তার ইঙ্গিত আগেই মিলেছিল। তবে শুরুতে তেমন গা করেনি পুরসভা। ফলে, শহরে রোগের প্রকোপ বেড়েছে। পুরসভার অবশ্য দাবি, ডেঙ্গি রোধে আগে থেকেই পদক্ষেপ করা হয়েছে। পুরপ্রধান প্রদীপবাবুর কথায়, “শহরের ডেঙ্গিপ্রবণ এলাকাগুলোয় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। মশা-নাশক তেল স্প্রে করার কাজও চলছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement