মেদিনীপুরের ৩ জেলাতেই চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গি। তুলনায় পূর্ব মেদিনীপুরে প্রকোপ কম হলেও পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে ভালই কামড় বসিয়েছে মশাবাহী এই রোগ। পশ্চিম মেদিনীপুরে ৭৪ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। তার মধ্যে ৭০ জনই খড়্গপুর শহরের বাসিন্দা। বাকি ৪ জনের মধ্যে গড়বেতা-৩, কেশপুর, ঘাটাল, পিংলা ব্লকের একজন করে রয়েছেন। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “মাইকে প্রচার, হোর্ডিং, থেকে বাসিন্দাদের নিয়ে পদযাত্রা— সবই
হচ্ছে। খড়্গপুরেও কর্মসূচি হয়েছে।’’
গত বছরই খড়্গপুরে ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দিয়েছিল। শীতেও ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিল। আর এ বার শহরে ডেঙ্গি-সতর্কতা জারি হয়েছে। জেলার মশাবাহিত রোগের নোডাল অফিসার তথা উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধানও মানছেন, “এ বছর এখনই ডেঙ্গি রোগীর সংখ্যা গত বছরের পরিসংখ্যানকে ছাপিয়ে গিয়েছে।”
এ বছর ডেঙ্গির মরসুমের শুরুতে খড়্গপুর পুরসভার স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে সমীক্ষা শুরু করেছিল স্বাস্থ্য দফতর। প্রতি মাসে দু’দফায় সেই সমীক্ষা এখনও চলছে। কিন্তু সমীক্ষকেরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে কার্ড সই করিয়ে আনা ছাড়া কিছুই করছেন না বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় জমা জল, আবর্জনা সাফাই হচ্ছে না নিয়মিত। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ডেঙ্গি নিয়ে ভর্তি ৩নম্বর ওয়ার্ডের শুভম বর্মা, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের রোহিত যাদবরাও বলছেন,“এলাকার চারদিকে জঞ্জাল, নর্দমা রুদ্ধ। মশার উপদ্রবে টেকা দায়। একদিনও পুরসভার কর্মীদের মশা মারার তেল দিতে দেখিনি।” খড়্গপুরেরপুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, ‘‘ডেঙ্গি ঠেকাতে যথাসাধ্য করছি।’’
ঝাড়গ্রামে আবার ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বেশি। গত কয়েক মাসে জেলায় ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়ে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখন ডেঙ্গিও ছড়াচ্ছে। জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে এখনও ডেঙ্গির আইজিএম অ্যালাইজা পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। এই হাসপাতালে ডেঙ্গি সন্দেহে ভর্তি তিনজনের রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও মেদিনীপুর মেডিক্যাল থেকে আসেনি। তবে বছর কুড়ির এক তরুণীর প্লেটলেট সংখ্যা কমে যাওয়ায় তাঁকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ঝাড়গ্রাম শহরে সম্প্রতি জমা জলে ডেঙ্গি মশার লার্ভা পেয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের পতঙ্গবিদরা। যদিও উপ-পুরপ্রধান শিউলি সিংহ বলেন, ‘‘আমরা সাধ্যমতো শহর সাফ রাখছি, মশা মারার কর্মসূচি চলছে। শহরবাসীকেও সচেতন হতে হবে।’’