digha

ছন্দে ফেরার চেষ্টায় দিঘা

গত ২৬ মে ইয়াস আছড়ে পড়ে সব লন্ডভন্ড করে দিয়েছিল। এক সপ্তাহ পরেও সেই ক্ষত দগদগে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দিঘা শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২১ ০৬:৩১
Share:

দিঘা সৈকত এখন। নিজস্ব চিত্র।

জলোচ্ছ্বাসের ধাক্কায় ভেঙেচুরে যাওয়া সরু সুতোর মতো মেরিন ড্রাইভের ধারে বুধবার বিকেলে এক পলকে সমুদ্রের দিকে চেয়ে বসেছিলেন বলরাম মাল আর নিখিল দাস। বলরাম স্থানীয় ভেড়িচাউলি গ্রামের বাসিন্দা। নিখিল বাড়ি চাঁদপুরে। দু’জনেই বলে উঠলেন, ‘‘এখন এই সমুদ্রকে দেখে কে বলবে এক সপ্তাহ আগে কী ভয়াল রূপ ছিল এর। সব কিছু শেষ করে দিয়েছে। কোথায় যাব, কী করব কিছুই জানি না।’’

Advertisement

গত ২৬ মে ইয়াস আছড়ে পড়ে সব লন্ডভন্ড করে দিয়েছিল। এক সপ্তাহ পরেও সেই ক্ষত দগদগে। চারদিকে এখনও মানুষের হাহাকার। সেই সঙ্গে রয়েছে আক্ষেপ। ভেঙে যাওয়া সমুদ্র বাঁধ দেখিয়ে এলাকারই এক বাসিন্দা বলে ওঠেন, ‘‘ভেবেছিলাম বাঁধ তৈরি হলে আর কোনও বিপদ থাকবে না। কিন্তু সেই বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পরে বুঝতে পারলাম বাঁধের কাজে কতটা ফাঁকি ছিল।’’ সমুদ তীরবর্তী গ্রামগুলি থেকে জল কিছুটা সরে গেলেও এখনও শ’য়ে শ’য়ে বাড়ি জলবন্দি। একেবারেই বসবাসের অনুপযুক্ত। তাই ত্রাণশিবিরেই থেকে গিয়েছেন এখনও বহু মানুষ। সেখানে আশ্রয় নেওয়া লছিমপুরের এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘ত্রাণ বলতে এক বেলা ভাত খেয়ে দিন কাটে। বাকিটা শুকনো খাবার চিবিয়েই বেঁচে আছি।’’

রাস্তার ধারে বিদ্যুতের খুঁটিতে অবশ্য আলো ফিরেছে। বালিসাই থেকে তাজপুর যাওয়ার যে মূল রাস্তা, তার একদিকে কালো ত্রিপলের ছাউনি দিয়ে বেশ কয়েকটি পরিবার অস্থায়ী ভাবে দিন কাটাচ্ছে। তাজপুরে সমুদ্র সৈকতের ধারে বেশ কয়েকটি দোকানেই নতুন করে ঘর-সংসার পেতেছে কয়েকটি পরিবার। চারপাশে ইতস্তত চরে বেড়াচ্ছে গরু-ছাগল। তবে গোটা রাস্তাতেই গাড়ির ভিড়। কেউ কেউ প্রকৃতির রুদ্ররূপ চাক্ষুষ করতে এসেছেন। তবে অনেকেই দেখা গেল বিধ্বস্ত এলাকার মানুষদের হাতে শুকনো খাবার তুলে দিচ্ছেন।

Advertisement

উল্টো ছবি সৈকত শহর দিঘায়। একেবারে খাঁ খাঁ গোটা শহর। ওল্ড দিঘায় দু’একটা পানের দোকান খোলা রয়েছে। ওল্ড দিঘা থেকে নিউ দিঘা পর্যন্ত সৈকতের অনেকটাই পরিষ্কার করে ফেলা হয়েছে। ইয়াস আছড়ে পড়ার পর যে সব জায়গা বোল্ডারে ভরে গিয়েছিল, এদিন সেই রাস্তায় অনেকেই হাঁটতে দেখা গেল। তবে সন্ধ্যে নামার আগে স্থানীয় বাসিন্দা এবং পর্যটকদের একাংশকে সৈকতের ধার থেকে সরিয়ে দেয় পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন