ঝালাপালা: সাউন্ড বক্সের শব্দ-তাণ্ডব কলেজ মোড়ের সরস্বতী পুজোয় চেনা ছবি। এ বার অবস্থা বদলায় কিনা, সেটাই দেখার। ফাইল চিত্র
নিষেধাজ্ঞা থাকেই। তবে তা উড়িয়েই ডিজে-র দাপটে কান ঝালাপালা হয় দুর্গাপুজো, কালীপুজোয়। শহর মেদিনীপুরের ছবিটাও আলাদা নয়। বিশেষ করে বিসর্জনের শোভাযাত্রায় ডিজে দৌরাত্ম্যে অস্থির হতে হয় শহরবাসীকে। এ নিয়ে পুলিশের কাছে নালিশও আসে। সরস্বতী পুজোয় ডিজে-র দাপট ঠেকাতে তাই আগাম তৎপর হয়েছে পুলিশ।
কোনও পুজোয় ডিজে বাজানো হলেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, সঙ্গে সঙ্গে মেশিন বাজেয়াপ্ত করা হবে। দিন কয়েক আগে সরস্বতী পুজো উদ্যোক্তাদের নিয়ে এক বৈঠকে এই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, সরস্বতী পুজোর প্রস্তুতি নিয়ে ডাকা ওই বৈঠকে পুজো কমিটিগুলোকে এ নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। পুজো কমিটিগুলোও আশ্বাস দিয়েছে, পুজো কিংবা বিসর্জনের শোভাযাত্রায় ডিজে বাজানো হবে না। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “ডিজে ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কেউ তা করলে পুলিশের তরফে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বৈঠকে পুজো কমিটিগুলোকে এ কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
মেদিনীপুরের মতো জেলা শহরে আগে সে ভাবে ডিজের চল ছিল না। বছর কয়েক হল ছবিটা পাল্টেছে। বিয়ে, পিকনিক, পুজো সবেতেই এখন ডিজে বাজছে। বিশেষ করে পুজোর মরসুমে ডিজে দৌরাত্ম্য কয়েকগুণ বেড়ে যায়। শহরবাসীর বক্তব্য, শব্দবাজি নিয়ে তাও পুলিশি সক্রিয়তা চোখে পড়ে। তবে ডিজে নিয়ে কারও তেমন হেলদোল নেই। অথচ, রাজ্যে ডিজে নিষিদ্ধ। কিন্তু সেই নিষেধ শোনে কে! পুলিশের অবশ্য দাবি, মেদিনীপুরে ডিজের বিরুদ্ধেও অভিযান হয়। ডিজে মেশিন বাজেয়াপ্ত করা হয়। তবে গত দুর্গাপুজোতেও শহরের বিভিন্ন এলাকায় ডিজের দৌরাত্ম্য ছিল। মণ্ডপে দাপট কিছুটা কম হলেও বিসর্জনের শোভাযাত্রায় ডিজে-দাপট সপ্তমে চড়ে, সঙ্গে সমান তালে উদ্দাম নাচ।
শহরের কলেজ মোড়ের সরস্বতী পুজোয় আবার সাউন্ড বক্স বাজানোর চল রয়েছে। সেই শব্দ-তাণ্ডবে পুজোর তাল কাটে। সরস্বতী পুজোর সময় এই এলাকায় কানে হাত চাপা দিয়ে যাতায়ায় করতে হয়। এ বার পুলিশের আশ্বাস, শুধু ডিজে নয়, বড় আকারের সাউন্ড বক্স বাজানো হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কলেজ মোড়ের একটি সরস্বতী পুজোর উদ্যোক্তা বুদ্ধ মণ্ডল অবশ্য বলেন, “আমরা বরাবর শব্দদূষণের বিরুদ্ধে। এখানকার পুজো সত্যিই অন্য রকম। কত মানুষ আসেন। বিকট শব্দে সাউন্ড বক্স বাজলে অনেকেরই সমস্যা হয়।’’ শহরের বাসিন্দা সোমা দাসের কথায়, “আনন্দের উত্সবে এ সব অত্যাচার। ডিজের শব্দে কান ঝালাপালা করে। অসুস্থ বোধ করি।’’
তারস্বরে মাইক বাজানো হবে না বলে বৈঠকে আশ্বাস দিয়েছে পুজো কমিটিগুলো। নজরদারির ব্যবস্থাও রাখছে পুলিশ। জেলা পুলিশের এক কর্তার আশ্বাস, “ডিজে, সাউন্ড বক্স যাতে জোরে না বাজে, সেই দিকে নজর রাখা হচ্ছে। কোনও রকম উচ্ছৃঙ্খলাই বরদাস্ত করা হবে না।’’