Garbeta

ঘুরতে এসে রক্ত দিলেন পর্যটকেরা

গড়বেতার গনগনির পর্যটন স্থলে রবিবাসরীয় বনভোজন ও ভ্রমণে ছিল রক্তদান শিবিরের আয়োজন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গড়বেতা শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২০ ০০:২৮
Share:

ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হল রক্তদাতাদের। নিজস্ব চিত্র।

ঘোষণা শুনেই কান পেতেছিলেন বনশ্রী দত্ত। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থেকে সপরিবার ঘুরতে এসেছিলেন। বনভোজনের জায়গায় রক্তদানের আসর! মাইকে ঘোষণা শুনে আগ্রহী হন। তার পর শিবিরে গিয়ে রক্ত দেন। রক্ত দিয়েছেন পুরুলিয়ার কার্তিক মান্ডিও। তিনিও ‘বাংলার গ্র‍্যান্ড ক্যানিয়ন’এ ঘুরতে এসেছিলেন।

Advertisement

গড়বেতার গনগনির পর্যটন স্থলে রবিবাসরীয় বনভোজন ও ভ্রমণে ছিল রক্তদান শিবিরের আয়োজন। স্থানীয় মোলডাঙা শ্যামা সেবায়তন এই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছিল। গনগনিতে ঘুরতে ও বনভোজন করতে আসা পর্যটকদের রক্তদান করার আহ্বান জানাচ্ছিলেন উদ্যোক্তারা। তাতে সাড়া দেন শতাধিক পর্যটক। শিবিরের অতিথি ছিলেন চন্দ্রকোনা রোড বিট হাউসের আইসি হেমন্ত পাত্র। তিনিও রক্ত দিয়েছেন।

শহিদ ক্ষুদিরাম বসুর জন্মমাস স্মরণে শিবিরের আয়োজন করে সংস্থাটি। এবারের শিবির চার বছরে পড়ল। করোনা পরিস্থিতিতে আয়োজন কতটা সাড়া ফেলবে তা নিয়ে সংশয়ে ছিলেন উদ্যোক্তারা। জাঁকিয়ে শীত পড়তে গনগনিতে এদিন সকাল থেকেই ঘুরতে আসা লোকজনের সংখ্যা বাড়তে থাকে। তৎপরতা বাড়ে আয়োজকদের। মাইকে বারবার ঘোষণায় শিবিরে ভিড় জমান বনভোজনে আসা বহু মানুষ। পুরুলিয়া থেকে বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে গনগনি বেড়াতে এসেছিলেন কার্তিক মান্ডি। তিনি বলেন, ‘‘বেড়ানোর জায়গায় বনভোজন, সঙ্গে রক্তদান শিবিরের আয়োজন, এটা খুব ভাল উদ্যোগ। তাই শিবিরে এসে রক্ত দিলাম।’’ বিষ্ণুপুরের বনশ্রী দত্ত রক্ত দিয়ে বলেন, ‘‘গনগনিতে বেড়াতে এসে বনভোজনে রক্তদানের খবর পেয়েই রক্ত দিই। মোবাইলে ছবি তুলেও রাখি।’’ চন্দ্রকোনা রোডের কৃষ্ণ চালক, পুরঞ্জয় কুণ্ডুরা বনভোজনে এসে রক্ত দান করে খুশি। সারা দিনে সবমিলিয়ে রক্ত দেন ১২০ জন।

Advertisement

এ বিষয়ে শ্যামা সেবায়তনের কর্ণধার সুনীল পাড়ুই বলেন, ‘‘এবার রক্তের সঙ্কট বেশি। তাই দু’টি ব্লাড ব্যাঙ্কের দলকে আনা হয়েছিল, আগ্রহীরা শিবিরে এসে লাইন দিয়ে রক্ত দিয়ে যান।’’ শিবিরে এসেছিলেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাইচন্দ্র মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘বনভোজনের মতো আনন্দ অনুষ্ঠানেও রক্তদান শিবিরের আয়োজন প্রশংসনীয়। এভাবে মানুষ যত সচেতন হবেন, ততই কাটবে রক্তের সঙ্কট। সচেতনতা বাড়ছে বলেই বিয়ের আসরে, ঘরোয়া অনুষ্ঠানে এখন রক্তদান শিবির হচ্ছে।’’ রক্তদান শিবিরের সঙ্গে করোনা ও থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা নিয়ে আলোচনাও হয়।

রক্তদাতা অতিথিদের আপ্যায়নের ব্যবস্থাও রেখেছিলেন উদ্যোক্তারা। সাদা ভাত, সঙ্গে পাঁঠার ও মুরগির ঝোল। ছিল বাঁধাকপির তরকারি, চাটনি, মিষ্টি। রক্তদাতাদের কেউ কেউ খেয়েছেন। কেউ উদ্যোক্তাদের ফোন নম্বর দিয়ে বলে গেলেন, ‘‘পরের

বার শিবিরের আগে একটু ফোন করবেন প্লিজ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন