বেহাল: আবর্জনায় প্রায় বুজে গিয়েছে নিকাশি নালা। নিজস্ব চিত্র
খালের জমি জবরদখল করে অবৈধ নির্মাণে থমকে যেতে বসেছে নিকাশি। পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুর বাজার এলাকায় মজে যাওয়া নালার কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই জমা জলে দুর্ভোগে পড়তে হয় স্থানীয়দের। বর্ষায় জমির জল মূল নিকাশিতে বেরোতে না পারায় গত পাঁচ বছর ধরে আমন ধান চাষ করতে পারছেন না চাষিরা।
কলকাতা-দিঘা সড়কে অন্যতম একটি জনবহুল এলাকা হল চণ্ডীপুর বাজার। কাছেই রয়েছে চণ্ডীপুর থেকে নন্দীগ্রামগামী রাজ্য সড়ক। বিডিও অফিস। চণ্ডীপুর ছাড়াও ভগবানপুর, নন্দীগ্রাম, খেজুরির যোগাযোগ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে এই বাজার। প্রায় দু’হাজার দোকান ছাড়াও গড়ে উঠেছে বহু বাড়ি, অফিস, ব্যাঙ্কের শাখা অফিস, হোটেল, নার্সিংহোম। বাজারের কাছে দিঘা-কলকাতা সড়ক সংলগ্ন নিকাশি খালের জায়গা দখল করে বহু দোকান, বাড়ি তৈরির ফলে এলাকার জল নিকাশির পথ ক্রমশ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বছর দু’য়েক আগে খালের উত্তর দিকে বাইপাস তৈরির পর দখলের গতি আরও বেড়েছে। খালের জায়গা দখল করে দোকান, বাড়ি, নার্সিংহোম তো আছেই—আস্ত এক মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরি করেছে খোদ পঞ্চায়েত সমিতিই।
নরঘাটের কাছে হলদি নদী থেকে চণ্ডীপুর বাজার হয়ে গড়গ্রাম কাঠপুল পর্যন্ত দিঘা-কলকাতা সড়কের পাশে রয়েছে এই মগরাজপুর খাল।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, নিকাশি খাল এখন নালায় পরিণত হয়েছে। তাতে প্লাস্টিক, আবর্জনাও ফেলা হচ্ছে। কয়েক বছর আগে সেচ দফতর মজে যাওয়া খাল সংস্কারে উদ্যোগী হলেও জবরদখলের জেরে মাটি কাটার যন্ত্র নামাতে পারেনি। ফলে এই এলাকায় খাল সংস্কার হয়নি। বর্ষায় খালের নোংরা জল উঠে রাস্তায় জমে যায়। বিপাকে পড়েন চণ্ডীপুর, বৃন্দাবনপুর, চিন্তামণিপুর, দামোদরপুর, কাণ্ডপশরা গ্রামের চাষিরা। বৃন্দাবনপুরের চাষি মুরারি জানার অভিযোগ, ‘‘বর্ষায় চাষ জমিতে এক কোমর জল জমে থাকে। পাঁচ বছর ধরে আমন ধানের চাষ করতে পারছি না। এ নিয়ে পঞ্চায়েত, বিডিও অফিসে জানিয়ে লাভ হয়নি।’’
এই সমস্যার কথা স্বীকার করে চণ্ডীপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সঙ্গীতা বর্মন মাইতি বলেন, ‘‘সেচ দফতর কয়েক বছর আগে খালটি সংস্কার শুরু করেছিল। তবে বাজারের কাছে খালের সংস্কার করা যায়নি। বাজারের কাছে খাল সংস্কার করতে সম্প্রতি সেচ দফতরের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। নিকাশি খালের উপর বেআইনি নির্মাণ সরাতে সেচ দফতর ব্যবস্থা নিলে সাহায্য করা হবে।’’