দিঘায় ই-বাইক।
দিঘায় বেড়াতে এসেছেন। মন চাইছে শুধু সুমদ্রের কাছে নয়, একটু এদিক ওদিকও ঘুরে আসতে। সে জন্য ভাড়ার গাড়ি থেকে রিকশা, ভ্যানো বা টোটো থাকলেও স্বাদ বদলাতে একটু অন্যরকম অনেকেই চান। আর তেমন পর্যটকের কথা ভেবেই দিঘায় চালু হল ই-বাইক। ব্যাটারিচালিত এই বাইকে চড়ে দিঘা, তালসারি, চন্দনেশ্বর, মন্দারমনি এমনকী তাজপুরেও ঘুরে আসতে পারেন। মঙ্গলবার সৈকত উৎসবের শেষ দিনে পর্যটকদের জন্য এমনই উপহারের কথা জানাল দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ (ডিএসডিএ)-এর। ডিএসডিএ-র উদ্যোগে একটি বেসরকারি সংস্থার হাত ধরে এ দিন থেকেই পর্যটকদের জন্য এই পরিষেবা চালু হয়েছে।
ডিএসডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাদের সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে ‘বেওয়েজ ট্যুরিস্ট সার্ভিস’ নামে এক সংস্থা ই-বাইক পরিষেবা দিচ্ছে। ওই সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, পর্যটকরা ঘণ্টা প্রতি ভাড়ায় কিংবা সারাদিনের চুক্তিতে ওই বাইক পাবেন। এর জন্য ওল্ড দিঘায় সংস্থার দিঘা শাখার অফিস খোলা হয়েছে। শাখার আধিকারিক নিত্যানন্দ মাইতির দাবি, “পূর্ব ভারতে ভাড়ার মাধ্যমে ই-বাইক পরিষেবা এই প্রথম। দিঘায় বছরভর প্রচুর পর্যটক আসেন। সে কথা মাথায় রেখে দিঘাতেই প্রথম এটা চালু করা হল।’’ তিনি জানান, পরিবেশবান্ধব বাইকগুলি ব্যাটারির সাহায্যে চালে। চাইলে কেউ ভাড়া নিয়ে ঘুরে আসতে পরেন মন্দারমনি, তাজপুর, শঙ্করপুর-সহ অন্যত্র। সংস্থার মন্দারমনি শাখা অফিস চালু হচ্ছে দাদনপাত্রবাড়ে। নিত্যানন্দবাবু জানান, ২৩ ডিসেম্বর থেকে পরীক্ষামূলক ভাবে এই পরিষেবা চালু হয়েছিল। তাতে দারুণ সাড়া মেলায় নিয়মিত এই পরিষেবা চালু করা হল।
কী ভাবে মিলবে এই পরিষেবা?
সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, ওল্ড দিঘার অফিসে এসে পর্যটকেরা আধার কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স জমা দিলে ভাড়ায় এই বাইক নিতে পারবেন। যদিও এ ধরনের বাইক চালানোর ক্ষেত্রে ড্রাইভিং লাইসেন্স জরুরি নয় জানালে তাদের বক্তব্য, সে ক্ষেত্রে আধার কার্ড জমা দিয়ে কেউ বাইক নিতে পারেন। তা ছাড়া দিঘায় পৌঁছনোর আগেও বাইক বুকিং করা যাবে। দফতরে ফোন করে বা এই সংস্থার মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে। ঘণ্টাপ্রতি ভাড়া ৬০ টাকা। আর ২৪ ঘণ্টার জন্য ৯০০ টাকা। বাইক নিয়ে কোনও পথ দুর্ঘটনায় পড়লে চিন্তার কারণ নেই। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, তার জন্য তাদের পক্ষ থেকে থাকছে বিমার ব্যাবস্থা। আর প্রতিটি বাইকে লাগানো রয়েছে জিপিএস ব্যবস্থা। তাই কেউ বাইক নিয়ে পালাতে পারবেন না।
সারা বছরই দিঘায় পর্যটকের আনাগোনা থাকায় গাড়ির চাপ বেশি থাকে। মরসুমে বা টানা কয়েকদিন ছুটি থাকলে তা আরও বাড়ে। তা ছাড়া রয়েছে, শয়ে শয়ে রিকশা, ভ্যানো এবং টোটো। তার উপর এই ধরনের বাইক চালু হলে যানজট আরও বাড়বে না? এ বিষয়ে ডিএসডিএ-র এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সে কথায় মাথায় রেখেই দিঘায় যান নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি গাড়ি পার্কিং নিয়েও মাস্টার প্ল্যান তৈরি হচ্ছে।’’
তবে যাঁদের জন্য এই পরিষেবা তাঁরা কী বলছেন?
মঙ্গলবার প্রথম দিনই তিন ঘণ্টার জন্য ই-বাইক ভাড়া নিয়েছিলেন বেহালা থেকে আসা তপন গোস্বামী। তাঁর কথায়, ‘‘কোনও অসুবিধা নেই। ছোটেও বেশ জোরে। দারুণ লাগল।’’