চন্দ্রকোনায় শাল জঙ্গলে হবে ইকো-ট্যুরিজম পার্ক

শীতকালে ভিড় জমে দেদার। পিকনিকের ভিড়ে ব্যবসাও হয় মরসুমে। কিন্তু তেমন পরিকাঠামো ছিল না কোনও দিন। স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করছিলেন চন্দ্রকোনা শহর ঘেঁষা রামগড়-লালগড়ের জঙ্গলে পর্যটন উপযোগী পরিকাঠামো গড়ে তোলার। অবশেষে পূরণ হতে চলেছে সেই দাবি। জঙ্গলের সৌন্দর্যায়ন করে সেখানে একটি ইকো ট্যুরিজম পার্ক গড়ার জন্য সাংসদ তহবিলের টাকা থেকে ২৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছেন অপরূপা পোদ্দার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৫ ০১:২৬
Share:

খুদেদের দিয়েই পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করালেন মহকুমাশাসক। নিজস্ব চিত্র।

শীতকালে ভিড় জমে দেদার। পিকনিকের ভিড়ে ব্যবসাও হয় মরসুমে। কিন্তু তেমন পরিকাঠামো ছিল না কোনও দিন। স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করছিলেন চন্দ্রকোনা শহর ঘেঁষা রামগড়-লালগড়ের জঙ্গলে পর্যটন উপযোগী পরিকাঠামো গড়ে তোলার।
অবশেষে পূরণ হতে চলেছে সেই দাবি। জঙ্গলের সৌন্দর্যায়ন করে সেখানে একটি ইকো ট্যুরিজম পার্ক গড়ার জন্য সাংসদ তহবিলের টাকা থেকে ২৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছেন অপরূপা পোদ্দার। বৃহস্পতিবার ইকো ট্যুরিজম পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন ঘাটালের মহকুমাশাসক রাজনবীর সিংহ কাপুর। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিডিও গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্য, জেলা পরিষদের সদস্য জগজিৎ সরকার, হীরালাল ঘোষ, অতিরিক্ত ডিএফও (খড়্গপুর) দীপক কুমার মণ্ডল।
পশ্চিম মেদিনীপুরের মন্দিরময় চন্দ্রকোনা বাহান্ন বাজার তিপান্ন গলির শহর বলে পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরেই রাজা চন্দ্রকেতুর এই শহটিকে পযর্টন মানচিত্রে ঠাঁই দেওয়ার জন্য এলাকার মানুষ লড়াই চালিয়েছেন। কিন্তু তেমন সাফল্য আসেনি। তারই মধ্যে শহর ঘেঁষা কুঁয়াপুর পঞ্চায়েতের ধানকুড়িয়া বিটের অধীন লালগড়-রামগড় মৌজায় ইকো ট্যুরিজিম পার্কের কাজ শুরু হওয়ায় খুশি ‌চন্দ্রকোনা-সহ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা।
এলাকাটি খড়্গপুর সামাজিক বনসৃজন দফতরের অধীনস্থ। লালগড়ে গভীর শালের জঙ্গলের ভিতর রয়েছে বড় একটি দিঘি। ওই দিঘিতেই জড়ো হয় দলমা দামালরা। লালগড়-রামগড়ের প্রাকৃতিক পরিবেশ সব সময়ই পর্যটকদের আকৃষ্ট করেছে। ফলে পিকনিক মরসুমে কলকাতা থেকেও বহু পযর্টক ওই আসেন। তখন এলাকার মানুষ অস্থায়ী দোকান করেন। ভাল আয়ও হয়। তাই সরকারি উদ্যোগে পরিকাঠামো তৈরির জন্য আবেদন জানিয়ে আসছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। উদ্যোগী হয় প্রশাসনও। বছর খানেক আগে থেকেই চন্দ্রকোনা ২ পঞ্চায়েত সমিতির পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু করে। পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রের খবর, এখন প্রায় ২৫০ একর জমি নিয়ে একটি পার্ক এবং ডিয়ার পার্ক তৈরি করার প্রস্ততি নেওয়া হয়েছে। বন দফতরের সহযোগিতায় প্রাথমিক ভাবে একাধিক পাম্প হাউস, পানীয় জলের ট্যাপ তৈরি করা হবে। বিভিন্ন ফুল ও ফলের গাছও লাগানো হবে। ছোট ছোট বসার জায়গা, একাধিক গেস্ট হাউস তৈরি কথাও রয়েছে।

Advertisement

মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘জঙ্গলের ভিতরে দিঘির সংস্কার করা হবে। পর্যাপ্ত শৌচাগার, আলোর ব্যবস্থাও হবে। ঘাটালে আমার মেয়াদ প্রায় ফুরিয়ে এসেছে। তার আগেই যে প্রকল্পের উদ্বোধন হল, এতে আমি খুশি।’’ জঙ্গলের ভিতরে এক রাত কাটানোর উপযোগি পরিকাঠামো তৈরি করছে প্রশাসন। চন্দ্রকোনায় পাঁচ-ছ’শো বছরের শতাধিক টেরাকোটার মন্দির, অস্থল, ব্রিটিশ আমলে ফাঁসি দেওয়ার জায়গা (ফাঁসিডাঙা) বলে পরিচিত ওই স্থলও ঘুরে দেখতে পারেন পযর্টকেরা। চন্দ্রকোনা শহরে এখনও বাহান্ন বাজার তিপান্ন গলির অস্তিত্ব রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন