কমিশনে নালিশ জানিয়েও কাজ হয়নি, দাবি

অবাধ ভোটের লক্ষে ‘সমাধান’ অ্যাপস চালু করেছে নির্বাচন কমিশন। ভোটে কোনও অশান্তির খবর মিললেই অনলাইনে এই অ্যাপসের মাধ্যমে তা আপলোড করে দেওয়া যাবে। যদিও বিরোধীদের অভিযোগ, ওই অ্যাপে শাসকদলের বিরুদ্ধে অত্যাচার চালানোর অভিযোগ জানিয়েও সুফল মিলছে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৬ ০১:০৬
Share:

অবাধ ভোটের লক্ষে ‘সমাধান’ অ্যাপস চালু করেছে নির্বাচন কমিশন। ভোটে কোনও অশান্তির খবর মিললেই অনলাইনে এই অ্যাপসের মাধ্যমে তা আপলোড করে দেওয়া যাবে। যদিও বিরোধীদের অভিযোগ, ওই অ্যাপে শাসকদলের বিরুদ্ধে অত্যাচার চালানোর অভিযোগ জানিয়েও সুফল মিলছে না।

Advertisement

সিপিএমের ঘাটাল জোনাল কমিটির সম্পাদক উত্তম মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘প্রকাশ্যে বাইক বাহিনীর দাপট, ভোটারদের ভয় দেখানো সবই চলছে। অনলাইনে ঘটনাগুলির তথ্য দিয়ে অভিযোগও করা হয়েছে। কিন্তু কার্যত কোনও সুফলই মেলেনি।” যদিও ঘাটালের রিটার্নিং অফিসার তথা মহকুমাশাসক পিনাকীরঞ্জন প্রধান বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েই তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। এখনও হচ্ছে।”

সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পর থেকেই বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থকদের মারধর, হুমকি, দেওয়াল লিখন মুছে দেওয়ার ঘটনা ঘটেই চলেছে। অনুমতি নিয়ে দেওয়াল লিখতে গিয়ে দলের কর্মীরা ঘাটালের কুঠিঘাটে শাসকদলের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন। এমনকী, দলীয় মুখপত্র বিলি করার সময় নলগেড়িয়ায় এক কর্মীকেও মারধর করা হয়। উত্তমবাবু বলেন, ‘‘রবিবার জলসরায় দলের লোকাল কার্যালয়ে তৃণমূল কর্মীরা দলের পতাকা টাঙিয়ে দিয়ে যায়। ঘটনায় ছবি-সহ নির্বাচন কমিশনের অ্যাপে অভিযোগ জানানো হয়েছে। যদিও তারপরেও কোনও লাভ হয়নি।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, বাম প্রার্থীর হয়ে প্রচার করলেই জরিমানার ফতোয়াও দেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

বাম নেতৃত্বের অভিযোগ, এ বার ভোট প্রচারে ভাল সাড়া মিলছে। সাধারণ মানুষ মিছিলে হাঁটছেন। তাই দেখে ভয় পেয়েই শাসকদলের কর্মীরা মানুষকে হুমকি দেওয়া শুরু করেছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিরোধীদের প্রচার রুখতেই এই ব্যবস্থা। দু’একদিন দেখে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারিও দিচ্ছেন নেতৃত্ব।

সিপিএমের অভিযোগ, গত শনিবার ঘাটালের শোলাগেড়িয়া ও নলগেড়িয়া এলাকায় দলীয় পাতাকা টাঙাতে গিয়ে তৃণমূলের হাতে আক্রান্ত হয়েছিলেন দলের একাধিক কর্মী। ঘটনায় অভিযুক্ত কর্মীদের নাম দিয়ে ঘাটাল থানায় এফআইআরও করা হয়েছে। অনলাইনে নির্বাচন কমিশনেও অভিযোগ জানানো হয়। তারপরেও অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে ঘুরছে। পুলিশ তদন্ত শুরুই করেনি। ঘাটালের মহকুমাশাসক পিনাকীরঞ্জনবাবু অবশ্য বলেন, “ওই ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। রবিবারই ওই সব গ্রামে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যরা রুট-মার্চ করেছে। ওখানে আমি নিজেও গিয়েছিলাম। পুলিশের ডিএসপি (ক্রাইম) পরাগ ঘোষ-সহ অন্য পুলিশ আধিকারিকরাও ছিলেন।” তাঁর বক্তব্য, ‘‘সব অভিযোগের ক্ষেত্রেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তদন্ত শেষের পথে।”

ঘাটালের কুঠিঘাট, শোলাগেড়িয়া, ইড়পালা, মনসুকা, কামারডাঙা, বলরামগড়-সহ কয়েকটি জায়গায় স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প বসানোর দাবি জানিয়েছে কংগ্রেস ও সিপিএম দু’দলই। কংগ্রেস নেতা জগন্নাথ গোস্বামী, সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোক সাঁতরার অভিযোগ, ‘‘সন্ধ্যা নামলেই ওই সব এলাকায় শাসকদলের লোকেরা বাইক নিয়ে ঘোরাফেরা করছে। ওঁরা সাধারণ মানুষদের ভোট দিতে যেতে নিষেধও করছে।’’ তাঁদের আরও অভিযোগ, ‘‘বুথে বুথে গিয়ে ভোট মিটলেই ‘দেখ নেব’ বলে হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। তাই পুলিশি টহলের পাশাপাশি ওই সব এলাকায় পুলিশ ক্যাম্প বসানোরও দাবি জানিয়েছি।’’ ঘাটালের বিডিও সঞ্জয় পণ্ডিত বলেন, ‘‘সোমবার থেকেই ওই সব গ্রামে টহল শুরু হয়েছে। পুলিশ ক্যাম্পও বসানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন