বকেয়া মাত্র ৩ টাকা, স্কুলের সংযোগ কাটল বিদ্যুত্ দফতর

প্রধান  শিক্ষকের অভিযোগ, ‘‘এটা প্রথম নয়। আগেও এই বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন  করা হয়েছিল। যদি নিয়ম মেনে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হয়, তবে তার অর্ডার কোথায় ?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৮ ০২:১২
Share:

ফাইল চিত্র।

বকেয়া মাত্র তিন টাকা। তাতেই বিদ্যৎ দফতরের ‘কোপে’ পড়ল স্কুল। তার জেরে প্রধান শিক্ষককে না জানিয়েই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দিল কাঁথির বিদ্যুৎ দফতর। কাঁথির চন্দ্রামণি ব্রাহ্ম বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই ঘটনায় বিদ্যুৎ দফতরের ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ স্কুলের শিক্ষক এবং অভিভাবকেরা।

Advertisement

স্কুলসূত্রে জানা গিয়েছে, গত সোমবার বিদ্যুৎ দফতরের লোকজন এসে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে এমন ঘটনায় দুর্ভোগে পড়ে পড়ুয়া থেকে শিক্ষক সকলেই। মঙ্গলবার গরমের মধ্যেই স্কুলে ক্লাস হয়। ওই দিনই প্রধান শিক্ষক দেবাশিস আচার্য ও সহ শিক্ষক তরুণ মহাপাত্র বিদ্যুৎ দফতরে যান। বিদ্যালয় কতৃপক্ষের দাবি, দফতরের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার শান্তনু মাইতি জানান, নিয়ম মেনেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। বুধবার ক্লাস শুরু হলে গরমে কয়েকজন পড়ুয়া অসুস্থ হয়ে পড়ে। তবে এদিনই স্কুলের বিদ্যুৎ সংযোগ জুড়ে দিয়ে যান দফতরের কর্মীরা। কিন্তু সামান্য বকেয়া টাকার জন্য এমন হয়রানি মানতে পারছেন না শিক্ষক থেকে অভিভাবক সকলেই। শুধু এই ঘটনাই নয়, ভুতুড়ে বিল নিয়েও বিদ্যুৎ দফতরের বিরুদ্ধে খামখেয়ালিপনার অভিযোগ তুলেছেন বহু গ্রাহক।

প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ, ‘‘এটা প্রথম নয়। আগেও এই বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল। যদি নিয়ম মেনে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হয়, তবে তার অর্ডার কোথায় ? কেন তা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়নি? বিল মেটানোর পরেও কেন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হল?’’ স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিদ্যুৎ দফতরের ডিজিট্যাল পেমেন্ট মেশিনের মাধ্যমে টাকা জমা দেওয়া হয়েছে। সেখানে সব সময় রাউন্ড ফিগারে টাকা নেওয়া হয়। অৰ্থাৎ ২৫১ টাকা বিল হলে জমা নেওয়া হয় ২৫০ টাকা। আবার ২৪৯ টাকা বিল হলে নেওয়া হয় ২৫০ টাকা। এই হিসেবে জন্য প্রায় তিন টাকা বকেয়া রয়েছে।

Advertisement

স্টেশন ম্যানেজার মৌমিত মাঝি অবশ্য জানান, “বিষয়টি জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। তবে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করার আগে সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে নোটিস দেওয়া উচিত।’’ তিনি জানান, সম্ভবত ভুল করে এটা করা হয়েছে।

অন্যদিকে, মারিশদা বিদ্যুৎ দফতরের বিরুদ্ধে ভুতুড়ে বিল দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন কাঁথি-৩ ব্লকের বহু গ্রাহক। কানাইদিঘি গ্রামের বাসিন্দা, পেশায় কাঠের মিস্ত্রি বলরাম বেরার অভিযোগ, “বাড়িতে গড়ে প্রতি মাসে প্রায় ১৮০ টাকা বিল আসে। গত দু’মাসের জন্য হঠাৎ ৩৪ হাজার ৩২৯ টাকা বিল পাঠানো হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, “এত টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। তাই মারিশদা বিদ্যুৎ দফতরে গিয়েছিলাম। ওরা জানিয়েছে বিলের টাকা আগে জমা দিয়ে তারপর আবেদন করতে।’’

মারিশদা বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, বলরামবাবুর অভিযোগ পাওয়ার পর তাঁর বাড়ির বিদ্যুতের মিটার ঠিক আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন